চবিতে প্রতিবাদের ঝড় সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায়

দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায় ও তাদের উপাসনালয়ে হামলার ঘটনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে।

মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) দিনব্যাপী পৃথক পৃথক মানববন্ধন, মিছিল ও সমাবেশ করে প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, সনাতন ধর্ম পরিষদ, প্রাণিবিদ্যা বিভাগ ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

সকাল সাড়ে ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জয়বাংলা ভাস্কর্যের সামনে মুখে কালো কাপড় বেঁধে ফেস্টুন হাতে প্রতিবাদ জানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন সাধারণ শিক্ষার্থী।

মানববন্ধন, মিছিল ও সমাবেশ করে প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা
মানববন্ধন, মিছিল ও সমাবেশ করে প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা

তাদের ফেস্টুনে লেখা ছিল, সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিচার চাই, ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ চাই, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি চাই, সাম্প্রদায়িকতা নিপাত যাক-বাংলাদেশ মুক্তি পাক, যদি তুমি মানুষ হও-ধর্মান্ধতা রুখে দাও, যে ধর্ম মানুষ পোড়ায় সে ধর্ম আমার না, ধর্ম যার যার বাংলাদেশ সবার।

তাদের সাথে একাত্মতা পোষণ করে প্রতিবাদে দাঁড়ায় আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাসান মুহাম্মদ রোমান শুভ।

মানববন্ধন, মিছিল ও সমাবেশ করে প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণিবিদ্যা বিভাগ
মানববন্ধন, মিছিল ও সমাবেশ করে প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণিবিদ্যা বিভাগ

তিনি বলেন, হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সবার সমান অধিকার আছে, ঠিক যেভাবে মাতৃদুগ্ধের সন্তানের সমান অধিকার, ঠিক যেভাবে মাতৃদুগ্ধের সন্তানের সমান অধিকার। এদেশ সবার দেশ। আমাদের এমন ভাবে কাজ করতে হবে যাতে দেশ সবার বাসযোগ্য হয়ে ওঠে। দাঁড়াও আমান বাংলার যে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ধর্মীয় ঐতিহ্য, ধর্মীয় সহনশীলতা সেটি যেন বলবৎ থাকে।

বেলা ১১টায় প্রসাশনিক ভবনের সামনে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির আয়োজনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে শিক্ষকবৃন্দ দেশের চলমান সাম্প্রদায়িক সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানান এবং এই ঘটনায় জড়িতদের খঁজে বের করে শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানান।

মানববন্ধন, মিছিল ও সমাবেশ করে প্রতিবাদ জানিয়েছে সনাতন ধর্ম পরিষদ
মানববন্ধন, মিছিল ও সমাবেশ করে প্রতিবাদ জানিয়েছে সনাতন ধর্ম পরিষদ

বক্তারা বলেন, সুপরিকল্পিতভাবে এ ধরনের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে এ ধরনের ঘটনার দেখতে হলো, প্রত্যক্ষ করতে হলো এর চেয়ে দুর্ভাগ্যজনক আর কী হতে পারে? আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে হবে।

বক্তারা আরও বলেন, একাত্তরে যে ঘটনা ঘটেছে, আজকের ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে যদি সেটির পুনরাবৃত্তি ঘটে তাহলে লজ্জা রাখার সীমা থাকে না। আমরা এক ভাই কীভাবে আরেক ভাইয়ের ওপর অত্যাচার চলাই। আমারা জানোয়ারের চেয়ে অধম হয়ে গেলে এদেশের কী ভবিষ্যৎ হবে।

দুপুর সাড়ে ১২টায় মৌন প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সনাতন ধর্ম পরিষদ। শহীদ মিনারের সামনে থেকে মৌন মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসাশনিক ভবনের সামনে এসে সমাবেত হন তারা।

দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের পক্ষ থেকে মানববন্ধন করা হয়।

এমআইটি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!