চট্টগ্রাম মেডিকেলে বিনামূল্যে চিকিৎসা পাবেন মুক্তিযোদ্ধারা

হাট ইজারার টাকার অংশে হবে মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ দেশের ২২টি বিশেষায়িত হাসপাতালে মুক্তিযোদ্ধারা চিকিৎসা পাবেন বিনামূল্যে। এখন থেকে দেশের সরকারি হাট-বাজারের ইজারার টাকার অংশে হবে মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা। সেই সঙ্গে দুর্যোগে মুক্তিযোদ্ধাদের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তা পুনর্নিমাণে এ খাত থেকে অর্থ দেওয়া হবে।

সম্প্রতি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে ২০১৬ সালের ওই নীতিমালায় সংশোধনী এনে সরকারি হাট-বাজারসমূহের ইজারালব্ধ আয়ের ৪ শতাংশ অর্থ ব্যয় নীতিমালা ২০২১ জারি করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়া স্বাক্ষরিত নীতিমালায় বলা হয়েছে চিকিৎসা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত খাতেও ইজারা হতে প্রাপ্ত অংশ ব্যয় করা হবে।

এতে বলা হয়, মন্ত্রণালয় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালসহ, মেডিকেল কলেজ ও ২২টি বিশেষায়িত হাসপাতালে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তার স্ত্রী বা স্বামীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য ৭৫ হাজার টাকা আর্থিক অনুদান করতে পারবে। এই চিকিৎসার ক্ষেত্রে সরকারি হাসপাতালের প্রধান বা তত্ত্বাবধায়ক এবং বিশেষায়িত হাসপাতালের পরিচালক বা অধ্যক্ষ আয়ন-ব্যয়ন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

নীতিমালায় বলা হয়, চিকিৎসার অর্থ পেতে কোনও আবেদন করার প্রয়োজন পড়বে না। কেবল মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রমাণক জমা দিতে হবে। এছাড়া জটিল কোনও রোগে আক্রান্ত হয়ে নির্ধারিত এসব হাসপাতালের বাইরে দেশে-বিদেশে চিকিৎসার প্রয়োজন পড়লে সরকার অতিরিক্ত ১ লাখ টাকা অনুদান দেবে। তবে চিকিৎসা অনুদান একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা জীবনে একবারের বেশি পাবেন না। আর অনুদান একটি বাছাই কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় মঞ্জুরি দেবে।

এদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের ঘর প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা পুননির্মাণ বা সংস্কার সহায়তার জন্য সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা অনুদান মিলবে বলে নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগে বীর নিবাস ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সমপরিমান আর্থিক সুবিধা পাওয়া যাবে। অবশ্য এই ঘর সংস্কারের টাকাও কোনও মুক্তিযোদ্ধা তার জীবদ্দায় একবারের বেশি পাবেন না।

এর আগে দেশের সরকারি হাসপাতাল ছাড়া ১৪টি বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসার সুযোগ সৃষ্টি করা হলেও বর্তমানে তা বাড়িয়ে ২২টি করা হয়েছে। একইসাথে অনুদানের পরিমাণ বাড়িয়ে ৫০ হাজার থেকে ৭৫ হাজার টাকা করা হয়েছে।

যে ২২টি বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা পাবেন মুক্তিযোদ্ধারা, সেগুলো হচ্ছে— চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর), জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতাল, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, খুলনার শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল, গোপালগঞ্জের শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল-সিলেট, শের-ই- বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল-বরিশাল, জাতীয় হৃদরোগ ফাউন্ডেশন-ঢাকা এবং বারডেম জেনারেল হাসপাতাল-ঢাকা।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!