চবি ছাত্রীকে হেনস্তা অতিরিক্ত ভাড়ার প্রতিবাদ করায়, ৩ বাস আটক করেছে শিক্ষার্থীরা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়-মার্কেট রুটের ৩ নম্বর বাসে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রতিবাদ করায় বাস চালক ও হেলপারের হেনস্তার শিকার হয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক ছাত্রী। এ ঘটনার বিচারের দাবিতে একই রুটের তিনটি বাস অবরুদ্ধ করে রেখেছে শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (২৩ জুন) বিকেলে নগরীর অক্সিজেন এলাকায় শিক্ষার্থীকে লাঞ্ছনার এই ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) বিকেল পাঁচটার দিকে একই রুটের তিনটি বাসের চাবি নিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম স্মৃতি মায়া। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে স্মৃতি মায়া চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমি প্রতিদিন বিশ্ববিদ্যালয়গামী ৩ নম্বর বাসে করে ষোলশহর থেকে ওয়াপদা গেইট (অক্সিজেন) যাই ১০ টাকা দিয়ে। কিন্তু গতকাল বাসের হেল্পার (চট্টমেট্রো- জ ১১-১২০৬) আমার কাছে ১৫ টাকা চাইলো। একই সাথে সে বাসে অতিরিক্ত মানুষও নিয়েছে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে। কিছু মানুষ দাঁড়িয়েও ছিল। আমি বললাম, প্রতিদিন তো ১০ টাকা ভাড়া দিয়েই আসি, আর এমন তো না যে আপনারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে মানুষ তুলেছেন। ঠাসাঠাসি করে মানুষ তুলেছেন আবার ভাড়াও কেন বেশি নিচ্ছেন? ড্রাইভার বলে উঠলো ২ নম্বর গেইট থেকে অক্সিজেন ভাড়া ১৫ টাকা।’

ওই ছাত্রী বলেন, ‘আমি তাদের বললাম, আমি তো ষোলশহর থেকে উঠেছি। তখন ড্রাইভার আমাকে বললো, তুমি বেশি কথা না বলে ১৫ টাকা দিয়ে দাও। তোমাকে এত কথা কে বলতে বলছে?’ আমি তার সাথে শুরু থেকেই বিনয়ের সাথে কথা বলেছিলাম। ড্রাইভার তুমি করে বলাতে তাকে বললাম, আপনি অবশ্যই আমাকে তুমি করে বলতে পারেন না। তারপর ড্রাইভার হেল্পারকে বললো, আমাকে চিনে রাখতে। আমাকে আর যেন গাড়িতে না তোলে।’

স্মৃতি মায়া চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমি তখন বললাম, ফাইজলামির একটা লিমিট থাকা উচিত, এভাবে মানুষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে অতিরিক্ত টাকা তো নিতে পারেন না। তখন ড্রাইভার আমাকে তুইতুকারি শুরু করে দিলো, আর বললো আমাকে নাকি থাপ্পড় মারবে। এই ঘটনায় আমি হতবাক হয়ে গেছি। এটা শুধু আমার সাথে নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়মিত ঘটছে। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।’

এ ঘটনার প্রতিবাদে বিকেল পাঁচটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শহরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা তিনটি ৩ নম্বরে বাস আটক করে শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বাসগুলো আটক ছিল।

এ বিষয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী মারুফ ইসলাম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘৩ নম্বর বাসে এই ধরনের ঘটনা চবি শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতিনিয়তই ঘটছে। গতকালের ঘটনার বিচারের দাবিতে ও এই ধরনের ঘটনার সমাপ্তি দেখতে আমরা তিনটি বাস আটক করেছি। বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা এসব ছাড়বো না।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সুপারভাইজার মোহাম্মদ আশফাক চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘গতকাল একটি বাসে চালক হয়ত খারাপ ব্যবহার করেছে। আমরা তাকে নিয়ে এসেছি। এখন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে।’

এমআইটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!