চবির দুই হাজার শিক্ষার্থীর নিরাপত্তায় শাটলে মাত্র তিন পুলিশ!

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য রয়েছে দুটি শাটল ট্রেন। এই দুইটি ট্রেন সপ্তাহে পাঁচদিন পালা করে সাতবার আসা যাওয়া করে। প্রতিবারই এতে প্রায় দুই হাজার করে শিক্ষার্থী যাতায়াত করে। তবে এই দুই হাজার শিক্ষার্থীর নিরাপত্তার জন্য শাটলে থাকে মাত্র তিনজন পুলিশ সদস্য। অভিযোগ আছে, এই তিনজন পুলিশ সদস্য আলাদা আলাদা না থেকে এক বগিতেই থাকেন। ফলে শাটলে যেকোনো ধরনের অপরাধ রুখতে তারা তেমন কোন ভূমিকা রাখতে পারেন না। এছাড়া যেকোন অনিয়ম ঘটতে দেখলে তারা প্রতিরোধ না করে দর্শকের ভূমিকায় থাকেন বলেও অভিযোগ আছে।

শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের আবেগের এই শাটল ট্রেন এখন অনেকটা মূর্তিমান আতঙ্কের নাম। রাতের শাটলের অধিকাংশ বগিতে থাকে না বৈদ্যুতিক বাতি। বগি সংকট, চলন্ত ট্রেনে বাহির থেকে পাথর নিক্ষেপ, চুরি ছিনতাই, বহিরাগতদের উৎপাতের পর এবার নতুন করে যুক্ত হয়েছে যৌন হয়রানির ঘটনাও।

সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার রাতে চলন্ত শাটলে এক বহিরাগত বখাটের হাতে যৌন হয়রানির শিকার হন এক ছাত্রী। শাটল ট্রেনে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার অভাবে এসব ঘটনা একের পর এক বেড়েই চলেছে। যদিও এসব ঘটনায় অনেকটা নির্বিকার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

এছাড়া প্রায়ই বাইরে থেকে টান দিয়ে শিক্ষার্থীদের ব্যাগ, মোবাইলসহ গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। অন্যদিকে শাটলে বহিরাগত উৎপাতে অতিষ্ট থাকতে হয় শিক্ষার্থীদের।

আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী নাসরিন আক্তার বলেন, ‘রাতের ট্রেন আমাদের কাছে মৃত্যুপুরীর মতো মনে হয়। বাতি জ্বলে না, পুলিশ থাকে না। এক অজানা আতঙ্কে ২২ কি.মি পথ পাড়ি দিতে হয়।’

নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রহিম উল্লাহ বলেন, ‘আগে শাটলের বগি সংকট, বহিরাগতদের উৎপাত ছিল। সম্প্রতি এর সাথে যুক্ত হয়েছে বহিরাগত কর্তৃক পাথর নিক্ষেপ, শিক্ষার্থীদেরকে শ্লীলতাহানি, এর শেষ কোথায়! আমরা আবার কবে নিরাপদে চলতে পারব!’

পূর্ব রেলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা মো. আনসার আলী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব জিআরপি থানা ও আরএনবি। আমরা পাথর নিক্ষেপ বন্ধসহ এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে তাদেরকে জানাই।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাজিম উদ্দীন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমাদের লোকবল সংকট রয়েছে। তবুও আমরা শাটল ট্রেনে নিরাপত্তার জন্য তিন জনের পরিবর্তে এখন থেকে ছয়জন পুলিশ সদস্য দেবো। সার্বিক বিষয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ড. শহীদুল ইসলাম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমরা শাটলের প্রতি বগিতে পুলিশ সদস্য দেওয়াসহ এসব বিষয়ে রেলওয়ের সাথে কথা বলেছি। আমরা তো নিয়মিত টাকা পরিশোধ করি। তাহলে কাঙ্ক্ষিত সেবা কেন পাবো না?’

এমআইটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!