চট্টগ্রাম প্রতিদিনের দুই রিপোর্ট নিয়ে তদন্ত কমিটি করেছে সিটি কর্পোরেশন

চট্টগ্রামে করোনা টিকার অবৈধ বাণিজ্য ও প্রতারণা

চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে অবৈধ বাণিজ্য ও প্রতারণা নিয়ে চট্টগ্রাম প্রতিদিনে প্রকাশিত দুটি প্রতিবেদনে উদঘাটিত অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ৫ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন।

চট্টগ্রামে ভিআইপি টিকার রমরমা ব্যবসা চসিকের হাসপাতালেই, রয়েছে দুই নাম্বার টিকাও’ এবং ‘চট্টগ্রামের হাজারী গলিতে করোনার টিকা বেচে কথিত সুইপার, দিনে আয় ১ লাখ’ শিরোনামে গত ৬ জুলাই ও ১০ জুলাই চট্টগ্রাম প্রতিদিনে প্রকাশিত প্রতিবেদনের বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ওই কমিটি গঠন করেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন।

৫ সদস্যবিশিষ্ট এই কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সচিব খালেদ মাহমুদকে। কমিটির চার সদস্য হলেন— চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুমনী আক্তার, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আইন কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন, চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. ওয়াজেদ চৌধুরী অভি এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট জাহানারা ফেরদৌস।

রোববার (১১ জুলাই) চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে আগামী তিন দিনের মধ্যে বিষয়গুলো সরেজমিনে তদন্ত করে সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বরাবরে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

১০ জুলাই ‘চট্টগ্রামে ভিআইপি টিকার রমরমা ব্যবসা চসিকের হাসপাতালেই, রয়েছে দুই নাম্বার টিকাও’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘চট্টগ্রাম নগরীর সদরঘাটের কালিবাড়ি রোডে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত জেনারেল হাসপাতালে করোনা টিকার অবৈধ বাণিজ্য চলছে প্রকাশ্যেই। টিকাপ্রতি সেখানে নেওয়া হচ্ছে সর্বনিম্ন ১৪০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৪০০০ টাকা পর্যন্ত। হাসপাতালের কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারীর যৌথ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চলছে টিকার এই কারবার। এজন্য তারা আশ্রয় নিচ্ছে অভিনব সব কৌশলের। অন্যদিকে চসিকের এই হাসপাতালে কর্মরত একাধিক কর্মী এই বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত থাকলেও হাসপাতালেরই একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন, টিকাদানে নিয়োজিত দুজন কর্মী ছাড়া বাকিদের দেওয়া টিকা পুরোটাই ‘দুই নাম্বার’।

চট্টগ্রাম প্রতিদিনের সপ্তাহব্যাপী অনুসন্ধানে জানা গেছে, সিটি কর্পোরেশন জেনারেল হাসপাতালে করোনার দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিতে আসা প্রার্থীদের প্রথমে টিকার সংকট দেখিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তবে এদের মধ্যে যারা বিশেষ এজেন্ট বা কর্মকর্তা-কর্মচারীর রেফারেন্সে আসেন তারা টিকা পান। আবার যারা টিকার জন্য পীড়াপিড়ি করেন, তাদের কৌশলে বশে এনে টাকার বিনিময়ে টিকা ‘ম্যানেজ’ করে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়।

অন্যদিকে গত ৬ জুলাই চট্টগ্রাম নগরীর হাজারী গলিতে করোনার সরকারি টিকার ‘দ্বিতীয় ডোজের’ জমজমাট ব্যবসা নিয়ে ‘চট্টগ্রামের হাজারী গলিতে করোনার টিকা বেচে কথিত সুইপার, দিনে আয় ১ লাখ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় চট্টগ্রাম প্রতিদিনে। ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ‘অস্থায়ী কর্মচারী’ হিসেবে এলাকায় পরিচয় দেওয়া এক লোক নগরীর হাজারী গলির একটি ঘরে নিজ হাতেই দিচ্ছেন করোনা টিকার ‘দ্বিতীয় ডোজ’। তবে চসিক সূত্রে জানা গেছে, বলয় আদৌ চসিকের পরিচ্ছন্নকর্মী নন।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!