চট্টগ্রাম এনআইডি জালিয়াতি করে টাকা আত্মসাৎ, চেয়ারম্যান-সার্ভেয়ারসহ মামলার জালে ৯ জন

জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) জালিয়াতি করে ভূমি অধিগ্রহণের টাকা আত্মসাৎ করায় সার্ভেয়ার, আইনজীবীর, উপজেলা চেয়াম্যানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের এক ভুক্তভোগী। তারা আত্মসাৎ করা টাকার প্রায় ৮০ শতাংশ ফেরত দেওয়ার আশ্বাসও দেন ভুক্তভোগীকে। কিন্তু পুরো টাকা না দেওয়ায় মামলা করেন ওই ভুক্তভোগী।

রোববার (৯ এপ্রিল) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়ের দেবের আদালতে এই মামলা দায়ের করেন। বিচারক মামলা আবেদন গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার আইনজীবী মানস দাশ।

মামলায় অভিযুক্তরা হলেন মিরসরাইয়ের মগাদিয়া জাফরাবাদ সারেং বাড়ির মৃত সফিউল্লাহ ওরফে সফিউল আলমের ছেলে আবুল খায়ের (৪৫), তার মা নাছিমা বেগম (৫৮), ছোট ভাই নজরুল ইসলাম (৩৭) এবং মনিরুল ইসলাম (৪১), সার্ভেয়ার আবদুর রব (৩৮), হেফাজত শহীদ (৩৬), মগাদিয়া এলএ শাখায় কর্মরত গোবিন্দ বণিক (৪১), আইনজীবী এজিপি মো. মোশারফ হোসেন (৪০) ও মিরসরাই ১১ নম্বর মঘাদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর হোসাইন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ২ জুলাই মিরসরাই পশ্চিম ইছাখালী মৌজার ৮০ শতক জমির মালিকের জাতীয় পরিচয়পত্র জালিয়াতি করে ভূমি অধিগ্রহণের ১৪ লাখ ৬১ হাজার ৪৫১ টাকা আত্মসাৎ করে অভিযুক্তরা। এর আগে একই বছরের ২৯ জানুয়ারি অধিগ্রহণ করা জমির ক্ষতিপূরণের টাকা আদায়ে জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ (এলএ) শাখা বরাবর আবেদন করেন ভুক্তভোগী। আবেদন গ্রহণ করলেও এই টাকা কবে দেওয়া হবে তা নিশ্চিত করেনি এলএ শাখার সার্ভেয়ার আব্দুর রব।

চলতি বছরের ৫ মার্চ যোগাযোগ করলে ভুক্তভোগী জানতে পারে, আবুল খায়ের নামে ব্যক্তি অধিগ্রহণের টাকাসহ মোট ৩০ লাখ ৪১ হাজার ৬৪৫ টাকার চেক নিয়ে গেছে। পরে আরও জানতে পারেন, ভুয়া ওয়ারিশ সনদ ও জাতীয় পরিচয় ত্র ব্যবহার করে অভযুক্তরা মিলে এই কাজ করে।

ভুক্তভোগী নূর উদ্দিন বলেন, ‘১৬০ শতক জমির মালিক আমার শ্বশুর মো. আহমেদের রহমান এবং মেহেদী হাসান। এর মধ্যে ৮০ শতক আহমেদের রহমানের। তিনি প্রবাসী হওয়ায় আমাকে আমমোক্তারনামা মূলে এই জমি অধিগ্রহণের টাকা উত্তোলনের দায়িত্ব দেন। এর আগে মৃত সফিউল্লাহ থেকে আব্দুল খালেক নামজারি করে এই জমি ক্রয় করেন। পরে আমার শ্বশুর আহমেদের রহমানে কাছে বিক্রয় করেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘অধিগ্রহণের টাকা তুলে নিয়ে যাওয়া আবুল খায়েরের মাতার নাম নাছিমা বেগম হলেও ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্রে হুনাদন বেগম উল্লেখ করা হয়। তাছাড়া তার বাড়ি ৬ নম্বর ইসাখালী ইউপিতে।’

তিনি বলেন, ‘এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে, আইনজীবী মোশারফ, গোবিন্দ বণিক ও হেফাজত হোসেন আমার সঙ্গে চুক্তিতে আসেন। আমার পাওনা সাড়ে ১৪ লাখ টাকার বেশি হলেও তারা আমাকে ১১ লাখ ৮০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ নিয়ে দেওয়ার ভরসা দিয়ে আপোষনামা করেন। এর মধ্যে চার লাখ টাকা নগদ ও এক লাখ টাকার চেক দেন। কিন্তু বাকি টাকার জন্য তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে আজ না হয় কাল দেবে বলে কালক্ষেপণ করতে থাকে। পরে ই বিষয়ে নগরের কোতোয়ালী থানায় মামলা করতে গেলে তারা আদালতের মামলা করতে বলেন।’

আরএস/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!