চট্টগ্রাম বন্দরে ডিটারজেন্টের ঘোষণায় এলো কসমেটিকস

দেড় কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা

মিথ্যা ঘোষণায় থ্যাইল্যান্ড থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে এলো কসমেটিক। পণ্য আমদানিতে ঘোষণা ছিল ডিটারজেন্ট পাউডার এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জিনিসপত্র । ঢাকার আমদানিকারক ফাতেমা ইন্টারন্যাশনালের চালানটির ছাড়ের দায়িত্বে ছিল চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদ এলাকার ওএসএল ট্রেড প্রাইভেট লিমিটেড। এতে দেড় কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকির চেষ্টা করেছিল আমদানিকারক ও সিএন্ডএফ। এ ঘটনায় কাস্টমস হাউসে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

শতভাগ কায়িক পরীক্ষায় এমন জালিয়াতি ধরা পরে কাস্টমস কর্মকর্তাদের হাতে। বিষয়টি আরও তদন্ত শেষে সংশ্লিষ্ট আমদানিকারক ও সিএন্ডএফ এজেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানালেন কাস্টমসের সহকারী কমিশনার।

জানা গেছে, ডিটারজেন্ট আমদানির ঘোষণা দিয়ে আনা চালানের এক কন্টেইনার কসমেটিক পেয়েছে কাস্টমসের কর্মকর্তারা। ঘোষণা করা চালানে সন্দেহ থাকায় পণ্যটি শতভাগ কায়িক পরীক্ষায় এমন প্রতারণার সন্ধান পায় চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের অডিট ইনভেস্টিগেশন এন্ড রিচার্স (এআইআর) শাখার কর্মকর্তারা।

২০ হাজার ৬২৫ ডলার দিয়ে থাইল্যান্ড থেকে ১৩ হাজার ৭৫০ কেজি ডিটারজেন্ট আমদানি করার কথা ছিল। কিন্তু আমদানিকারণ সেটি না করে এনেছেন কমেটিকসের চালান। এতে বাংলাদেশি টাকায় প্রায় দেড় কোটি লাখ টাকা শুল্ক ফাঁকি হয়েছে বলে ধারণা করছেন কাস্টমসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

বিল অব এনট্রি থেকে জানা যায়, গত ২১-০৫-২০১৯ তারিখে কাস্টমস হাউসে বিল অব এন্ট্রি (সি নং ৪৩২১১৩) দাখিল করা হয়। এ চালানের মাত্র ২০ হাজার ৬২৫ ডলার ব্যয়ে ১৩ টন ওয়াশিং এন্ড ক্লিনিং প্রিপারেশন (এক্সেল এন্ড ডিটারজেন্ট) আমদানির ঘোষণা দেয় আমদানিকারক ঢাকার শহীদ মা জননী জাহানারা ইমাম সরণীর ইসমাইল ম্যানশনের সুপার সপ ‘ফাতেমা ইন্টারন্যাশনাল’।

ওইচালান ছাড়ের জন্য বিল অব এন্ট্রি দাখিল করেন চট্টগ্রামের দক্ষিণ আগ্রাবাদের সিএন্ডএফ ওএসএল ট্রেড প্রাইভেট লিমিটেড।

চালানটি থাইল্যান্ডের সেজা ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট কোম্পানি থেকে আমদানি করেন। এগুলো ‘এমভি মেরিন থারাবা ’ জাহাজে করে চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। আমদানিকারক কোম্পানি ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেডের ২৩৬৮ শাখা থেকে ১৯০১০০০৯ নং এলসি করেন।

ওই চালান নিয়ে জাহাজ গত মে মাসে চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। বিল অব এন্ট্রি দাখিলের পর সন্দেহ থাকায় ওই চালান কাস্টমসের বিশেষায়িত সফটওয়্যার অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ডে ‘লক’ করে তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় কাস্টমস অডিট ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিচার্জ (এআইআর) শাখাকে।

চালানের বিষয়ে জানতে চাইলে কাস্টমসের সহকারী কমিশনার নুর এ হাসনা সানজিদা অনসূয়া বলেন, গোয়েন্দা তথ্য থাকায় চালানটি লক করা হয়েছিল। শতভাগ কায়িক পরীক্ষায় জালিয়াতির স্পষ্ট হলো। অনেক বড় জালিয়াতি করেছে আমদানিকারক ও সিএন্ডএফ।

মিথ্যা ঘোষণায় আনা পণ্য ও শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার কারণে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ (সংশোধনী ২০১৫) অনুযায়ী মামলা দায়ের হবে জড়িতদের বিরুদ্ধে।

এএস/এসএ/এডি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!