বিমান এবার সরাসরি উড়বে চট্টগ্রাম-মদিনা-চট্টগ্রাম

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেছেন, বিমানের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সিভিল এভিয়েশনের দুর্নীতি বরদাশত করা হবে না। দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতি সবার জন্য প্রযোজ্য। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চট্টগ্রাম-মদিনা-চট্টগ্রাম রুটে সরাসরি ফ্লাইট উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিমানবহরে নতুন নতুন বিমান যুক্ত হচ্ছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের পতাকাবাহী শতাধিক উড়োজাহাজ করার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। নতুন উড়োজাহাজ ক্রয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের অগ্রগতির মেসেজ যাচ্ছে। চট্টগ্রাম থেকে পূর্বমুখি বন্ধ থাকা ফ্লাইট আবার চালু হবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ধর্মপ্রাণ। চট্টগ্রামের লোকজন আরও বেশি ধর্মপ্রাণ। অনেকে মধ্যপ্রাচ্যে ব্যবসা করেন। তারা হজ-ওমরা ও নবীজীর রওজা জেয়ারতে যান। তাদের সুবিধার্থে চট্টগ্রাম-মদিনা ফ্লাইট চালু হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া বিমান অতীতে লোকসানি প্রতিষ্ঠান ছিল। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটি আবার লাভের মুখ দেখছে। প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা, বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে উড়বে বাংলাদেশের পতাকা। যে জাতি যুদ্ধ জয় করতে পারে, তাদের পক্ষে বিমানকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা বিমানকে নাড়া দিতে পেরেছি।

তিনি বলেন, সৈয়দপুর বিমান বন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রূপ দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক ইচ্ছে। সে লক্ষ্যে কাজ চলছে। নভেম্বর থেকে শাহজালালে থার্ড টার্মিনালের কাজ শুরু হবে। প্রধানমন্ত্রী বিমানকে ভালোবাসেন। বিমান যাতে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে, সেজন্য আরও ৯ সিরিজের দুইটি ড্রিম লাইনার আসছে। এপ্রিল-জুনে ২৭৩ কোটি টাকা লাভ হয়েছে। জানুয়ারি থেকে বিমানবন্দরের চার্জ, বিপিসির পাওনা পরিশোধ করে আসছি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন, অর্থনীতিতে বাংলাদেশ বিমান বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। আমাদের এভিয়েশন সেক্টর এগিয়ে যাচ্ছে। বিমান লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হচ্ছে। বহুল প্রত্যাশিত পবিত্র ভূমি মদিনায় সরাসরি ফ্লাইট চালুর সেই মাহেন্দ্রক্ষণ আজ।

চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমান বন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এয়ারপোর্টে অনেক আন্তর্জাতিক ফ্লাইট আসছে। দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম। অর্থনৈতিক ও পর্যটনের বিষয়টি মাথায় রেখে বিমানবন্দরের আধুনিকায়ন হচ্ছে। শাহ আমানত বিমান বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির কাজ চলছে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. মোকাব্বির হোসেন বলেন, বিমান ৪৬ বছর আগে যাত্রা শুরু করে। আমাদের নিজস্ব ১০টি আধুনিক বিমান আছে। এর বাইরে ৬টি এয়ার ক্রাফট ভাড়ায় নেওয়া। ২৮ অক্টোবর ঢাকা-মদিনা ফ্লাইট চালু হয়েছে। চট্টগ্রাম-মদিনা-চট্টগ্রাম রুটে ফ্লাইট চালু হওয়ায় চট্টগ্রাম থেকে ব্যবসায়িক ও ধর্মীয় কারণে যারা মদিনা যান তারা উপকৃত হবেন।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম থেকে মধ্যপ্রাচ্যের ফ্লাইট সরাসরি যাচ্ছে। ঢাকা থেকে চেন্নাই, কলম্বো, গুয়াংজু ফ্লাইট চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। আরও দুইটি নতুন ড্রিমলাইনার ডিসেম্বরে যুক্ত হবে। তখন বাংলাদেশ বিমান নতুন নতুন গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনা করবে।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন বিমানের উপ-মহাব্যবস্থাপক (পিআর) তাহেরা খোন্দকার। উপস্থিত ছিলেন বিমানবন্দর ব্যবস্থাপক উইং কমান্ডার সারওয়ার ই জামান, কমডোর কামরুল হোসেন, বিমানের চট্টগ্রাম জেলা ব্যবস্থাপক মো. নাজমুল হাসান প্রমুখ।

উদ্বোধন হওয়া চট্টগ্রাম-মদিনা-চট্টগ্রাম ফ্লাইট সপ্তাহে প্রতি বৃহস্পতিবার চলবে। বৃহস্পতিবার উদ্বোধনী ফ্লাইটে ২৬৫ জন যাত্রী ছিল।

এএস/সিআর