চট্টগ্রাম সিটির ভোটে সহিংসতার আশঙ্কা খোদ নির্বাচন কমিশনারেরই

‘দায় এড়াতে পারে না ইসি’

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটে কোনও ঘটনার দায়ই ইসি এড়াতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।

সোমবার (২৫ জানুয়ারি) রাজধানীতে নির্বাচন ভবনের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

এর আগে রোববার (২৪ জানুয়ারি) চট্টগ্রামে এসে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ে বলেছেন, ‘নির্বাচনে কোনো ঝুঁকি নেই। ভোটাররা নিরাপদ, ভোট সুষ্ঠু হবে।’

এর বিপরীতে অবস্থান নিয়ে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘চট্টগ্রাম সিটিতে সহিংসতার আশঙ্কা এজন্য করছি— কারণ, সেখানে দুটি প্রাণহানি ঘটেছে। আমি আগেও বলেছি এখনও বলছি, যেকোনও নির্বাচনের চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশি।’

এর আগে ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচন উপলক্ষে আমার বার্তা’ শিরোনামে লিখিত বক্তব্যে এই কমিশনার বলেন, ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে, এই অতীব গুরুত্ববহ নির্বাচনে ভোটার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, নির্বাচন কাজে নিয়োজিত সকল অংশীজন প্রত্যেকেই নিরপেক্ষভাবে দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে জাতি হিসেবে আমাদের আত্মমর্যাদা সমুন্নত রাখবেন।’

তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের কার্যকালের অবশিষ্ট সময়ে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। এই নির্বাচনকে ঘিরে সহিংসতার শঙ্কা ও উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ রয়েছে। পরিবেশ সুষ্ঠু না হলে অবাধ, নিরপেক্ষ, আইনানুগ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। নির্বাচনের পূর্বশর্ত লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের ধারণাও অবান্তর হয়ে যায়। তাই চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পক্ষ-বিপক্ষের ভারসাম্য সৃষ্টি আমাদের জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ। এই নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে থাকা অপরিহার্য, নইলে তা ভণ্ডুল হয়ে যাবে। সুষ্ঠু নির্বাচন দল ও মত নির্বিশেষে সবার জন্য দেশপ্রেমের অগ্নিপরীক্ষা। নির্বাচন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার একমাত্র অবলম্বন।’

মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘ভোট হচ্ছে স্বাধীন দেশে জনগণের সার্বভৌমত্বের প্রতীক, একটি পবিত্র আমানত। এর মাধ্যমে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হয়। নির্বাচন ভূ-লুণ্ঠিত হলে গণতন্ত্রও ভূ-লুণ্ঠিত হয়ে যায়। আমরা যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলি, তার নির্যাস হচ্ছে গণতন্ত্র। ক্ষমতার স্বাভাবিক হস্তান্তর হচ্ছে এর মূল লক্ষ্য। তবে ভোটের মাধ্যমে সত্যিকার জনপ্রতিনিধিরা যাতে নির্বাচিত হন, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, এই অতীব গুরুত্ববহ নির্বাচনে ভোটার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, নির্বাচন কাজে নিয়োজিত সকল অংশীজন প্রত্যেকেই নিরপেক্ষভাবে দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে জাতি হিসেবে আমাদের আত্মমর্যাদা সমুন্নত রাখবেন। একইসঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট প্রদানে ব্যাপক অংশগ্রহণ একান্তভাবে কাম্য। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের আইনানুগভাবে অবশ্যই প্রতিহত করতে হবে। আমরা জনগণের মনে নির্বাচনের প্রতি আস্থা সৃষ্টি করে ও তাদের উদ্বুদ্ধ করে গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় সামিল হতে চাই।’

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!