চট্টগ্রাম ওয়াসার ভাণ্ডালজুড়ি প্রকল্প দুর্নীতিমুক্ত থাকবে, আশা বোর্ড মেম্বারের

চট্টগ্রাম ওয়াসার ভাণ্ডালজুড়ি পানি সরবরাহ প্রকল্পে কাজের জন্য কোরিয়ান প্রতিষ্ঠান তাইইয়ং ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি সই হয়েছে। সোমবার (১৫ জুলাই) নগরীর হোটেল রেডিসন ব্লুতে এ সংক্রান্ত চুক্তি সই করা হয়।

সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুরে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ওয়াসার বোর্ড সদস্য ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম মহাসচিব মহসীন কাজী, চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ, উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক (প্রশাসন) গোলাম হোসেন, কাউন্সিলর আবিদা আজাদ এবং প্রকৌশলী জাফর আহমদ সাদিক, কোরিয়ার তাইইয়ং ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেডের প্রকল্প পরিচালক মি. লিং এবং টিম লিডার পার্ক যে ইয়াং।

২০১১ সালে প্রস্তাবিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনায় (ডিপিপি) ভাণ্ডালজুড়ি পানি সরবরাহ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় এক হাজার ৩৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা। ২০১৬ সালের ৫ জানুয়ারি একনেকে অনুমোদন পায় প্রকল্পটি। মেয়াদ ধরা হয় ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। তবে শুরু থেকে ভূমি জটিলতায় প্রকল্পের কাজ আটকে যায়। অনুমোদনের তিন বছর পরেও কাজ শুরু করা যায়নি প্রকল্পের। অন্যদিকে কাজ শুরু আগেই নতুনভাবে প্রকল্প ব্যয় বাড়িয়ে এক হাজার ৩৭৩ কোটি ৮০ লাখ করার প্রস্তাব করা হয়। গত ২৪ এপ্রিল ওয়াসার বোর্ড সভায় প্রস্তাবটি অনুমোদন দেওয়া হয়।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে উদ্দেশ্য করে মহসীন কাজী একথা বলেন। তিনি বলেন, ‘এ প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় সর্বোচ্চ মাননিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এখানে কোনও অনিয়ম দুর্নীতি করা যাবে না। রডের বদলে বাঁশ দেওয়া যাবে না। পানির সঞ্চালন লাইন থেকে শুরু করে সব কাজেই শতভাগ পেশাদারিত্ব ও মান বজায় রাখতে হবে। আমি চাই চট্টগ্রাম ওয়াসার ইতিহাসে ভাণ্ডালজুড়ি প্রকল্পটি একটি মডেল প্রকল্প হিসেবে পরিচিত পাক।’

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম ওয়াসার ভাণ্ডালজুড়ি পানি সরবরাহ প্রকল্পে দৈনিক ৬ কোটি লিটার পানি শোধন করা হবে। এই প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ১২৬ কেটি ৯ লক্ষ ১২ হাজার টাকা। যার মধ্যে দাতা সংস্থা কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংক দেবে ৮২৪ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা, বাংলাদেশ সরকার দেবে ১ হাজার ২৮১ কোটি ৫৯ লক্ষ ১২ হাজার টাকা ও চট্টগ্রাম ওয়াসা দেবে ২০ কোটি টাকা।

ওয়াসার তথ্যমতে, প্রকল্পের আওতায় দৈনিক ৬০ মিলিয়ন লিটার ক্ষমতাসম্পন্ন পানি শোধনাগার, কনভয়েন্স, ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন পাইপলাইন এবং দুটি রিজার্ভার নির্মাণ করা হবে। এজন্য প্রায় ৫০ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে। এর মধ্যে শোধনাগার নির্মাণের জন্য লাগবে প্রায় ৪১ একর জায়গা। পাশাপাশি বাকি জায়গা রিজার্ভার ও পাইপলাইন বসাতে ব্যবহার করা হবে।

প্রকল্পে কোরিয়ান সরকারের ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট অব কো-অপারেশন ফান্ডের (কেইডিসিএফ) পক্ষে কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংক ও সরকার এবং চট্টগ্রাম ওয়াসা অর্থায়ন করছে। তবে দাতা সংস্থার শর্ত ছিল, দক্ষিণ কোরিয়ার কোনো প্রতিষ্ঠানকে ঠিকাদার নিয়োগ দিতে হবে। মূলত, দক্ষিণ চট্টগ্রামে পানি সরবরাহের জন্য ভাণ্ডালজুড়ি পানি সরবরাহ প্রকল্পটি হাতে নেয় ওয়াসা। পাশাপাশি কর্ণফুলী নদীর তীরে গড়ে ওঠা শিল্প-কারখানাগুলোতে এখান থেকে পানি সরবরাহ করা হবে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!