চট্টগ্রাম সিটি ভোট ঘিরে ব্যস্ত আন্দরকিল্লা

বাকির নাম ফাঁকি, নগদ ছাড়া কাজ হচ্ছে না

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে মহিলা কাউন্সিলদের প্রতীক নির্ধারণ হওয়ার পরপরই সরগরম হয়ে উঠেছে ছাপাখানার জন্য বিখ্যাত নগরীর আন্দরকিল্লা এলাকা। কোন কোন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পোস্টার ছাপানো ইতিমধ্যে শেষ। কারও পোস্টার ডিজাইন করা হচ্ছে। কারও কারও লিফলেট ছাপানোর কাজও চলছে। মেয়র পদে এবার ৬ জন, কাউন্সিলর পদে ১৬১ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী ৫৬ জন প্রার্থী নির্বাচনী লড়াইয়ে আছেন।

মঙ্গলবার সকাল ৯ টায় নগরীর সিরাজউদ্দৌলা সড়কের সাগরিকা অফসেট প্রেসে গিয়ে দেখা যায়, মেশিনে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর পোস্টার ছাপানো শেষ হয়েছে। ওই সময়টাতে ছুটিতে যাচ্ছেন সালাউদ্দিন। তিনি জানান, বস (মালিক) আমার শিডিউলে দুই জনের পোস্টার রেখেছিলেন। আমি শেষ করে দিয়েছি। সালাউদ্দিনের পর মেশিন অপারেটর নুর মোহাম্মদের ডিউটি শুরু। তিনি অপেক্ষায় আছেন মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাতের পোস্টার ছাপাতে।

সাগরিকা প্রেসের কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন জানান, আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম, বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনসহ ৩ জন মেয়র এবং কয়েকজন কাউন্সিলরের পোস্টারের অর্ডার পেয়েছি। কিছু ছাপা শেষ হয়েছে। কিছু কম্পিউটারের ডিজাইন হচ্ছে। প্রথম ধাপে সবগুলো আজ রাতের মধ্যে ছাপানো শেষ হয়ে যাবে।

চট্টগ্রাম সিটি ভোট ঘিরে ব্যস্ত আন্দরকিল্লা 1

ছাপা শেষ হলেও মোমিন রোডের আল কাজেমী প্রিন্টিং প্রেসের মেশিনে তখনও আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিমের নৌকা প্রতীকের ছাপানো পোস্টার। মেশিন অপারেটর আব্দুল আলীম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, গতকাল (৯ মার্চ) দুপুর থেকে ছাপা শুরু হয়েছে। সকালে ছাপ শেষ হওয়ার পর সব বান্ডেল করছি আমরা। একটু পর গাড়ি এসে নিয়ে যাবে।

নগরীর চেয়ারম্যান গলি, প্রেসবাজার গলি, মোমিন রোড এলাকার ছাপাখানাগুলো সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে প্রতিটি ছাপাখানায় বিরতিহীনভাবে চলছে পোস্টার ছাপানো।

কে কত হাজার পোস্টার ছাপছেন তা নিয়ে আছে লুকোচুরি। যে পোস্টারে ঘোষণা আছে ৫ হাজার, সেই পোস্টার এক প্রেসেই ছাপানো হয়েছে ৫০ হাজার।

তবে ভোটের পোস্টার ছাপানোয় অনাগ্রহও আছে কোন কোন প্রেস মালিকের। অতীতে অনেক পরাজিত প্রার্থীর পোস্টার ছাপানোর বকেয়া বিল আদায় হয়নি। তাই তারা এবার সতর্কতার সাথে পোস্টার ছাপানোর অর্ডার নিচ্ছেন। নগদ টাকায় পোস্টার ছাপাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ সম্পর্ক বিবেচনায় পোস্টার ছাপাচ্ছেন। যাতে টাকা না পেলেও সম্পর্কের খাতিরে তা ছাড় দেওয়া যায়।

তেমনি একজন ডিজিটাল কালার ওয়েব প্রেসের মোমিনুল হক। তিনি দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর পোস্টার ছাপাচ্ছেন। মোমিনুল হক জানান, একজন পুরো বিল পরিশোধ করেছেন। তার লোকজন এসে বিকেলে পোস্টার নিয়ে যাবেন। আরেকজনেরটা অর্ধেক টাকা পরিশোধ করেছে। বাকি অর্ধেক দিলে ব্যবসায়িকভাবে লাভ থাকবে। না দিলে সম্পর্কটা আরো ঘনিষ্ঠ হবে।

প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা সর্বোচ্চ ২৩ ইঞ্চি বাই ১৮ ইঞ্চি মাপের পোস্টার ছাপাতে পারবেন। তবে কেউ সাদা-কালো ছাড়া অন্য রঙের পোস্টার বা লিফলেট ছাপাতে পারবেন না। এবার পরিবেশগত দিক বিবেচনায় পলিথিনে মুড়িয়ে পোস্টার ঝোলানোয় আছে নিষেধাজ্ঞা।

এফএম/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!