চাঁদাবাজির ৫ হাজার টাকার হিসেব মিলছে না, আদালতের কাঠগড়ায় পুলিশের ৩ কর্মকর্তা

চাঁদাবাজি করতে এসে হাতেনাতে ধরা পড়ে পাহাড়ি এক সংগঠনের দুই চাঁদাবাজ। পুলিশ তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করে চাঁদার ১৫ হাজার টাকা। উদ্ধার করা হয় চাঁদা আদায়ের রশীদও। তবে জব্দ তালিকায় দেখানো হয় ১০ হাজার টাকা! বাকি ৫ হাজার টাকা গায়েব!

অথচ ১৫ হাজার টাকা চাঁদা আদায়কারী দুই চাঁদাবাজ ঘটনাস্থল থেকে টাকাগুলোসহ গ্রেফতার হয়েছে। যদি কোনো আসামী পালিয়ে যেতো তাহলে এই ৫ হাজার টাকা না হয় পালিয়ে যাওয়া আসামীর হাতে দেখানোর সুযোগ ছিল! কিন্তু না, আদালতে উত্থাপিত প্রতিবেদনে তেমন কোনো তথ্য নেই। তাহলে আদালতে ১৫ হাজার টাকা উদ্ধার না দেখিয়ে কেন ১০ হাজার টাকা উদ্ধারের বিবরণ উত্থাপিত হল?

এভাবে ঘটনার বিবরণের সঙ্গে জব্দ হওয়া টাকার সমীকরণ মিলাতে না পেরে আদালতের কাঠগড়ায় হাজির হতে হচ্ছে পুলিশের তিন কর্মকর্তাকে।

চাঁদাবাজির মামলার আলামত গায়েবের এ ঘটনায় বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ পুলিশের তিন কর্মকর্তাকে আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

গত বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) বান্দরবান সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুজাহিদুর রহমান এ আদেশ দেন।

আদেশে, বান্দরবান সদর থানার ওসি, পরিদর্শক তদন্ত এবং তদন্তকারী কর্মকর্তাকেও হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

জানা গেছে, গত ৫ জুলাই বান্দরবান পৌরসভার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে স্থানীয় ব্যবসায়ী সম্রাটের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করার সময় ২ জনকে আটক করে পুলিশ।

এ ঘটনায় অভিযোগকারী এজাহারে উল্লেখ করেন, ওয়াসেন ত্রিপুরা এবং অংথোয়াই চিং মারমা চাঁদার জন্য তাকে ফোন করে। তারপর তিনি বিষয়টি বান্দরবান সদর থানাকে অবহিত করেন। বান্দরবান পৌরসভা জামে মসজিদের সামনে তারা চাঁদা আদায়ের জন্য আসলে তিনি তাদেরকে ১৫ হাজার টাকা দেন। তখন তাকে একটি রশিদও দেওয়ার জন্য তৈরী করে।

এর মধ্যে থেকে ঘটনাস্থলে থাকা বান্দরবান সদর থানা পুলিশ উপস্থিত হয়ে আসামীদের আটক করে এবং তার প্রদত্ত ১৫ হাজার টাকার মধ্যে ১০ হাজার টাকা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।

এদিকে ৫ হাজার টাকার কোন ব্যাখ্যা না থাকার পরও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মর্কতা মামলার অগ্রগামী করে আদালতে প্রেরণ করে। যা তার দায়িত্বের চরম অবহেলা।

আদালতের আদেশে বলা হয়, মামলার নথি এবং তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায় অভিযোগকারী ১৫ হাজার টাকার কথা উল্লেখ করলেও ১০ হাজার টাকা উদ্ধার করেছেন কিন্তু বাকি ৫ হাজার টাকার বিষয়ে কোন ব্যাখ্যা দাখিল করেননি।

এ বিষয়ে বান্দরবান সদর থানার ওসি, পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হুমায়ুন আজাদকে আদালতে উপস্থিত হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দাখিলের জন্য নির্দেশ প্রদান করেন আদালত।

আদর/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!