চট্টগ্রাম ওয়াসার পানির দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিল না করলে আন্দোলন

চট্টগ্রাম ওয়াসার পানির দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিল না করলে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রাম গণ-অধিকার ফোরাম নামের একটি সংগঠন। ওয়াসা কর্তৃপক্ষের পানির ৬২ শতাংশ দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ, নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে অবিলম্বে এই গণবিরোধী মানুষ মারার সিদ্ধান্ত বাতিলের জোর দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। বুধবার (২১ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ।

প্রসঙ্গত, ওয়াসা গত ৯ আগস্ট প্রতি ইউনিট (১০০০ লিটার) পানির দাম আবাসিক সংযোগে ৯ টাকা ৯২ পয়সার স্থলে ১৬ টাকা ও বাণিজ্যিক সংযোগে ২৭ টাকা ৫৬ পয়সার স্থলে ৪০ টাকা নির্ধারণ করেছে। অর্থাৎ প্রায় ৬২ শতাংশ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওয়াসা গত জানুয়ারি মাসেও ৫ শতাংশ পানির দাম বৃদ্ধি করেছিল।

ফোরামের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এবং মহাসচিব এমএ হাশেম রাজু বিবৃতিতে বলেন, ‘ওয়াসা কর্তৃপক্ষের আইন ১৯৯৬ এর ২২ ধারা অনুযায়ী ওয়াসা এক বছরে মোট ৫ শতাংশ হারে পানির দাম বাড়াতে পারে। ফলে জানুয়ারিতে ৫ শতাংশ হারে বাড়ানোর পর ৬ মাসের ব্যবধানে পানির দাম প্রায় ৬২ শতাংশ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত ওয়াসা কর্তৃপক্ষের আইন বিরোধী। ওয়াসাকে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের প্রয়োজন পড়বে।’

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ দাবি করেন, সম্প্রতি স্থানীয় সরকার বিভাগের মন্ত্রী তাজুল ইসলাম ওয়াসাকে পানির দাম বাড়াতে বলার পরই এ গণবিরোধী ঘোষণা আসায় ধারণা করা যায় সরকার এই দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বহাল রাখার জন্য পাঁয়তারা করতেছে। গত ৭ বছরে ওয়াসা ৭ দফা পানির দাম বাড়িয়েছে। অথচ ওয়াসার সেবার মান বাড়াতো দুরের কথা, আগে যা ছিল এখন সে মানটুকুও নেই বললেই চলে। সেবার মান বৃদ্ধির দিকে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ নজর না দিয়ে গ্রাহকের ঘাড়েই মূল্যবৃদ্ধির বোঝা তুলে দিয়েছে।’

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সিস্টেম লসের কারণে প্রতিমাসে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ আড়াই কোটি টাকা রাজস্ব বঞ্চিত হয়। শিল্প কলকারখানাসহ বিভিন্ন গ্রাহকের কাছে প্রায় ৮১ কোটি টাকা বকেয়া পড়ে আছে। ওই রাজস্ব বকেয়া আদায় করাসহ সিস্টেম লসের নামে চুরি, দুর্নীতি, লিকেজের কারণে অপচয় বন্ধের উদ্যোগ নিলে দাম বৃদ্ধির কোন প্রয়োজন হয় না। ওয়াসা কোন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নয়, জনগণের করের টাকায় গড়ে উঠা সেবামূলক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। তাকে জনস্বার্থেই পরিচালনা করতে হবে। পানির দাম বৃদ্ধির ফলে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, বাসা ভাড়া বৃদ্ধিসহ জনগণের কাধে আরেক দফা মূল্যবৃদ্ধির বোঝা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ চাপিয়ে দিচ্ছে। যা কোনভাবে মেনে নেওয়া যায় না।

চট্টগ্রাম ওয়াসার পানির দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিল না করলে ৬০ লাখ নগরবাসীকে নিয়ে অচিরেই চট্টগ্রাম গণ-অধিকার ফোরামের পক্ষ থেকে গণ আন্দোলনের মাধ্যমে এই অবৈধ সিদ্ধান্ত রুখে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয় বিবৃতিতে।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে বার বার যোগাযোগ করা হলেও মুঠোফোন রিসিভ করেন নি চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহ।

এমএ/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!