চট্টগ্রাম থেকে গায়েব ২৭ কোটির রোলস রয়েস ঢাকায় ধরা

চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেডের জেড অ্যান্ড জেড ইনটিমেটস লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান যুক্তরাজ্য থেকে আমদানি করে ‘রোলস রয়েস’। ২৭ কোটি টাকার এই গাড়ি শুল্ক ফাঁকি দিয়ে বের করা হয় বন্দর থেকে। এরপর সেটি লুকিয়ে রাখা হয় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের এমডির ঢাকার গুলশানের বাসভবনে।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই বাসভবন থেকে শুল্ক গোয়েন্দার হাতে গাড়িটি মঙ্গলবার (৫ জুলাই) জব্দ হয়।

কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর জানায়, গাড়িটি গত ১৭ মে রাতে ইপিজেড থেকে অবৈধভাবে অপসারণ করে ঢাকার গুলশান নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের এমডির ঢাকার গুলশানের ওই বাসভবন থেকে গাড়িটি জব্দ করা হয়।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেডের প্লট- ১/৩ রোড-২ ( ফ্যাক্টরি বে এরিয়া)-তে অবস্থিত হংকং ও বাংলাদেশের যৌথ উদ্যাগে পরিচালিত জেড অ্যান্ড জেড ইনটিমেটস লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানটি। তারা প্রতিষ্ঠানের নামে গাড়িটি আনেন যুক্তরাজ্য থেকে।

পরে বিলাসবহুল ‘রোলস রয়েস’ গাড়িটি আমাদানি করে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে রেয়াতি সুবিধায় খালাস করে নেন। এর জন্য গত ২৭ এপ্রিল ওই প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে বিল অব এন্ট্রি নং-১২৩৭৯২ দাখিল করে। খালাস করে ৬৭৫০ সিসির ও কুলিনান এসইউভি, এমওয়াই-২০২১ মডেলের আমদানি করা ‘রোলস রয়েস’ গাড়িটি নিয়ে যাওয়া হয় ইপিজেডে। আমদানিকারক বেআইনি পন্থায় কাস্টমস শুল্কায়ন এবং শুল্ক কর পরিশোধ না করে তার ব্যক্তিগত গ্যারেজে লুকিয়ে রাখে গাড়িটি।

কাস্টমস অ্যাক্টের বিধান লঙ্ঘন করায় আমদানিকারকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর। জব্দ করা গাড়িটি ঢাকার কাস্টমস হাউসের শুল্ক গুদামে রাখা হয়েছে।

আরও জানা গেছে, গাড়িটি এসআরও সুবিধায় শুল্কমুক্ত আমদানি করা হয়েছে। গাড়ির বনেটে স্টিকার অনুযায়ী এটি ‘রোলস রয়েস মোটরকার’। যার সিসি-৬৭৫০ বলে শনাক্ত করেছে শুল্ক গোয়েন্দারা।

তবে এসআরও আইনের ১০১ ধারা অনুযায়ী, কাস্টমস ও মূসক মোতাবেক ২০০০ সিসি পর্যন্ত কার আমদানির জন্য শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রযোজ্য হয়। কিন্তু এর বেশি সিসি’র গাড়ি শতভাগ শুল্কযুক্ত। তবে রোলস রয়েস গাড়িটি ৬৭৫০ সিসির। তাই এটি শুল্কমুক্ত নয়। আর এই শুল্ক ফাঁকি দেওয়ায় সরকার ২৪ কোটি টাকা রাজস্ব হারায়।

কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর যুগ্ম পরিচালক মো. শামসুল আরেফিন খান বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর থেকে স্কট দিয়ে বের করে গাড়িটি প্রথমে ইপিজেড নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ইপিজেড থেকে ঢাকার গুলশান এলাকায় এনে লুকিয়ে রাখা হয়।সেখান থেকে আমরা গাড়িটি জব্দ করি। এতে ২৪ কোটি টাকা রাজস্বহানি হয়েছে।’

চট্টগ্রাম কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের ডেপুটি কমিশনার সোলতান মাহমুদ বলেন, ‘ওই গাড়িটি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ইপিজেডের প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু গাড়িটির শুল্ক কার্যক্রম এখনও সম্পন্ন হয়নি।’

এএস/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!