চট্টগ্রাম কলেজ ‘ছাত্রলীগ নেতা’ সাড়ে ৩ কোটি টাকার ইয়াবাসহ ধরা র‌্যাবের হাতে

কোনো পদে না থেকেও তিনি নিজের পরিচয় দিতেন ‘ছাত্রলীগ নেতা’ হিসেবে। চট্টগ্রাম কলেজ দাপিয়ে বেড়াতেন মিছিলের সামনে থেকে। রাজনৈতিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে থাকতেন সামনের সারিতে। তবে আড়ালে তিনি ছিলেন পাকা মাদকব্যবসায়ী। কথিত সেই ‘ছাত্রলীগ নেতা’র ঘরেই এবার পাওয়া গেল সোয়া এক লাখ পিস ইয়াবা— যার মূল্য প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা।

‘গুণধর’ এই যুবকের নাম ওয়াইজ উদ্দিন ওয়াজেদ। জানা গেছে, র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া ওয়াইজ উদ্দিন চট্টগ্রাম কলেজের ইতিহাস বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। তার সঙ্গে গ্রেপ্তার হয়েছেন ভগ্নিপতি রমিজ উদ্দিনও।

চট্টগ্রামের র‌্যাব-৭ সোমবার (৯ আগস্ট) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের পূর্ব উজানটিয়ায় এই অভিযান চালায়।

ওয়াজেদ নিজের পরিচয় দেন চট্টগ্রামে কলেজের ছাত্রলীগ নেতা হিসেবে।
ওয়াজেদ নিজের পরিচয় দেন চট্টগ্রামে কলেজের ছাত্রলীগ নেতা হিসেবে।

চট্টগ্রাম কলেজের কথিত সেই ‘ছাত্রলীগ নেতা’ ওয়াইজ উদ্দিন (২৪) পূর্ব উজানটিয়া এলাকার আবুল কালামের ছেলে এবং তার ভগ্নিপতি রমিজ উদ্দিন (৩৪) চকরিয়া উপজেলার বদরখালী ইউপির আবু তাহেরের ছেলে। ১ লাখ ১৬ হাজার ৩০০ ইয়াবাসহ এই দুজনকে আটক করে র‌্যাব-৭।

মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) র‌্যাব-৭ জানিয়েছে, গোপন সংবাদের মাধ্যমে তারা জানতে পারে কক্সবাজারের পেকুয়ার পূর্ব উজানটিয়া এলাকায় কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী মাদক বেচাকেনার উদ্দেশ্য নিয়ে অবস্থান করছে। এই খবর পেয়ে ৯ আগস্ট রাত সাড়ে ১০ টার দিকে র‌্যাব-৭ এর একটি দল ওই এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে সুকৌশলে পালানোর চেষ্টাকালে র‌্যাব সদস্যরা ধাওয়া করে রমিজ উদ্দিন ও ওয়াইজ উদ্দিনকে আটক করে।

পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে তাদের দেখানোমতে বসতঘরের ভেতর খাটের নিচে প্লাস্টিকের বস্তায় বিশেষ কায়দায় রাখা ১ লাখ ১৬ হাজার ৩০০ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা এসব মাদকের মূল্য প্রায় ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

চট্টগ্রাম কলেজ ‘ছাত্রলীগ নেতা’ সাড়ে ৩ কোটি টাকার ইয়াবাসহ ধরা র‌্যাবের হাতে 1

জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, তারা দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজার জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে পরবর্তীতে তা কক্সবাজারসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে আসছে।

গ্রেপ্তার ওয়াইজ উদ্দিন ওয়াজেদ চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুভাষ মল্লিক সবুজের অনুসারী বলে জানা যায়। অন্যদিকে তার পরিচিতি রয়েছে কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক এইচএম শওকতের অনুসারী হিসেবেও।

তবে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সবুজ বলেন, ‘লকডাউনে মধ্যে প্রায় দেড়-দুই বছর সে কোথায় ছিলো আমি জানি না। সে কোনো অনৈতিক কাজ করে থাকলে সেটার দায়ভারও আমার না।’

বিএস/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!