চবির দুই ইউনিটে গোঁজামিলের ফলাফল নিয়ে সিদ্ধান্ত বৃহস্পতিবার

এখনও কারণ খুঁজে পাচ্ছে না আইসিটি সেল

সকালে জরুরি বৈঠকে বসলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রথম বর্ষের ‘এ’ ও ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রকাশিত ফলাফলে বড় ধরনের অসঙ্গতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট)। এমন অসঙ্গতি কিভাবে হয়েছে ও কিভাবে সেটা নিরসন করা যায়, তার উপায় খুঁজতে বিজ্ঞান ও ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিনকে আইসিটি সেলের সাথে সমন্বয় করতে বলা হয়েছে।

বুধবার (২৪ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার কোর কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।

বিষয়টি চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে নিশ্চিত করে ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. রাশেদ মোস্তফা বলেন, ‘এই অসঙ্গতিটা কিভাবে হয়েছে এবং কিভাবে তা নিরসন করা যায় তা খুঁজে বের করতে বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিনকে আইসিটির সাথে কাজ করতে বলা হয়েছে। আমরা সমস্যাটা নিয়ে কাজ শুরু করবো। আমরা কারণ উদঘাটন করে কোর কমিটির কাছে সুপারিশ করবো। কোর কমিটি আগামীকালের (বৃহস্পতিবার) বৈঠকে এ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ করবে।’

এর আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রথম বর্ষের ‘এ’ ও ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রকাশিত ফলাফলে বড় ধরনের অসঙ্গতির অভিযোগ উঠে। এক শিক্ষার্থীর দেওয়া অভিযোগ খতিয়ে দেখতে গিয়ে এই অসঙ্গতির প্রমাণ মিলে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। পরবর্তীতে বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ করতে বুধবার বেলা ১১টার দিকে ভর্তি পরীক্ষার কোর কমিটির জরুরি সভা আহ্বান করে।

সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা ১২০ নম্বরে অনুষ্ঠিত হয়৷ এর মধ্যে ১০০ নম্বর লিখিত ও ২০ নম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের জিপিএ থেকে নির্ধারণ করা হয়। জিপিএ থেকে প্রাপ্ত নম্বর নির্ধারণের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফলের ডাটা সংশ্লিষ্ট বোর্ড থেকে টেলিটকের মাধ্যমে সংগ্রহ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেল।

তবে এবার যশোর বোর্ডের জিপিএ নম্বরের ক্ষেত্রে প্রাপ্ত জিপিএ এর তিন ডিজিটের শেষ ডিজিট গণনা করা হয়নি বলে এ ইউনিটের এক ভর্তিচ্ছু অভিযোগ করেছেন৷ পরবর্তীতে অভিযোগ খতিয়ে দেখতে গিয়ে ‘এ’ ও ‘সি’ দুই ইউনিটে একই অসংগতির প্রমাণ মিলেছে৷ তবে সংশ্লিষ্ট ইউনিট কো-অর্ডিনেটর ও জয়েন্ট কো-অর্ডিনেটরদের দাবি, আইসিটির কারণে এমন ভুল হয়েছে। তাই এই ভুলের দায়িত্ব আইসিটিকেই নিতে হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ‘সি’ ইউনিটের কো-অর্ডিনেটর ও ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. হেলাল উদ্দীন নিজামী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমরা আইসিটিতে ১০০ নম্বরের পরীক্ষার যে ফলাফল তৈরি করে পাঠিয়েছি সেখানে কোন ভুল নেই। ভুল হয়েছে জিপিএ থেকে ২০ নম্বর গণনার ক্ষেত্রে। সেটি আইসিটি ও সফটওয়্যারের। আইসিটি সেলের পরিচালক আমাকে বিকেলে কল দিয়ে জানিয়েছেন এটা সফটওয়্যারের বিচ্যুতি। একই সাথে তারা যে ইনপুট দিয়েছেন সেখানেও বিচ্যুতি থাকতে পারে। এটা তাদের অপারেশনাল সমস্যা। এখানে আমাদের ভুল নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ বিষয়ে আইসিটি থেকে লিখিত পেলে আমরা ইউনিটি কমিটি বসে ফলাফলের বিষয়ে তাদের বিচ্যুতি নিয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত কোর কমিটিকে জানাবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই সমস্যা সম্পর্কে আমাদের যথাসময়ে জানানো হয়নি। এই ভুলের বিষয়টা আমাদের কাছে গোপন করা হয়েছে। আমাদের আগে জানানো হলে আমরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে পারতাম।’

একই বিষয়ে জানতে চাইলে এ ইউনিটের একজন জয়েন্ট কো-অর্ডিনেটর নাম প্রকাশ না করা শর্তে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘একজন শিক্ষার্থী ফলাফলে জিপিএ নম্বর গণনার ক্ষেত্রে ভুল হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন। ফলাফলে জিপিএর নম্বর যোগ করার দায়িত্ব আইসিটির। এ বিষয়ে সকালে কোর-কমিটির সভা আছে। সেখানে বিস্তারিত আলোচনা হবে।’

এ দিকে ভুলের বিষয়টি স্বীকার করে আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. খায়রুল ইসলাম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘যশোর বোর্ডের এসএসসি ডেটায় একটু সমস্যা হয়েছে। এটা স্পেসিফিক কারণ বলা যাচ্ছে না, তবে টেকনিক্যাল কারণে হতে পারে। একটা অ্যাপ্লিকেন্ট কমপ্লেইন করেছে, সেটা দেখতে গিয়েই হঠাৎ এটা চোখে পড়েছে। তখন আমি ইউনিট কমিটিকে জানিয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘একটা সিস্টেমে শত শত, হাজার হাজার অপারেশন হয়। সেখানে একটা জায়গায় এরর (Error) আসছে। এটা তো টেকনিক্যাল সমস্যা। আমরা মূল কারণটা বের করার চেষ্টা করছি।’

এমআইটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!