চট্টগ্রাম ওয়াসার দুই প্রকল্পে কেন মন্থর গতি, জবাব চাইলেন ক্ষুব্ধ মন্ত্রী

চট্টগ্রাম ওয়াসা গৃহীত সুপেয় পানি সরবরাহ সংক্রান্ত দুটি প্রকল্পের মন্থরগতিতে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। রোববার (২১ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও চারটি ওয়াসার ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি পর্যালোচনা সভায় ওই দুটি প্রকল্পের মন্থর গতির কারণ জানতে চেয়েছেন মন্ত্রী।

সভায় চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী এয়াকুব সিরাজউদ্দৌলা এবং উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

দুটি প্রকল্পের মন্থর গতির কারণে মন্ত্রীর ক্ষোভ প্রকাশ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী এয়াকুব সিরাজউদ্দৌলা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘ওই দুই প্রকল্পের মন্থর গতির বিষয়টি ঠিক নয়। কাজ শুরু হলে ঠিক হয়ে যাবে। এটা আমরা মন্ত্রীকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছি।’

২০১৮-১৯ অর্থবছরে চট্টগ্রাম ওয়াসার মন্থর অগ্রগতিসম্পন্ন প্রকল্প দুটি হল ভাণ্ডালজুড়ি পানি সরবরাহ প্রকল্প এবং চট্টগ্রাম মহানগরীর পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা স্থাপন (প্রথম পর্যায়) প্রকল্প। এর মধ্যে ২০১১ সালে প্রস্তাবিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনায় (ডিপিপি) ভাণ্ডালজুড়ি পানি সরবরাহ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় এক হাজার ৩৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

২০১৬ সালের ৫ জানুয়ারি একনেকে অনুমোদন পায় প্রকল্পটি। মেয়াদ ধরা হয় ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। কাজ শুরুর আগেই নতুনভাবে প্রকল্প ব্যয় বাড়িয়ে এক হাজার ৩৭৩ কোটি ৮০ লাখ করার প্রস্তাব করা হয়। গত ২৪ এপ্রিল ওয়াসার বোর্ড সভায় প্রস্তাবটি অনুমোদন দেওয়া হয়।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম মহানগরীর পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা স্থাপন (প্রথম পর্যায়) প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে তিন হাজার ৮০৮ কোটি টাকা। বর্তমানে এই প্রকল্পের কারিগরি উপদেষ্টা নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

রোববার (২১ জুলাই) জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে অনুসভায় সভাপতির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়ার সময় কাঙ্খিত সুবিধাগুলোর পাশাপাশি সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জগুলোও বিবেচনায় রাখতে হবে; যাতে যথাসময়ে এবং যথাযথভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হয়।’

এ সময় মন্ত্রী কিছু প্রকল্পগুলো কেন কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি তা সংশ্লিষ্টদের কাছে জানতে চান এবং প্রকল্পগুলোর কাজে গতি আনতে প্রকল্প পরিচালক ও সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।

সভায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের চারটি, ঢাকা ওয়াসার পাঁচটি, চট্টগ্রাম ওয়াসার দুটি, খুলনা ওয়াসার একটি এবং রাজশাহী ওয়াসার একটি প্রকল্পকে মন্থর অগ্রগতিসম্পন্ন প্রকল্প হিসেবে চিহ্নিত করা হয়; যার সবগুলোই সুপেয় পানি সরবরাহ সংক্রান্ত প্রকল্প।

মন্ত্রী আরো বলেন, ‘সবাই দেশের কথা চিন্তা করে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করলে যে কোন প্রকল্প যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা সহজ হবে। পানি মানুষের অন্যতম মৌলিক অধিকার। কাজেই পানি সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলো নিয়ে অবহেলার কোন সুযোগ নেই।’

সভায় স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদসহ মন্ত্রণালয় ও সংস্থার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এমএ/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!