চাঁদা ছাড়া পাহাড়ে কেউ উন্নয়ন কাজ করতে পারছে না: ক্য শৈ হ্লা
পাহাড়ে নিরাপত্তার কারণে জনপ্রতিনিধিরা গ্রামে যেতে পারছেন না। তারা যদি গ্রামগঞ্জে না যায় তাহলে উন্নয়ন কাজ করব কিভাবে? আর উন্নয়নকর্মী, ঠিকাদারসহ বিভিন্ন পেশাজীবী শ্রেণির লোকজন চাঁদা ছাড়া পাহাড়ে কাজ করতে পারছে না।
রোববার (৫ জানুয়ারি) সকালে বান্দরবান জেলা পরিষদ মিলনায়তনে পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ক্য শৈ হ্লা এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘সন্ত্রাসীদের চাঁদা দিতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের। চাঁদা দিতে না পারলে তারা নির্যাতন, অপহরণ, গুম ও হত্যার শিকার হচ্ছে। সন্ত্রাসীদের এ ধরনের কর্মকাণ্ডের কারণে গ্রামবাসীরা কর্মহীন হয়ে পড়ছে।’
গ্রামবাসীদের অভিযোগের ভিত্তিতে ক্য শৈ হ্লা বলেন, ‘জেএসএস, মগপার্টি, জেএসএস সংস্কার, ইউপিডিএফ গণতন্ত্র নামধারী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী রয়েছে পাহাড়ে। এদের সদস্যরা প্রকাশ্যে পরিবার প্রতি ১০-২০ হাজার টাকা এবং গ্রাম প্রতি ৫-১০ লাখ টাকা পর্যন্ত চাঁদা নিয়ে থাকে।’
সংবাদ সম্মেলনে বান্দরবান সদর উপজেলার ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর অজিত দাশ বলেন, ‘পাহাড়ে চাঁদাবাজি হচ্ছে, মানুষের প্রাণ যাচ্ছে, পরিবারের ছেলে-মেয়েরা এতিম হচ্ছে। এদের বিষয়ে প্রশাসনও জানে। কিন্তু তাদের শক্ত হাতে দমন না করার কারণে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ব্যহত হচ্ছে। এছাড়া এখন পাড়ার নিরীহ মানুষ কলা বিক্রি, গাছ বিক্রি করে এবং গরু বিক্রি করে চাঁদা দিতে হচ্ছে।’
সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পাইহ্লা অং মার্মা বলেন, ‘পাহাড়ের দীর্ঘদিন আগে সংঘাত শেষ করার জন্য শান্তিচুক্তি করা হয়েছে। কিন্তু এ চুক্তির পরেও তারা কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে চাঁদবাজিতে লিপ্ত হয়েছে।’
তবে বান্দরবান সদর উপজেলার রাজবিলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ক্যঅংপ্রু বলেন, ‘আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু হত্যাকাণ্ড হয়েছে। তবে ওইখানে একটি আর্মির ক্যাম্প বসানোর কারণে এলাকায় শান্তি ফিরেছে।’
উল্লেখ্য, গত ১৭ অক্টোবর পার্বত্য চট্টগ্রামে আর কাউকে খুন ও চাঁদাবাজির কারণে আতঙ্কে থাকতে হবে না বলে অভয় দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। রাঙামাটিতে তিন পার্বত্য জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। এর পরও পাহাড়ে এখনও চাঁদাবাজি থামেনি।
এএইচ