চমেকের নিষ্ঠুরতাকে সাক্ষী রেখেই বিদায় নিল পায়ে পচন ধরা লোকটি

বাঁচানো গেল না পায়ে পচন ধরা বেওয়ারিশ সে মানুষটিকে। শুক্রবার (১৯ জুন) সকালে আশ্রয় নেওয়া মন্দিরের বারান্দাতেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ হয় তার।

এর আগে বুধবার (১৭ জুন) সকালে এনায়েত বাজার গোয়াল পাড়া বাজারে নালা থেকে তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রামের মানবাধিকার কর্মী ইকবাল মুন্না ও চট্টগ্রাম নগর পুলিশের মানবিক পুলিশ ইউনিট টিমের কর্মকর্তা শওকত হোসাইন।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাকে ভর্তি করেনি কর্তৃপক্ষ। বলেছে, পচন ধরা পা, অপরিস্কার অবস্থায় তাকে ভর্তি করা যাবেনা।

পরে ওই এলাকার একটি মন্দিরের বারান্দায় তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও ঘটে বিপত্তি। মন্দিরের লোকজন তাকে রাখতে রাজি নন। পরে শুক্রবার তাকে নিয়ে যাওয়া হবে এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক রাতের জন্য রাখার অনুমতি দেয় মন্দির কর্তৃপক্ষ।

মানবাধিকার কর্মী ইকবাল মুন্না চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘শুক্রবার (১৯ জুন) সকালে মানবিক পুলিশ ইউনিট ও আমাদের কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবক মিলে লোকটির পায়ে ছোট্ট একটি অপারেশনের ব্যবস্থা করা হয়। হাসপাতালে যেহেতু পায়ে পচন ধরা অবস্থায় বেওয়ারিশ ওই ব্যক্তিকে হাসপাতাল ভর্তি করাচ্ছে না, সেহেতু আমরা মন্দিরের বারান্দায় পরিচিত ডাক্তার এনেই পায়ে ড্রেসিং ও ছোট অপারেশন করানোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হই। কিন্তু আমাদের সব আয়োজনকে ব্যর্থ করে দিয়ে নিষ্ঠুর পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নিল লোকটি শুক্রবার সকালেই।’

মুন্না আরও বলেন, ‘নিজেকে বড় অপরাধী মনে হচ্ছে। যেখানে চিকিৎসার অভাবে আমাদের প্রিয় জন্মস্থান চট্টগ্রামে এভাবে মানুষ মরছে, সেখানে একটা বেওয়ারিশ মানুষকে কথা দিয়েছিলাম তাকে সুস্থ করার জন্য যা যা করার দরকার তাই আমরা করবো। আজ থেকে কাজ শুরু করবো। কিন্তু তাকে দেওয়া সে কথা আমরা রাখতে পারলাম না। জানিনা সৃষ্টিকর্তা আমাদের মাফ করবেন কিনা। শুক্রবার সকাল ১১টায় বলুয়ার দিঘী শ্মশান ঘাটে তাকে দাহ করার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।’

এর আগে শুক্রবার সকালে ‘পায়ে পচন ধরা লোকটি পড়ে ছিল রাস্তায় জমা বৃষ্টির পানিতে’ শিরোনামে এই ব্যক্তি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে চট্টগ্রাম প্রতিদিন।

এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!