চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে আনসারের ৪৭ লাখ টাকা মেরে খেয়েছেন ১৪ জন মিলে, বাটোয়ারায় বড় কর্তাও

খালি পদের কথা গোপন রেখে নেওয়া হয়েছে বেতন-বোনাস

চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে কর্মরত আনসার সদস্যদের বেতন-বোনাস ও উৎসব ভাতার নামে ভুয়া বিল ভাউচার বানিয়ে মেরে দেওয়া হয়েছে ৪৭ লাখ আট হাজার ৪৬০ টাকা। এর সঙ্গে জড়িত চট্টগ্রাম আনসারের থানা ও ভিডিপি কর্মকর্তা, জেলা কমান্ড্যান্ট কার্যালয়ের হিসাবরক্ষক ও জেলা কমান্ড্যান্ট জোন অধিনায়কসহ ১৪ সদস্য।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) তদন্তে ওঠে এসেছে এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনা। তাতে দেখা গেছে, আনসারের শূন্য পদের কথা গোপন রেখে সেই পদের জন্যও নেওয়া হয়েছে বেতন-বোনাস।

সংস্থাটির পরিচালক (অর্থ) মোয়াজ্জেম হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমানের কাছে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর এখন টাকা আত্মসাতের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

তদন্তে দেখা গেছে, ২০১৮ সাল থেকে ২০২১ সালের এপ্রিল পর্যন্ত চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে কর্মরত আনসার কর্মীদের বেতন ও বোনাস দেখিয়ে আত্মসাৎ করা হয়েছে মোট ৪৭ লাখ আট হাজার ৪৬০ টাকা।

আত্মসাতের এই ঘটনায় জড়িত রয়েছেন চট্টগ্রাম বিমানবন্দর আনসারের ক্যাম্প কমান্ডার (ইনচার্জ) মো. ওবায়দুর রহমান, মো. মোক্তার আহমেদ, মো. আবদুর রহমান, মো. আমির হামজা, মো. হাসানুজ্জামান, মো. শাহাদাত হোসেন, মো. শফিকুল ইসলাম, জোন অধিনায়ক আশীষ কুমার ভট্টাচার্য, রাজীব হোসাইন, মোহাম্মদ সাইফুজ্জামান, বিকাশ চন্দ্র দাস, পতেঙ্গা থানা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা মোস্তফা ফরিদুল আলম ও ব্যাটালিয়ন আনসার (হিসাবরক্ষক) মো. রেজাউল করিম।

জানা গেছে, দেশের অন্য বিমানবন্দরগুলোর মতো চট্টগ্রাম বিমানবন্দরেও নিজস্ব জনবলের পাশাপাশি আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেন। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে তাদের বেতন-বোনাস দেওয়া হয়। কিন্তু প্রতি মাসে নানা কারণে বেশকিছু কর্মীর পদ শূন্য থাকে। চাকরিচ্যুতি অথবা চাকরির মেয়াদ শেষসহ নানা ঘটনায় ক্যাম্পে খালি থাকে অনেক পদ। কিন্তু সেটা গোপন রেখে তাদের নামেও বেতন-বোনাস নেওয়া হয়।

প্রতি মাসে এভাবে ভুয়া বেতন দেখিয়ে কয়েক লাখ টাকা মেরে দেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এছাড়া প্রতিবছর বিভিন্ন উৎসবেও তাদের নামে বোনাস নেওয়া হয়। গত অন্তত তিন বছরে শুধু চট্টগ্রাম বিমানবন্দরেই প্রায় অর্ধকোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে তদন্তে প্রমাণ মিলেছে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!