চসিকে টেন্ডার জমা দিতে এসে শ্রমিক ‘অপহরণ’, অভিযোগের তীর যুবলীগ নেতা নাহিদের দিকে

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) কার্যালয়ে কর্ণফুলী নদীর সদরঘাটের ইজারার টেন্ডার জমা দিতে আসা দুই ব্যক্তিকে অপহরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অপহরণের শিকার দুই ব্যক্তি হলে রুবেল ও বাপ্পি। যুবলীগ নেতা খলিলুর রহমান নাহিদের বিরুদ্ধে এই অপহরণের অভিযোগ উঠে।

সোমবার (২৭ এপ্রিল) সকালে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, খুলশী থানার নগর ভবনের সামনের সড়ক থেকে সোমবার সকালে তাদের অস্ত্রের মুখে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। দিনভর অজ্ঞাত স্থানে আটকে রেখে সন্ধায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনার পরপরই রাতে সদরঘাট এলাকায় নাহিদকে গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন স্থানীয় এলাকাবাসী।

এর আগে চসিকের বিদায়ী প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজনের জমির ‘লিজকাণ্ডে’ও আলোচনায় আসে নাহিদের নাম। নামমাত্র মূল্যে মাদারবাড়ির চসিকের সেই জমির লিজ দেওয়া হয়েছিল নাহিদকে।

এদিকে কর্ণফুলী নদীর ঘাটের ইজারা কেবল মাঝিদেরই দেওয়া হবে- চসিক এমন শর্ত টেন্ডার আহবান করেন। সেখানে এক মাঝির নামে টেন্ডার ফরমে মোবাইল নম্বার দেওয়া হয় নাহিদের। অথচ ওই মাঝি নিজেই জানেন না তার নামে টেন্ডার জমা দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দর কেন্দ্রিক সদরঘাট এলাকায় দীর্ঘ দুই যুগ ত্রাসের রাজত্ব গড়ে তুলেছেন যুবলীগ নামধারী খলিলুর রহমান নাহিদ ওরফে ভিপি নাহিদ। তার বিরুদ্ধে বেআইনি ভাবে নদীর ঘাট দখল, জমি দখল, বেপরোয়া চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অভিযোগ রয়েছে।

তিনি নোয়াখালীর আলোচিত সাংসদ একরামুল করিমের সৎ ভাই। নাহিদের কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সদরঘাট এলাকাবাসী ও সেখানকার ব্যবসায়ীরা। এছাড়া তার বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজিসহ একাধিক মামলা রয়েছে বিভিন্ন থানায়।

এ বিষয়ে দরপত্রে অংশ নেওয়া মাঝি মো. মিজান বলেন, ‘আমার স্টাফ রুবেল ও বাপ্পিকে অপহরণ করেছে নাহিদের লোকজন। আমি সকালে গিয়ে দেখি চসিক এলাকায় শত শত লোক এনেছে নাহিদ। আমাকে তারা ধাওয়া দিয়েছিল। পরে আমি চলে আসি। আমি রুবেল ও বাপ্পিকে কল দিতে থাকি তখন। কিন্তু তাদের মোবাইল বন্ধ পাচ্ছিলাম। পরে জানলাম তাদের নাহিদের লোকজন অপহরণ করে নিয়ে গেছে। ইফতারের আগে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়৷ তাদের অপহরণ পাহাড়ের চিপায় আটকে রেখেছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘তাদের দুই জনের কাছ থেকে চারটি মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়। তাদের মারধরও করা হয়। এ ঘটনা আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।’

এ বিষয়ে খুলশী থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই মো. হোসেন বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। ঘটনাস্থলে কাউকে পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার কথা।’

এ বিষয়ে যুবলীগ নেতা খলিলুর রহমান নাহিদের মুঠোফোনে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘অপহরণের বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। এই প্রথম আপনার কাছ থেকে শুনলাম। আর সিটি করপোরেশনের ইজারা টেন্ডারের কাজে আমি কেন অপহরণ করতে যাব।’

অপহরণের পর সদরঘাট এলাকায় নাহিদকে গ্রেফতারের দাবিতে এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল বের করার বিষয়ে অবহিত করলে নাহিদ বলেন, ‘কখন কোথায় মিছিল বের করেছে আমি শুনিনি। যদি এমন ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে সরাসরি লিগ্যাল অভিযোগ করবে।’

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!