চন্দনাইশের বরমায় ৪ ভোটকেন্দ্র চরম ঝুঁকিতে, কেন্দ্র দখলের ভীতি ছড়াচ্ছে নৌকার লোক

সুষ্ঠু ভোটের জন্য প্রশাসনের সহায়তা চান স্বতন্ত্র প্রার্থীরা

দক্ষিণ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার বরমা ইউনিয়নের চারটি ভোট কেন্দ্র নিয়ে তৈরি হয়েছে চাপা ভীতিকর পরিস্থিতি। প্রার্থীরা তো বটেই, সাধারণ ভোটাররাও এক প্রার্থীর হুঙ্কারে আতঙ্কে রয়েছেন।

আগামী ৫ জানুয়ারি (বুধবার) চন্দনাইশ উপজেলায় আটটি ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে উপজেলার বরমা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী এবার তিনজন। এরা হলেন— আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী জাবেদ মোহাম্মদ গউস মিল্টন, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নুরুল ইসলাম এবং ঘোড়া প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী খোরশেদ আলম টিটু।

জানা গেছে, ইতিমধ্যে বরমা ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি ভোট কেন্দ্রকে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব ঝুঁকিপূর্ণ ভোট কেন্দ্রে সুষ্ঠু ভোট গ্রহণ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রার্থী ও ভোটাররা। তবে প্রশাসন বলছে, ভোট সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে।

বেশ কয়েকজন প্রার্থী ছাড়াও ভোটাররা অভিযোগ করছেন, বরমা ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নুরুল ইসলাম ভোটারদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছেন। ভোটের দিন ভোট কেন্দ্র দখল করে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করবেন— এমন হুঙ্কারও তিনি ও তার লোকজন দিচ্ছেন।

গত বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহফুজা জেরিনের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানা করেছেন নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী নুরুল ইসলামকে।

জানা গেছে, বরমা ইউনিয়নের নয়টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে চারটি ভোট কেন্দ্র সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যে বরমা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের পূর্ব কেশুয়া হাজী আবদুল কুদ্দুস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রকে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।

এমন পরিস্থিতিতে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বরমা ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মাইগতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাতাজুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ দাবি করে জেলা প্রশাসনের কাছে লিখিতভাবে নিরাপত্তা চেয়েছেন আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী জাবেদ মোহাম্মদ গউস মিল্টন।

মিল্টন বলেন, ‘গতবারের নির্বাচনেও ৬, ৭ ও ৮ নং ওয়ার্ডের কেন্দ্র দখল করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা কেন্দ্রে ভোট দিতে গেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু আহমেদ জুনুর নেতৃত্বে তাদের মারধর ও হুমকি দেওয়া হয়। এবারের নির্বাচনেও একইভাবে তারা ভোটারের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। আমি প্রশাসনের কাছে নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’

চন্দনাইশ উপজেলা রিটার্নিং অফিসার মিনহাজ উদ্দিন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘নির্বাচনী পরিবেশ এখনও আমাদের অনুকূলে রয়েছে। কোনো প্রার্থীর যদি অভিযোগ থাকে, তাহলে আমাদের জানাতে হবে। বরমা ইউনিয়ন নিয়ে এ পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখব।’

আরএম/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!