নিখোঁজের ৭ দিন পর গৃহবধূ মোহনা আক্তারকে নাটকীয়ভাবে চট্টগ্রাম থেকে উদ্ধার করেছে লক্ষ্মীপুরের পুলিশ। ওই গৃহবধূ এর পেছনে তার স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির ষড়যন্ত্রের কথা জানালেও পুলিশ বলছে, কাউকে কিছু না বলে তিনি চাকরি করার উদ্দেশ্যে চট্টগ্রামে চলে আসেন।
বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) রাতে অভিযান চালিয়ে চট্টগ্রাম নগরের পাহাড়তলী থানার ৯নং ওয়ার্ডের দুলাল হোসেন কলোনির একটি সেমিপাকা ঘর থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। পরে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ থানায় এনে মোহনাকে তার মা কামরুন নাহারের জিম্মায় দিয়ে দেয় পুলিশ। বর্তমানে ওই গৃহবধূ তার মায়ের জিম্মায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। কিন্তু ৭ দিন আগে মোহনা কিভাবে রামগঞ্জের সান্দানপুর স্বামীর বাড়ি থেকে চট্টগ্রামের পাহাড়তলী বাসস্ট্যান্ডে গেলেন— এ প্রশ্নের উত্তর এখনও অজানা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ইছাপুর ইউনিয়নের সান্দানপুর মসজিদ বাড়িতে স্বামীর ঘরে শ্বশুর-শাশুড়ি ও ননদকে নিয়ে ইফতার করতে বসেন গৃহবধূ মোহনা আক্তার। ইফতারের সময় শাশুড়ি রোকেয়া আক্তার স্টিলের গ্লাসে করে শরবত দেন তাকে। সেই শরবত পান করার কিছুক্ষণ পর মোহনার মাথা ঘুরতে শুরু করে। একপর্যায়ে রাত ৯টার দিকে মোহনা অসুস্থ হয়ে পড়লে তার মাকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানান।
পরে অবস্থার আরও অবনতি হতে থাকলে দ্বিতীয়বার মা কামরুন নাহারকে ফোন দিতে চাইলে তার শাশুড়ি মোহনার মোবাইল নিয়ে সিমকার্ড খুলে নিয়ে যায়। এরপর থেকে মোহনা পুরোপুরি অজ্ঞান হয়ে যান।
গৃহবধূ মোহনা আক্তার জানান, আমার স্বামী আবদুর রহমান, শ্বশুর আবুল খায়ের, শাশুড়ি রোকেয়া বেগম ও খালাতো দেবর ফয়সালের পরিকল্পনায় এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। ১৪ এপ্রিল রাতে অজ্ঞান হওয়ার পর ১৫ তারিখ বিকালে চট্টগ্রামের অলংকার বাসস্টান্ডে একজন অপরিচিত লোক আমাকে বাস থেকে নামিয়ে দেয়। এই ১৭ ঘণ্টা কী হয়েছিল আমার সঙ্গে, তার কিছু বলতে পারবো না। তবে ১৪ এপ্রিল রাত ১১টার পর যখন শরীর নিস্তেজ হয়ে আসে, তখন আমার খালাতো দেবর ফয়সালকে আমার শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে শলাপরামর্শ করতে শুনেছি। কিন্তু তখন আমি কথা বলার শক্তি পাচ্ছিলাম না।
রামগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ এমদাদুল হক জানান, মোবাইল কল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে চট্টগ্রামে গিয়ে মোহনাকে উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, গৃহবধূ মোহনা পরিবারের কারও কাছে কোনো ভরসা না পাওয়ায় চাকরি করার উদ্দেশ্যে চট্টগ্রামে চলে যায়। পরে মহিলা পুলিশসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করতে সক্ষম হই।
সিপি