চট্টগ্রাম রেলের ডিটিওর ‘ভুল’ সিদ্ধান্তে বন্ধ হলো স্টেশন, বাড়তি খরচে গুনছে লোকসান

রেলের ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তার ভুলে বন্ধ হয়ে গেল চট্টগ্রাম পূর্বাঞ্চলের একটি স্টেশন। এছাড়া অপর একটি স্টেশনে লোক বদলি করলেও সেই পদে নতুন কাউকে পদায়ন করা হয়নি। একইসঙ্গে মানা হচ্ছে না রেলের ব্যয় সংকোচন নীতিও। ফলে গচ্চা যাচ্ছে টাকা, লোকসান গুনছে রেলওয়ে।

জানা যায়, ব্যয় সংকোচন নীতি গ্রহণ করলেও কিছু কর্মকর্তার কারণে সে নীতির কাঙ্ক্ষিত ফল পাচ্ছে না রেল। এই নীতিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছেন চট্টগ্রামের ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও) আনসার আলী। তার সিদ্ধান্তে ফেনীর মুহুরীগঞ্জ রেলস্টেশন বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া কুমিল্লার রাজাপুর স্টেশনের স্টেশন মাস্টারকে বদলি করলেও সে স্থানে নতুন পদায়ন করার হয়নি কাউকে। এর পরিবর্তে এই জায়গায় বেতন-ভাতা ছাড়াও অতিরিক্ত টাকা খরচ করে লোক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে রেলকে প্রতিমাসে টাকা গচ্চা দিতে হচ্ছে। রাজাপুর স্টেশন ছাড়া আরও পাঁচ স্টেশনের মাস্টার ও সহকারী মাস্টারকে বদলি করা হয়েছে।

শনিবার (২১ মে) রেল পূর্বাঞ্চল পরিবহন দপ্তর সূত্রে মুহুরীগঞ্জ রেলস্টেশন বন্ধ হওয়া এবং ছয়জন মাস্টার (এসএম) ও সহকারী স্টেশন মাস্টার (এএসএম) বদলির তথ্য জানা গেছে।

এর আগে গত ১৭ মে প্রথমে কন্ট্রোল অর্ডার ও পরে পরিবহন কর্মকর্তার অনুমতিতে স্থায়ী আদেশে এই ছয়জনকে বদলি করা হয়।

কুমিল্লার রাজাপুরে দায়িত্বরত ছিলেন স্টেশন মাস্টার আশরাফুল আলী, স্টেশন মাস্টার (৩) রেজাউল, নুরুল ইসলাম, সহকারী স্টেশন মাস্টার। এদের মধ্যে হঠাৎ আশরাফুল আলীকে ফৌজদারহাট স্টেশনে বদলি করা হয়। কিন্তু তার জায়গায় কাউকে পদায়ন করা হয়নি। এই জায়গায় অতিরিক্ত খরচে রিসিভিং এলাউন্স দিয়ে আরএসএম হিসেবে মাহমুদুল হাসান সোহাগ নামের একজনকে কাজ করানো হচ্ছে।

এছাড়া ফেনীর মুহুরীগঞ্জ রেল স্টেশনে কর্মরত ছিলেন সহকারী স্টেশন মাস্টার সৈকত দেবনাথ। তাকে বদলি করা হয় সীতাকুণ্ড স্টেশনে। কাউকে এই জায়গা পদায়ন না করায় বন্ধ হয়ে যায় সচল স্টেশনটি।

এদিকে ভারপ্রাপ্ত ডিটিও আনসার আলী ‘সুবিধা’ নিয়ে সচল স্টেশন বন্ধ ও রিসিভিং এলাউন্স নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে আনসার আলীর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন স্টেশন মাস্টার জানান, সীতাকুণ্ডে আগে থেকে তিনজন সহকারী স্টেশন মাস্টার কর্মরত রয়েছেন। সৈকত দেবনাথসহ চারজন হয়েছেন। কি কারণে বদলি করে চালু স্টেশন বন্ধ করা হয়েছে তা বোধগম্য নয়।

পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় কর্মব্যবস্থাপক মো. আবুল কালাম বলেন, ‘বিষয়টি পরিবহন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞেস করুন বা সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রধানের কাছ থেকে জানুন। এ বিষয়ে আমি বিব্রত।’

এ বিষয়ে জানতে চিফ অপারেটিং সুপারিনটেন্ডেন্ট (পূর্ব) সালাউদ্দিন আহম্মেদকে ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে এসএমএস দিয়েও এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

স্টেশন বন্ধের বিষয়ে রেলভবনের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সর্দার শাহাদাত আলী বলেন, ‘পূর্বাঞ্চল পরিবহন কর্মকর্তা, ডিআরএম এবং চিফ অপারেটিং সুপারিনটেন্ডেট এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন।’

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!