চট্টগ্রাম দক্ষিণের নালিশ শুনবেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতারা

প্রতিনিধি সভায় অংশ নেবেন ৩ হাজার নেতাকর্মী

আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমুল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সংগঠিত করার লক্ষ্য নিয়ে প্রতিনিধি সভার আয়োজন করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ।

মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের প্রতিনিধি সভায় যোগ দেবেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক নেতারা।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের আওতাধীন আটটি উপজেলার অন্তত ৩ হাজার নেতাকর্মী ছাড়াও নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা অংশ নেবেন এই প্রতিনিধি সভায়। চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিতব্য এই দিনব্যাপি প্রতিনিধি সভায় কেন্দ্রীয় নেতারা শুনবেন তৃণমূলের নেতাকর্মীদের অভাব-অভিযোগের কথা।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান জানান, ১৫ মার্চ সকাল ৯টা থেকে তৃণমূলের প্রতিনিধি সভা শুরু হবে। এতে প্রায় তিন হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত থাকবেন। সভায় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটি, উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী, পৌরসভা, ইউনিট, ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, আওয়ামী লীগের প্রতিটি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ২০ জন করে প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন।

তিনি আরও জানান, নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের জনপ্রতিনিধিরাও (উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র, ইউপি চেয়ারম্যান) এতে উপস্থিত থাকবেন।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার এই প্রতিনিধি সভায় উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি, শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি, দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন প্রমুখ।

জেলার তৃণমূল আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, একজন ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যও (মেম্বার) ভোটে নির্বাচিত হতে চান না। এটা তো গণমুখী রাজনীতির জন্য সহায়ক নয়। কেউ তো ভোটারের কাছেও যান না। আবার যিনি ভোটারের কাছে যান, তাকে প্রশ্ন করা হয়, আমার কাছে কেন এসেছেন? আপনারা নিয়ে নেবেন, অসুবিধে কী? খুবই খারাপ লাগে তখন।

তারা বলছেন, মানুষের কাছে যাওয়া, মানবিক সম্পর্ক গড়ে তোলা, তাদের মনের মণিকোঠায় স্থান লাভ করা—এগুলো থেকে আমরা অনেক দূরে চলে গেছি। আমরা কী পরিমাণ হাইব্রিড দিয়ে দেয়াল গড়ে তুলেছি ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত; থানায় যান, দেখবেন ফৌজদারি মামলা যা আছে, তার ৯৯ শতাংশ মামলার বাদী আওয়ামী লীগ, বিবাদীও আওয়ামী লীগ। চোখের সামনে বিরোধী দল নেই বলে এটা হয়েছে। আমরা গণসম্পৃক্ততা, গণসংযোগ বাড়াচ্ছি না, সংগঠন করছি না এবং এভাবেই গা ভাসিয়ে দিয়েছি—এটি দুর্ভাগ্যজনক। অথচ বাচ্চা ছেলেও এসে বলে কত ত্যাগ করেছি, কিছুই পাইনি। বয়স দেখলেই বোঝা যায় কী ত্যাগ করেছে সে।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে , ২০২২ সাল হবে দলের সম্মেলনের বছর। এ লক্ষ্য দলের সাংগঠনিক শক্তি বাড়ানো এবং বিভিন্ন কর্মসূচির ভেতর দিয়ে নেতা-কর্মীদের নির্বাচনের জন্য তৈরি করা। তাদের মতে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলটি এর মধ্যে তৃণমূল পর্যায়ে সম্মেলন শুরু করেছে। বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ শেষে আগামী ডিসেম্বরে ২২তম জাতীয় সম্মেলনের আগে তারা বিষয়টি গুটিয়ে আনতে চায়। অপরদিকে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে বিভিন্ন সংকট মোকাবিলা করে আসন্ন উপজেলা ও সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দিকেও নজর রেখেছে দলটি।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!