চট্টগ্রাম থেকেই আন্দোলনের আভাস দিলেন নোমান

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল নোমান পুলিশ ও প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বলেছেন, এই দিন শেষ দিন নয়, আরও দিন আছে। কাজেই আপনারা সাবধান, হুঁশিয়ার থাকুন। সরকারের ইন্টিলিজেন্সে যারা আছেন সরকারকে বলুন, খালেদা জিয়ার মুক্তি মানে দেশের শান্তি। আন্দোলন সংগ্রাম আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলন চলছে। আমাদের নেত্রীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার যে সংগ্রাম আমরা করছি তা ১২ ডিসেম্বরের অবস্থার প্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবো। আন্দোলন অতীতের মতো চট্টগ্রাম থেকেই শুরু হবে। আমাদের নেত্রী কারামুক্ত হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে দলীয় কার্যালয় নাসিমন ভবন মাঠে বিএনপি আয়োজিত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে কেন্দ্রীয় বিএনপি ঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

বিক্ষোভ সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় শ্রম বিষয়ক সম্পাদক এএম নাজিম উদ্দিন। সভাপতিত্ব করেন নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন।

আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, খালেদা জিয়াকে চট্টগ্রামের মানুষের পক্ষ থেকে দেশনেত্রী ঘোষণা দিয়েছিলাম আমি। আমি বলেছিলাম, খালেদা জিয়া শুধু জাতীয়তাবাদী দলের নেত্রী নন। এরশাদ গণতন্ত্র হরণ করেছে, গণতন্ত্র উদ্ধারে তিনি দলের সীমা ছাড়িয়ে জাতীয় নেতৃত্বে অধিষ্ঠিত হয়ে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি শেখ হাসিনাকে সাথে নিয়ে জাতীয় ঐক্য গঠন করে আন্দোলন করেছেন।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা নোমান আন্দোলন সংগ্রামের নেতা চিত্তরঞ্জন, জেএম সেনকে স্মরণ করে বলেন, শেখ মুজিব বঙ্গবন্ধু আখ্যায়িত হয়েছিলেন। আরও অনেক মনিষী যেমন সূর্যসেন, অনন্ত সিংহ, লোকনাথ বল এবং মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী দেশের জন্য, জনগণের জন্য কাজ করেছেন এবং তাঁরা আমৃত্যু আমাদের মাঝে কর্মের কারণে বেঁচে থাকবেন। ঠিক তেমনিভাবে তাঁদের সারিতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আমাদের মধ্যে আছেন, থাকবেন এবং সারা জীবন এদেশের মানুষ তাঁকে স্মরণ করবে। কারণ তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের জন্য নয়, দেশের মানুষের জন্য গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আছেন।

নোমান আরও বলেন, সরকারের নির্যাতন হিটলারের ফ্যাসিজমকেও ছাড়িয়ে গেছে। কথায় কথায় গুলি, গুম, খুন। কথায় কথায় নির্যাতনে মায়ের বুক খালি করা হচ্ছে। আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীকে হারিয়েছি। আমরা সংবিধান লঙ্ঘন করছি না, জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে সংবিধান পুনঃস্থাপনের সংগ্রাম করছি। জাতীয় ঐক্যের পূর্বশর্ত ঐক্যবদ্ধ বিএনপি। বিএনপির ঐক্য প্রতিষ্ঠা হবে তখন ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ হবে যখন। তিনি নেতাকর্মীদের আদর্শের সংগ্রামে থাকার আহবান জানান।

ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, বিএসএমইউ কর্তৃপক্ষ বেগম খালেদা জিয়ার মেডিকেল রিপোর্ট দিতে ব্যর্থ হয়েছে। আদালত অবমাননার দায়ে তাদের গ্রেফতার করা উচিত। প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক একটি বক্তব্যকে কোড করে ডা. শাহাদাত বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যদি কারাগারে রাজার হালে থাকেন। তাহলে সে আরাম আয়েশের জন্য প্রধানমন্ত্রীও তৈরি থাকুন। আপনিও জেলে রাজার হালে থাকবেন।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর বলেন, আইনী প্রক্রিয়ায় বিএনপি যখন সর্বোচ্চ আদালতের কাছে গিয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তির আবেদন নিয়ে কোর্টে যাচ্ছে বার বার। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার নানা টালবাহানা করে আইন আদালতকে ব্যবহার করে খালেদা জিয়ার জামিন প্রদানে বাধাগ্রস্ত করছে। যা দেশের মানুষ বুঝে গেছে। সরকার আর বেশি দিন এভাবে তাদের অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে পারবে না।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি এমএ আজিজ, এডভোকেট আবদুস সাত্তার, এসকে খোদা তোতন, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, যুগ্ম সম্পাদক কাজী বেলাল, ইয়াছিন চৌধুরী লিঠন, সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ইসলাম প্রমূখ।

এফএম/এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!