চবির আইইআর এবার পরীক্ষাই স্থগিত করে দিল অনির্দিষ্টকালের জন্য

ঘোষণা শুনেই কান্নায় ভেঙে পড়লেন শিক্ষার্থীরা

ক্লাসে উপস্থিতির হার কম থাকার ‘অজুহাতে’ ১১ শিক্ষার্থীকে পরীক্ষার অনুমতি না দেওয়ায় পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন করার পর এবার প্রথম বর্ষের পরীক্ষা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) (আইইআর) কর্তৃপক্ষ। এর মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা ২৫ মাস পর পরীক্ষা দেওয়ার বিষয়ে যে আশার আলো দেখছিল তাও নিভে গেল।

বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও প্রথম বর্ষের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বশির আহাম্মদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে পরীক্ষা স্থগিতের বিষয়টি জানানো হয়। তবে এতে পরীক্ষা স্থগিতের কোনো কারণ উল্লেখ করা হয়নি।

জানা যায়, কয়েক দফা আন্দোলনের পর গত ১০ জানুয়ারি ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষের পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করে ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ। বুধবার (২০ জানুয়ারি) বাংলা পরীক্ষার মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ২৪ মাস ২০ দিন পর ১ম বর্ষের পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এ পরীক্ষাতে নানা নাটকীয়তার পরও ১১ জন শিক্ষার্থীকে উপস্থিতির হার কম থাকার অজুহাতে পরীক্ষায় অংশ নিতে দেয়নি কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ১১ শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়ার দাবিতে প্রথম দিনের পরীক্ষা বর্জন করে প্রক্টর অফিসের সামনে অবস্থান নেয়। পরে প্রক্টরিয়াল বডির আশ্বাসে বিকেল ৪টার দিকে তারা অবস্থান কর্মসূচি তুলে নেয়।

এ দিকে পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণা শুনেই কান্নায় ভেঙে পড়েন শিক্ষার্থীরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে আইইআরের প্রথম বর্ষের একাধিক শিক্ষার্থী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, গতকাল আমরা যখন ১১ শিক্ষার্থীর বিষয়ে আবেদন নিয়ে গেছি, তখন একাধিক শিক্ষক আমাদের পরীক্ষা স্থগিত করে দেবেন বলে হুমকি দিয়েছিলেন। আজ তাই হলো। তারা আমাদেরকে বলেছিলেন, তোমরা আন্দোলন করে আমাদের সম্মানহানি করতেছ। আমরা চাইলে তোমাদের পরীক্ষা স্থগিত করে দিতে পারবো। তখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তো দূরের কথা, আরও উপরের কেউ আসলেও আমাদের পরীক্ষা নেওয়াতে পারবে না। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের কী করতে পারবে? আমাদের কাছে আগে সম্মান বড়।

শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, কর্তৃপক্ষ আমাদের সবার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়েছে। কিন্তু অনির্দিষ্টকালের জন্য পরীক্ষা স্থগিত হওয়ায় দূর-দূরান্ত থেকে আসা শিক্ষার্থীরা দুশ্চিন্তায় পড়েছে।

এ বিষয়ে জানতে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বশির আহাম্মদকে কয়েক দফা কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এসএম মনিরুল হাসান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ১১ জন শিক্ষার্থীকে পরীক্ষার অনুমতি দেওয়া হয়নি— তাদের উপস্থিতি ৬০ শতাংশের নিচে ছিল। এখন ইনস্টিটিউটের একাডেমিক কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাছে ওদের পরীক্ষার অনুমতি চেয়েছে। একাডেমিক কমিটির সিদ্ধান্ত উপাচার্য তার নির্বাহী ক্ষমতাবলে অনুমতি দিলে তারা পরীক্ষা নেবে। এখন উপাচার্য এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিলে হয়ত ইন্সটিটিউট কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার রুটিন দেবে।

এমআইটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!