চবি ক্যাম্পাসে বেপরোয়া বাইক, ১৪ দিনে জখম ৭

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ক্যাম্পাসে বেপরোয়া গতিতে চলছে মোটরবাইক। ফলে প্রতিনিয়ত ক্যাম্পাসে ঘটছে দুর্ঘটনা। গত ১৫ দিনে মোটরবাইক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৭ জন শিক্ষার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বেপরোয়া গতিতে চলা অধিকাংশ মোটরবাইকই বহিরাগতদের। নিয়ম অনুযায়ী প্রক্টর অফিসে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গাড়ি চালানোর কথা। এ নিয়ম তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা দপ্তর। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকেই বসানো রয়েছে নিরাপত্তা চৌকি। কিন্তু চৌকিতে বসে থাকা নিরাপত্তা কর্মীদের চোখের সামনেই ঢুকে যায় বহিরাগতদের মোটরবাইকের বহর। দুর্ঘটনা বাড়তে থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিয়ে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে দুর্ঘটনা ঘটলেও চবিতে যানবাহন নিয়ন্ত্রণে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ।

সর্বশেষ গত ২৩ নভেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেইটের পাশে সিপির সামনে মোটরবাইকের সাথে রিকশার সংঘর্ষ হয়। এতে অর্থনীতি বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইসহাক আলম ফরহাদ ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সোহানুর রহমান সোহান আহত হয়।

এর আগে গত ২০ নভেম্বর সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন দপ্তরের সামনে বেপরোয়া গতিতে ছুটে আসা দুটি মোটরবাইকে সংঘর্ষে ইংরেজি বিভাগের মাসুম, নৃবিজ্ঞান বিভাগের তুর্কি, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের মুকুল ও রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের হাফিজুল ইসলাম আহত হন।

১৭ নভেম্বর সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার থেকে কাটাপাহাড় সড়ক দিয়ে হেঁটে জিরো পয়েন্ট যাওয়ার পথে বেপরোয়া গতিতে ছুটে আসা মোটরবাইক পিছন থেকে ধাক্কা দেয় আরবী বিভাগের শিক্ষার্থী মো. নাঈমকে। আহতবস্থায় বন্ধুরা তাকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় স্থানান্তর করা হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। বর্ষ ফাইনাল পরীক্ষা চললেও তাকে হাসপাতালের বেডে কাতরাতে হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রহিমা প্রিয়া চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, বিকেল নামতেই ক্যাম্পাসে মোটরবাইকের উৎপাত বেড়ে যায়। বেপরোয়া গতির জন্য জিরো পয়েন্ট, শহীদ মিনারের আশপাশে হাঁটাচলা করা দায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে মোটরবাইক ও বহিরাগতদের যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হোক।

অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী হুসাইন আল মামুন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপত্তা দপ্তর না পারছে চুরি-ছিনতাই ঠেকাতে, না পারছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে বেপরোয়া যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখতে। একের পর এক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে সংকটাপন্ন হচ্ছে জীবন। ক্যাম্পাসের ভেতরে যানবাহনের বেপরোয়া গতি নিয়ন্ত্রণ করতে কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিতে হয় না। এর সমাধান করতে কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছাই যথেষ্ট।

এদিকে বেপরোয়া গতিতে মোটরবাইক চলার বিষয়টি স্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর প্রফেসর এস এম মনিরুল হাসান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, মোটরবাইকের বেপরোয়া গতির বিষয়টি আমাদের জানা আছে। শীঘ্রই ক্যাম্পাসে মোটরবাইক নিয়ন্ত্রণে আমরা কার্যকর পদক্ষেপ নেবো।

এমআইটি/এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!