চট্টগ্রাম বন্দরে ভয়াবহ কনটেইনার জট, নিয়ন্ত্রণে আনতে স্টোররেন্ট দ্বিগুণ হচ্ছে

চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ডে সর্বসাকুল্যে ৪৯ হাজার টিইইউএস কনটেইনার রাখার মতো জায়গা আছে। আসন্ন রমজানকে ঘিরে পণ্য আমদানি বেড়ে যাওয়ায় প্রতিদিন হাজার হাজার কনটেইনার নামছে বিভিন্ন জাহাজ থেকে। কিন্তু রমজানের বেচাকেনা শুরু না হওয়ায় বাড়েনি পণ্য খালাস। তাতে করে বন্দরের অভ্যন্তরে কনটেইনারের বিশাল পাহাড় গড়ে উঠছে।

অবস্থা সামাল দিতে বন্দর কর্তৃপক্ষ কনটেইনারের ভাড়া বাড়িয়ে দ্বিগুণ করার উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু সোমবার (১ মার্চ) থেকে ভাড়া বৃদ্ধির কথা বলা হলেও আমদানিকারকদের অনুরোধে তা স্থগিত করা হয়েছে। তবে পণ্য খালাসে গতিশীলতা না আসলে স্টোর রেন্ট দ্বিগুন করার সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে বলে সতর্ক করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, রমজান উপলক্ষে কোটি কোটি টাকার পণ্যভর্তি কনটেইনার আসছে দেশে। প্রতিদিন হাজার হাজার কনটেইনার নামছে বিভিন্ন জাহাজ থেকে। বন্দরের ইয়ার্ডে সর্বসাকুল্যে ৪৯ হাজার টিইইউএস কনটেইনার রাখার মতো জায়গা থাকলেও ১ মার্চ পর্যন্ত বন্দরের ইয়ার্ডে রাখা কনটেইনারের পরিমান ৪০ হাজার টিইইউএস ছেড়ে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ইয়ার্ডে কনটেইনার রাখার জায়গা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।

এ অবস্থায় গত ২৫ ফেব্রুয়ারি এফসিএল (ফুল কনটেইনার লোড বা পুরো কনটেইনারে একজন আমদানিকারকের পণ্য) কনটেইনার সরিয়ে নিতে নোটিশ দিয়েছিল বন্দর কর্তৃপক্ষ। বলা হয়েছিল যে, কনটেইনার সরিয়ে নেয়া না হলে ১ মার্চ থেকে স্টোররেন্ট দ্বিগুন করা হবে। জাহাজ থেকে কনটেইনার নামানোর তারিখের ১১তম দিন থেকে দ্বিগুণ স্টোররেন্ট কার্যকর করার নোটিশ দেয়া হয়।
বন্দর কর্তৃপক্ষের নোটিশ দেয়ার পর থেকে আমদানিকারকদের পক্ষ থেকে স্টোররেন্ট না বাড়ানোর জন্য অনুরোধ করা হয়। করোনাকালে ব্যবসা বাণিজ্যের নাজুক অবস্থায় স্টোররেন্ট বাড়ালে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলেও তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়। এতে করে ১ মার্চ থেকে স্টোররেন্ট দ্বিগুন করার কথা থাকলেও কর্তৃপক্ষ তা থেকে সরে আসে। কিন্তু আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বন্দরের অভ্যন্তর থেকে এফসিএল কনটেইনার খালাসে গতিশীলতা আনা না হলে স্টোররেন্ট দ্বিগুন করা হবে বলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সতর্ক করেন।

বিষয়টি নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (পরিবহন) এনামুল করিমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি স্টোররেন্ট বাড়ানোর নোটিশ স্থগিত করার কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে চিন্তাভাবনা করছি। বন্দর কর্তৃপক্ষ আমদানিকারকদের কথা বিবেচনা করে স্টোররেন্ট দ্বিগুন করার বিষয়টি স্থগিত করেছে। তিনি আমদানিকারকদের দ্রুত কনটেইনার খালাস করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, এতে সবারই সুবিধা।

এনামুল করিম বলেন, ‘রমজানকে কেন্দ্র করে আমদানি বাড়ছে। বিপুল পরিমানে পণ্য আসছে। এখন কনটেইনার খালাস যদি সেভাবে না হয় তাহলে আমাদেরকে কঠোর হতে হবে।

একাধিক আমদানিকারকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, রমজানের বেচাকেনা এখনো শুরু হয়নি। তাই রমজান উপলক্ষে যেসব পণ্য আনা হয়েছে সেগুলো খালাস করা হচ্ছে না। এসব পণ্য বাইরে গুদামে রাখতে গেলে খরচ অনেক। পণ্যের মানও ঠিকঠাক রাখা সম্ভব হবে না। বন্দর থেকে কনটেইনার খালাস না করলে পণ্যগুলো নিরাপদে থাকছে। তাই রমজানের জন্য যেসব পণ্য আমদানি হচ্ছে সেগুলো বন্দরের ইয়ার্ডে পড়ে রয়েছে।

এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!