চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে ৩ বিদেশি ‘জুয়াড়ি’ আটক

নিরাপত্তার জাল গলে ওঠে পড়েন স্টেডিয়ামের রুফটপে

স্টেডিয়ামের পিচে বল কম ঘুরলেও দ্রুত আউট হয়ে যাবেন ব্যাটসম্যান অথবা ভালো ব্যাটিং করতে না পারলেও ব্যাটসম্যানকে দেয়া হবে বাজে বল, যাতে তিনি রানের ফুলঝুড়ি ফোটাতে পারেন। এভাবেই একটি ম্যাচের ফল ঘুরে যেতে পারে আন্তর্জাতিক জুয়াড়িদের ষড়যন্ত্রে। টাকার বিনিময়ে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ বা নিজেদের ইচ্ছামত ম্যাচ চালিয়ে টাকা আয়ের একটি পথ হচ্ছে বাজি। এবার এমনই তিন বিদেশী জুয়াড়িকে আটক করেছে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা।

শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজের টেস্ট ম্যাচ চলাকালীন দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে নগরীর পাহাড়তলি থানাধীন জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের রুফটপ থেকে সুনীল কুমার (৩৮), চ্যাটান শর্মা (৩৩), সানী ম্যাগু (৩২) নামে এই তিনজনকে আটক করা হয়।

তবে, ম্যাচে দর্শক বা বহিরাগত প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকলেও স্টেডিয়ামের ভেতরে তারা কিভাবে ঢুকল তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এতে করে স্টেডিয়ামের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও প্রশ্নবিদ্ধ বলে মন্তব্য করা হয়েছে।

পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান ইমাম দৈনিক চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন- ‘জুয়াড়ি সন্দেহে তিনজনকে আটক করা হয়েছে, তাদের সবকিছু পর্যালোচনা করা হচ্ছে, যদি জুয়ার সাথে তাদের কোন ধরণের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় তবে তাদের বিরুদ্ধে মামালা গঠন করা হবে।’

বিদেশী নাগরিকদের পাসপোর্ট ও জুয়ায় ব্যবহৃত কোন ধরনের আলামত পাওয়া গেছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন- ‘এখনো সব কিছু পর্যালোচনার অধীনে আছে, যদি অসংগতি থাকে তবে মামলা হবে।’

গ্রেপ্তার হওয়া ভারতীয়দের কাছে কিছু ভিডিও পাওয়া গেছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘তাদের কাছে জুয়া সংক্রান্ত তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। তবে মোবাইলে এ সংক্রান্ত কিছু ভিডিও পাওয়া গেছে। আমরা যাচাই-বাছাই করে দেখছি। তারা বৈধভাবে বাংলাদেশে এসেছে কিনা, এটাও দেখা হবে।’

বিসিবির ভেন্যু ম্যানেজার ফজলে বারী খান রুবেল দৈনিক চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন- ‘হ্যাঁ ওদের কে স্টেডিয়ামের হসপিটালিটি রুফটপ থেকে আটক করা হয়েছে।’ তারা কিভাবে মাঠে গেলো এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘প্রতিটা ম্যাচে কিছু সংখ্যক টিকিট আমাদের প্রশাসন,স্পন্সর যারা করে তাদের দিতে হয়, এখন জুয়াডিরা কাদের মাধ্যমে টিকিট সংগ্রহ করে বা কারা তাদের টিকিট দিয়ে মাঠে ঢুকিয়েছে তা টিকিট ম্যানেজমেন্ট কমিটিই বলতে পারবে আমি পারবো না।’

এ ঘটনায় বিসিব কোন তদন্ত করবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না আপাতত ওরকম কোন চিন্তা ভাবনা নেই, তবে সিকিউরিটি বিভাগ যদি চায় তারা তদন্ত করবে তাহলে করতে পারে, অন্যথায় পুলিশ যেভাবে এ্যাকশান নিবে সেভাবে মামলা চলবে।’

জানা যায়, গত এক মাস ধরে গোয়েন্দা নজরদারিতে ছিলো আন্তর্জাতিক মানের এই তিন জুয়াড়ি। মুলত দেশে চলমান টেস্ট ম্যাচের উপর জুয়া লাগাতে দেশে আসে তারা, কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রশাসনের কাছে আটক হয় এই।

বিএস/কেএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!