চট্টগ্রাম কলেজে ‘সবুজ গ্রুপের’ বহিরাগতের হামলায় রক্ত ঝড়ল—আহত ৭

করোনার ছুটির মধ্যেও আবারও সংঘর্ষে জড়ালো চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের দুই পক্ষ। বুধবার (১৬ জুন) দুপুর দেড়টায় কলেজ ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক সুভাষ মল্লিক সবুজের অনুসারীদের সাথে সভাপতি মাহমুদুল করিমের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষে মোট সাতজন আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন, ইংরেজী বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল সাইমুন, ডিগ্রী শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী আবদুল মালেক রুমি, গণিত বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবু তোরাব, একই বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শাফায়েত হোসেন রাজু, ইতিহাস বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সিরাজ, একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফয়সাল, বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শিমু।

এর মধ্যে সায়মুন ও রুমি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্রসহ একজনকে আটক করেছে। ঘটনার পর চকবাজার ও আশেপাশের এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।

জানা যায়, কলেজের হোস্টেল গেইটে সবুজ বহিরাগতের নিয়ে আড্ডা দেওয়ার সময় মাহামুদুল করিমের সমর্থক আবব্দুল মালেক রুমি, ইমন ও তোরাব নামে তিনজন কলেজে ঘুরতে যায়। সবুজ তাদেরকে দেখে কলেজে আসার কারণ জানতে চায়, এর মধ্যে কথা কাঁটাকাটির এক পর্যায়ে সবুজ রুমিকে থাপ্পর মারে এবং সবুজের সাথে থাকা ৪০-৫০ জন বহিরাগতদের তিনজনের উপর লেলিয়ে দেয়।

পরবর্তীতে মাহমুদুল করিম ও সায়মুনরা তিনজনকে বাঁচাতে গেলে তাদের উপরও হামলা করে সবুজের নেতৃত্বে বহিরাগতরা। কলেজ ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক সুভাষ মল্লিক সবুজ নূর মোস্তফা টিনুর ও সভাপতি মাহমুদুল করিম কেন্ত্রীয় যুবলীগের সাবেক উপ-অর্থ বিষয়ক সম্পাদক হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের অনুসারী।

এই ঘটনার পর চকবাজার এলাকায় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মাহমুদের অনুসারীরা সাদিয়াস কিচেনের সামনে জমায়েত হয়েছে, অন্যদিকে নুর মোস্তফা টিনুর গ্রুপের সবুজের অনুসারীরা মতি টাওয়ারের সামনে অবস্থান করছে।

চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিম বলেন, সবুজ বহিরাগতদের নিয়ে কলেজ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করেছে, এতে আমাদের তিন কর্মী আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে। সবুজের থেকে এরকম ন্যাক্কারজনক ঘটনা আশা করিনি।

মাহমুদ অভিযোগ করেন, একাধিক মামলার আসামি চকবাজারের কুখ্যাত চাঁদাবাজ ও মাদক ব্যাবসায়ী টিনুর সহযোগী আমির হোসেন, সৌরভ উদ্দিন বাপ্পা, মন্টি সহ আরো ৪০ জনের একটি বহিরাগতের গ্রুপ কলেজ ছাত্রদের উপর হামলা করেছে।

এ ব্যাপারে চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। চকবাজার থানার ডিউটি অফিসার বলেন, সামান্য বিষয়ে এ সংঘর্ষ হয়েছে, বর্তমানে পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। এখনো পর্যন্ত থানায় কেউ মামলা করতে আসেনি।

এ ঘটনায় সৌরভ সাহা নামে এক বহিরাগতকে ধারালো অস্ত্রসহ পুলিশ আটক করেছে বলে জানান ডিউটি অফিসার।

চমেক পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই শীলব্রত বড়ুয়া জানান, চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্রদের উপর বহিরাগতদের হামলায় কলেজের তিন ছাত্র মেডিকেলে আসে। এরমধ্যে একজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে এবং বাকি দুইজনকে হাসপাতালের ক্যাজুয়ালিটি বিভাগে ভর্তি করানো হয়েছে।

বিএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!