চবির ডিন নির্বাচনে সাদা দলের ভরাডুবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ডিন নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষক সমর্থিত সাদা দলের ভরাডুবি হয়েছে। ৮টি অনুষদের মধ্যে তারা একটিতেও জয়ী হতে পারেনি। এতে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে আওয়ামী-বামপন্থী শিক্ষক সমর্থিত হলুদ দল ও তাদের বিদ্রোহী প্রার্থীরা।

রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে ভোটগ্রহণ শেষে ফলাফল ঘোষণা করেন প্রধান রিটার্নিং অফিসার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কে এম নুর আহমদ।

ঘোষিত ফলাফলে জানা যায়, ৮ অনুষদের মধ্যে ৪টিতে জয় লাভ করেছে হলুদ দল। অপর ৪টিতে জয় লাভ করেছে হলুদ দলের বিদ্রোহী প্রাথীরা।

কলা ও মানববিদ্যা অনুষদে ১৪৬ ভোট পেয়ে ডিন নির্বাচিত হয়েছেন হলুদ দলের প্রার্থী বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মহীবুল আজিজ। তার প্রতিদ্বন্দ্বী সাদা দলের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু নছর মুহাম্মদ আব্দুল মাবুদ পেয়েছেন ২৭ ভোট।

বিজ্ঞান অনুষদে ৩৭ ভোট পেয়ে ডিন নির্বাচিত হয়েছেন হলুদ দলের বিদ্রোহী প্রার্থী পদার্থবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাসিম হাসান। হলুদ দলের প্রার্থী রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক বেনু কুমার দে পেয়েছেন ২৮ ভোট। তবে সাদা দলের প্রার্থী বন ও পরিবেশবিদ্যা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আল-আমীন কত ভোট পেয়েছেন তা জানা যায়নি।

ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদে ৪৫ ভোট পেয়ে ডিন নির্বাচিত হয়েছেন হলুদ দলের বিদ্রোহী প্রার্থী মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক এসএম সালামত উল্ল্যা ভূঁইয়া। তার প্রতিদ্বন্দ্বী সাদা দলের প্রার্থী একই বিভাগের বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শওকতুল মেহের পেয়েছেন ২১ ভোট। হলুদ দলের অপর বিদ্রোহী প্রার্থী ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুল্লাহ মামুন পেয়েছেন ২৮ ভোট।

সমাজ বিজ্ঞান অনুষদে হলুদ দলের প্রার্থী রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দীকির বিপরীতে অন্য কোন প্রার্থী না থাকায় তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

আইন অনুষদে ১৩ ভোট পেয়ে ভোট পেয়ে ডিন নির্বাচিত হয়েছেন হলুদ দলের বিদ্রোহী প্রার্থী আইন বিভাগের অধ্যাপক এবিএম আবু নোমান। তার প্রতিদ্বন্দ্বী একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নির্মল কুমার সাহা পেয়েছেন ০৮ ভোট।

জীববিজ্ঞান অনুষদে ৮০ ভোট পেয়ে ডিন নির্বাচিত হয়েছেন হলুদ দলের প্রার্থী ফার্মেসী বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ
কামরুল হোসাইন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী সাদা দলের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন পেয়েছেন ১৫ ভোট। হলুদ দলের বিদ্রোহী প্রার্থী ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. অলক পাল পেয়েছেন ২৬ ভোট।

ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদে ১৯ ভোট পেয়ে ডিন নির্বাচিত হয়েছেন হলুদ দলের বিদ্রোহী প্রার্থী কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. রাশেদ মোস্তফা। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী একই বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ খাইরুল ইসলাম পেয়েছেন ১৬ ভোট।

মেরিন সায়েন্স অ্যান্ড ফিশারিজ অনুষদে ১২ ভোট পেয়ে ডিন নির্বাচিত হয়েছেন হলুদ দলের প্রার্থী ফিশারিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. রাশেদ উন নবী। তার প্রতিদ্বন্দ্বী মেরিন সায়েন্স ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মো. এম. মারুফ হোসেন পেয়েছেন ৭ ভোট।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূর আহমদ বলেন, ‘সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ অডিটরিয়ামে ৭ অনুষদের ভোটগ্রহণ চলে। এতে আওয়ামীলীগ-বামপন্থী শিক্ষক সমর্থিত হলুদ দলের ৪ জন এবং হলুদ দলের বিদ্রোহী ৪ জন বিজয়ী হয়েছেন। সমাজবিজ্ঞান অনুষদে আগেই বিনাপ্রতিদ্বন্ধীতায় নির্বাচিত হন ড. মোস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী। এর আগে ১০ ও ১৩ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চবি শিক্ষক সমিতির কার্যালয়ে অগ্রিম ভোটগ্রহণ হয়। এতে প্রথমদিন ২৫ জন এবং দ্বিতীয় দিন ২২ জন ভোটার ভোট দেন।

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!