চট্টগ্রাম কারাগারে মৃত্যু দুই বন্দির, চন্দনাইশ থানার দিকে অভিযোগ এক বন্দির পরিবারের

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের দুই বন্দি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে এক ঘণ্টার ব্যবধানে হাসপাতালে মারা গেছে। তারা দুইজনই চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার বাসিন্দা।

তাদের মধ্যে রফিক উদ্দিনের (৪৫) বাড়ি চন্দনাইশের ধোপাছড়ি ইউনিয়নে। আর বাবুল মিয়া (৪০) ছিলেন হাছনদণ্ডীর বাসিন্দা। রফিক মারামারি এবং বাবুল মাদক মামলায় কারাগারে ছিলেন।

সোমবার (৪ এপ্রিল) ভোরে ঘণ্টাখানেকের ব্যবধানে দুইজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তারা মারা যান।

তাদের মধ্যে রফিককে চলতি বছরের ২৭ মার্চ এবং বাবুলকে গত বছরের ১৮ নভেম্বর কারাগারে পাঠানো হয়।

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার দেওয়ান মো. তারিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, রফিক ও বাবুল দুজনই চন্দনাইশ থানার আলাদা দুইটি মামলায় কারাগারে ছিলেন।

জেলার তারিকুল বলেন, ‘বাবুল রোজা রাখার জন্য সেহেরি খেয়েছিল। বিছানায় যাওয়ার পর বুকে ব্যথা অনুভব করার কথা জানান। আর রফিক অসুস্থতা অনুভব করায় তাকে কারা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।’

এদিকে রফিকের পরিবারের দাবি, ‘ধোপাছড়ির ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের নির্দেশে’ গত ২৬ মার্চ তার ওপর হামলা করে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা। হামলায় আহত হয়ে থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ তার মামলা না নিয়ে উল্টো তাকে আসামি করে কারাগারে পাঠায়। সেসময় থানায় রফিককে পুলিশ সদস্যরা মিলে আরও এক দফা মারধর করে রফিককে।

জানা গেছে, রফিকের সাথে ধোপাছড়ির চেয়ারম্যান আব্দুক আলিমের জায়গা-জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল।

রফিকের বড় ভাই জামাল উদ্দিন জানিয়েছেন, ‘ধোপাছড়ি ইউনিয়নের চিড়িংঘাটা এলাকায় পরিবার নিয়ে থাকতেন রফিক। গত ২৬ মার্চ সকালে তাদের চাচির জানাজা শেষে ফেরার পথে স্থানীয় ‘ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে’ রফিকের ওপর হামলা হয়। স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বিকেলে রফিক থানায় মামলা করতে যায়। কিন্তু পুলিশ তার মামলা না নিয়ে, অপর পক্ষের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখায়। ওই রাতে থানা হাজতে রাখার পর পরদিন কারাগারে পাঠানো হয় তাকে।’

জামাল বলেন, ‘হামলায় আহত হওয়ার পর রফিককে চিকিৎসা না দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। সেখানে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে রফিকের মৃত্যু হয়েছে।’

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘দুই পক্ষের মারামারির ঘটনায় আলাদা দুটি মামলা হয়েছিল। রফিকের মামলাও নেওয়া হয়েছে। অপর পক্ষের মামলায় তিনি আসামি হওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।’

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার বলেন, ‘রফিক হামলায় আহত হয়েছিলেন কিনা সেটা আমাদের জানা নেই। দুজনেরই ময়নাতদন্ত হবে। প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।’

এআরটি/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!