চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে বন্ধ পণ্য খালাস, ১০ দফা দাবিতে শ্রমিকদের কর্মবিরতি

নৌযান শ্রমিকদের লাগাতার কর্মবিরতিতে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পণ্য খালাস বন্ধ রয়েছে। লাইটার জাহাজে পণ্য পরিবহন বন্ধ থাকায় চট্টগ্রাম থেকে সারাদেশে নদীপথে পণ্য পরিবহন স্থবির হয়ে পড়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।

চট্টগ্রাম থেকে পাইপলাইনে জ্বালানি তেল সরবরাহ কার্যক্রম বন্ধসহ ১০ দফা দাবিতে নৌপথে পণ্য পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে নৌযান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদ।

শনিবার (২৬ নভেম্বর) মধ্যরাত থেকে শুরু হয়েছে নৌযান শ্রমিকদের এই লাগাতার কর্মবিরতি। এর ফলে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পণ্য খালাস কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।

নদীপথে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙর থেকে দেশের ৬৪টি রুটে পণ্য পরিবহন করে। এই পণ্যের মধ্যে রয়েছে সিমেন্ট, সিরামিকস ও ইস্পাত শিল্পের কাঁচামাল, সার, কয়লা ও ভোগ্যপণ্য। লাইটার জাহাজে পণ্য পরিবহন বন্ধ থাকায় চট্টগ্রাম থেকে সারাদেশে নদীপথে পণ্য পরিবহন বন্ধ হয়ে গেছে।

শ্রমিকদের ১০ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, নৌযান শ্রমিকদের নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বুক প্রদানসহ শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ, খাদ্য ভাতা ও সমুদ্র ভাতার সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড ও নাবিক কল্যাণ তহবিল গঠন করা, দুর্ঘটনা ও কর্মস্থলে মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা, চট্টগ্রাম থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল সরবরাহে দেশের স্বার্থবিরোধী অপরিণামদর্শী প্রকল্প বাস্তবায়নে চলমান কার্যক্রম বন্ধ করা, বালুবাহী বাল্কহেড ও ড্রেজারের রাত্রিকালীন চলাচলের ওপর ঢালাও নিষেধাজ্ঞা শিথিল, নৌপথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও ডাকাতি বন্ধ, ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাস প্রদানসহ ভারতীয় সীমানায় সব ধরনের হয়রানি বন্ধ করা, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন নীতিমালা শতভাগ কার্যকর করে সকল লাইটারিং জাহাজকে সিরিয়াল মোতাবেক চলাচলে বাধ্য করা, চরপাড়া ঘাটে ইজারা বাতিল ও নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের সব ধরনের অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা বন্ধ করা।

বাংলাদেশ লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ ইছা মিয়া চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘শ্রমিকদের সর্বনিম্ন বেতন ২০ হাজার টাকা, মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ ১০ লাখসহ ভারতের বন্দরে শোরপাস নিয়ে ১০ দফা দাবি আমাদের। এসব দাবি মানা হলে আমরা কাজে যোগ দেবো। ভারতীয় বন্দরের জাহাজ থেকে নামতে দেয় না। এতে আমাদের প্রায় ১৫ জন মারা গেছে কিছু আগে। আর কত মৃত্যু আমরা সহ্য করবো? এসব বিষয় নিয়ে আমরা কর্মবিরতিতে নেমেছি। মূলত আমরা আন্দোলন সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে এ কর্মবিতরতি পালন করছি।’

বাংলাদেশ লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি নবী আলম বলেন, ‘বন্দরের বহির্নোঙরে রাখা বড় জাহাজ থেকে পণ্য খালাসের কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে সাধারণ শ্রমিকরা। একইসঙ্গে মাঝিরঘাট ও সদরঘাট এলাকার ১৮টি বেসরকারি ঘাটেও লাইটার জাহাজে করে পণ্য খালাসের কাজ বন্ধ রয়েছে।’

লাইটার জাহাজ মালিকদের সংগঠন ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের (ডব্লিউটিসি) নির্বাহী পরিচালক মাহবুব রশিদ খান বলেন, ‘প্রতিদিন ৭০ থেকে ৮০টি লাইটার জাহাজ বরাদ্দ দেয় ডব্লিউটিসি। কিন্তু আজ রোববার কোনো জাহাজ বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।

এএস/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!