চট্টগ্রাম নগরের ১০ ওয়ার্ডে ৪০ টাকায় স্বাস্থ্যসেবা, রাতেও চালু করতে চান মেয়র

১ বছরে সাড়ে ৮ লাখ মানুষকে আরবান প্রাইমারির স্বাস্থ্যসেবা

চট্টগ্রাম নগরীর ১০টি ওয়ার্ডের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ও দুটি মাতৃসদন হাসপাতালে ৪০ টাকার বিনিময়ে ফ্রি ওষুধসহ স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছেন জনগণ। এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সহযোগিতায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত এই কার্যক্রম চলছে। গত বছর এই কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রায় সাড়ে আট লাখ মানুষকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম নগরের ১০ ওয়ার্ডে ৪০ টাকায় স্বাস্থ্যসেবা, রাতেও চালু করতে চান মেয়র 1

তবে দিনের বেলায় গার্মেন্টসকর্মী ও শ্রমিকরা কাজে ব্যস্ত থাকায় এই সেবা থেকে প্রায়ই বঞ্চিত থাকেন তারা। তাদের কথা চিন্তা করে এবার রাতের বেলায়ও এই সেবা চালু করতে চান চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী।

বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সিটি কর্পোরেশন ভবনে দাতা সংস্থা এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের হেলথ স্পেশালিস্ট রুই লিউসহ একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আরবান প্রাইমারি হেলথ কেয়ার প্রকল্পের বিষয়ে আলাপকালে মেয়র এই মন্তব্য করেন।

চট্টগ্রামে পরিদর্শনকালে এডিবির প্রতিনিধি দলটি স্বাস্থ্যসেবার মান দেখতে বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ঘুরে দেখেন।

এই সময় মেয়র বলেন, ‘বাণিজ্যিক এলাকা হওয়ায় চট্টগ্রামে বিপুল পরিমাণ শ্রমিক ও গার্মেন্টসকর্মী কাজ করেন। যারা দিনে ব্যস্ত থাকায় চিকিৎসাকেন্দ্রে যেতে পারেন না। আবার আর্থিক সংকট থাকায় বেসরকারি হাসপাতালেও তারা সেবা নিতে পারেন না। সমাজের পিছিয়ে পড়া এসব মানুষদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে রাত্রিকালীন স্বাস্থ্যসেবা চালু করতে চাই। বিশেষ করে চট্টগ্রামের ইপিজেডসহ শিল্পঘন এলাকাগুলোতে দ্রুত রাত্রিকালীন স্বাস্থ্যসেবা চালু করব।’

এডিবির প্রতিনিধি দলের প্রধান রুই লিউ বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে শহরাঞ্চলে বসবাসকারী দরিদ্র মানুষরা পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা পায় না। এক্ষেত্রে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দিয়ে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে কাজ করে এডিবি।’

রাত্রীকালীন সেবা চালুর বিষয়ে রুই লিউ বলেন, ‘চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে আরবান প্রাইমারি হেলথ কেয়ার প্রকল্পের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ মানুষ উপকৃত হয়েছে। মেয়রের সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে শিল্প এলাকাগুলোতে রাত্রিকালীন স্বাস্থ্যসেবা চালুর পাশপাশি মা ও শিশু মৃত্যু হ্রাসে এডিবি সহায়তা বৃদ্ধি করবে।’

ইতোমধ্যে নগরীর ৪, ৬, ৭, ৮, ১৮, ৩৬, ৩৭, ৩৮, ৪০ ও ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এবং বন্দরটিলা মাতৃসদন হাসপাতালে ও মোহরার সাফা-মোতালেব মাতৃসদন হাসপাতালে এই স্বাস্থ্যসেবা চালু রয়েছে। যার মধ্যে ওয়ার্ডের স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে ৪০ টাকার বিনিময়ে ডাক্তারের পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় ওষুধ ফ্রিতে পাওয়া যায়। এছাড়া বাকি দুটি মাতৃসদন হাসপাতালে নামমাত্র মূল্যে ২৪ ঘণ্টা প্রসূতিকালীন সেবাসহ যেকোনো ধরনের স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে থাকে।

চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী বলেন, ‘সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো গত বছর সাড়ে আট লাখ লোককে সেবা দিয়েছে এবং এই পর্যন্ত ৭৫ লাখ লোককে করোনার টিকা দিয়েছে। এডিবি এগিয়ে আসলে সিটি কর্পোরেশন বর্তমান অবকাঠামো ব্যবহার করেই আরও বেশি মানুষকে সেবা দিতে পারবে। এক্ষেত্রে নতুন লোকবল নিয়োগসহ সব ধরনের সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত সিটি কর্পোরেশন।’

এই সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. ইমাম হোসেন রানা, জনসংযোগ ও প্রটোকল কর্মকর্তা আজিজ আহমদ, এডিবির সহযোগী প্রকল্প বিশ্লেষক (শিক্ষা) ফাইজা আহাদ, তানিয়া ফেরদৌস, আরবান প্রাইমারি হেলথ কেয়ার প্রকল্পের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার মো. তানভির হোসেন, আরবান ক্লাইমেট রিজিলিয়েন্স কো-অর্ডিনেটর মো. জাইদি হাসান খান।

বিএস/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!