চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে টিকিট কালোবাজারি/ নেপথ্যে রেলের কর্তারা, দুই বছর ধরে ধরা পড়ছে একই লোক!

প্রতিবারই একই চিত্র। ঈদের আগের এই সময়টায় চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে ট্রেনের একটি টিকিট যেন সোনার হরিণ! হাজার হাজার ট্রেনযাত্রী জিম্মি হয়ে পড়েছে টিকিট কালোবাজারিদের কাছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও টিকিট না পেয়ে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে বেশিরভাগ মানুষকে। বিভিন্ন কারণে ট্রেনে চলাচল নিরাপদ হওয়ায় ঈদকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম রেলস্টেশন এলাকায় যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় থাকে। এই সুযোগের অপব্যবহার করে স্টেশন এলাকার কালোবাজারি চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। কাউন্টারে টিকিট না পেয়ে কালোবাজারিদের কাছ থেকে চড়া দামে কিনতে হচ্ছে ট্রেনের টিকিট।

নিজস্ব অনুসন্ধান ও পুলিশের হাতে বিভিন্ন সময়ে আটক কালোবাজারিদের দেওয়া তথ্য থেকে জানা যায়, চট্টগ্রাম রেলস্টেশনের বুকিং ক্লার্ক এবং রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) কিছু সদস্য টিকিট কালোবাজারির নেপথ্যে সক্রিয়। এদের হাত ধরেই কালোবাজারিদের কাছে যাচ্ছে ট্রেনের টিকিট।

এদিকে গত দু বছর ধরে পুলিশের অভিযানে ধরা পড়ছে একই কালোবাজারি। জিজ্ঞাসাবাদেও মিলছে একই তথ্য। একই কায়দায়। নামমাত্র কিছু টিকিট ‘উদ্ধার’ করে, দু একজনকে আটক করেই পুলিশকে এই ধরনের অভিযানে ইতি টানতে দেখা যায়।

২০১৮ সালের ৯ জুলাই রুস্তম আলী প্রকাশ জাহাঙ্গীরের কাছ থেকে ২৬৭টি আসনের ১৮৭টি টিকিট উদ্ধার করা হয়।
২০১৮ সালের ৯ জুলাই রুস্তম আলী প্রকাশ জাহাঙ্গীরের কাছ থেকে ২৬৭টি আসনের ১৮৭টি টিকিট উদ্ধার করা হয়।

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) ইফতারের পর গোয়েন্দা পুলিশ (দক্ষিণ জোন) নগরীর তিনপোল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে মো. রুস্তম আলী প্রকাশ জাহাঙ্গীরকে (৪৭)। জাহাঙ্গীরের কাছ থেকে এ সময় ৬১ আসনের ৫০টি টিকিট উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে জাহাঙ্গীর জানান, টিকিট কাউন্টারে কর্তব্যরত কয়েকজন ব্যক্তি এবং রেলওয়ের কিছু কর্মকর্তা এই সিন্ডিকেটে জড়িত।

এর আগে ২০১৮ সালের ৯ জুলাই চট্টগ্রামের কাজীর দেউড়ি এলাকার গোলাম হোসেন অ্যান্ড সন্স নামে একটি দোকানে অভিযান চালিয়ে এই একই লোককে গ্রেপ্তার করেছিল নগর গোয়েন্দা পুলিশ। চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের পূর্ব মিঠানালা এলাকার ছেরাজুল হকের ছেলে মো. রুস্তম আলী প্রকাশ জাহাঙ্গীরের কাছ থেকে সেবার ২৬৭টি আসনের ১৮৭টি টিকিট উদ্ধার করা হয়। জাহাঙ্গীরের সঙ্গে ওই সময় নোয়াখালী সেনবাগ থানার বাবুপুর শ্রীপুরের আব্দুল কাদেরের ছেলে মো. মাহবুবুল হক (৪৫) নামে আরেকজনকেও আটক করা হয়। এই দুই টিকিট কালোবাজারি তাদের সঙ্গে মো. হেলাল, চট্টগ্রাম রেলস্টেশনের সাদেক, মিজান ও সাইমনসহ আরও কয়েকজন জড়িত বলে তথ্য দেয়।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!