চট্টগ্রাম উন্নয়ন ভাবনা নিয়ে দৃষ্টির জাতীয় উৎসবে প্রান্তবন্ত বিতর্ক

‘যুক্তি আছে বচনে, যুক্তি আছে বিশ্বাসে নতুন স্বপ্নের উল্লাসে, দৃষ্টি এখন ত্রিশে’— এই স্লোগান ধারণ করে ৩০ বছর পূর্তিতে দৃষ্টি চট্টগ্রাম আয়োজনে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের বুকে আয়োজিত মার্কস দৃষ্টি ৭ম জাতীয় বিতর্ক উৎসব সমাপনী ও সম্মননা অনুষ্ঠান শুক্রবার (২৭ মে) শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন ভাবনা নিয়ে দৃষ্টির জাতীয় উৎসবে প্রান্তবন্ত বিতর্ক 1

উৎসবের দ্বিতীয় দিনে প্রান্তবন্ত বিতর্কের মধ্যে ছিলো চট্টগ্রামের উন্নয়ন নিয়ে পলিসি ডিবেট। বিতর্কের বিষয় : স্বাধীনতার ৫০বছরেও চট্টগ্রামকে আধুনিক বন্দর নগরীতে পরিণত করতে ব্যর্থ। সংস্কৃতি কর্মি ও ব্যাংকার মোহাম্মদ রোসাঙ্গীরের সভাপতিত্বে এই বিতর্কে অংশগ্রহণ করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদুল আলম সুজন, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ডা. আবদুর নূর তুষার, নগর পরিকল্পনাবিদ দেলোয়ার হেেেসন মজুমদার ও কনফিডেন্স সিমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জহির উদ্দিন।

বিতর্ক করতে গিয়ে ডা. আবদুন নূর তুষার বলেন, আধুনিক বন্দর নগরীতে থাকা উচিত পর্যটকদের জন্য উপযুক্ত আবাসন ও স্বাস্থ্য ব্যাবস্থা, আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা, সাথে উন্নত ও উপযুক্ত বর্জ্য-পয়ঃনিষ্কাশন ব্যাবস্থা। চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষার পাশাপাশি উপযুক্ত চিকিৎসা, সড়ক ও আবাসন ব্যবস্থা তৈরি করতে প্রয়োজন সদিচ্ছা ও ঐক্যমত।

জহির উদ্দিন আহমেদ বলেন, চট্টগ্রাম এই উপমহাদেশের খুবই গুরত্বপূর্ণ অ ল। তাই চট্টগ্রামের উন্নয়ন নিয়ে কথা বলা, মনে উপমহাদেশ এর অর্থনীতি নিয়ে কথা বলা। বে-টার্মিনাল, গভীর সমুদ্র বন্দর এই ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নের পাশাপাশি, আয়ের সাথে সঙ্গতি রেখে বসবাস ব্যাবস্থা গড়ে তুলতে হবে।

দেলোয়ার হোসেন মজুমদার বলেন, আমাদের সর্বগ্রাসী মনোভাব চট্টগ্রামকে নষ্ট করে ফেলছে। নগরের নাগরিকদের সচেতন ও দায়িত্ববান হতে হবে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন সাবেক প্রশাসক খোরশেদুল আলম সুজন বলেন, ঐতিহাসিকভাবে চট্টগ্রাম একটি গুরুত্বপূর্ন শহর। সমন্বিত উন্নয়ন ছাড়া এই শহরের আধুনিকায়ন সম্ভব নয়।

বিতর্ক শেষে দৃষ্টি চট্টগ্রামের সভাপতি মাসুদ বকুলের সভাপতিত্বে উৎসব সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক ও দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক।

বক্তব্য রাখেন দৃষ্টি চট্টগ্রামের সিনিয়র সহ সভাপতি সাইফ চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আদনান মান্নান, দৃষ্টির সহ সভাপতি শহিদুল ইসলাম, মুজিবুর রহমান মনি, সাধারণ সম্পাদক সাবের শাহ, যুগ্ম সম্পাদক সাইফুদ্দিন মুন্না, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী আরফাত, দপ্তর সম্পাদক মুন্না মজুমদার।

অনুষ্ঠানে দৃষ্টি চট্টগ্রামের সদস্য ‘বাংলাদেশের আয়রনম্যান’ খ্যাত শামসুজ্জামান আরাফাতকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। এর আগে শামসুজ্জামান আরাফাত এর এক প্রাণবন্ত আড্ডায় শিক্ষার্থীদেও বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক বলেন, বিতর্ক মানুষকে সুচিন্তাবিদ হিসেবে গড়ে তোলে। সকলকে নিজের লক্ষ্যের জন্য চেষ্টা করে যেতে হবে। মা বাবা শিক্ষকদের সম্মান করে তাদের মেনে চলতে হবে।

উৎসবের দ্বিতীয় দিনে পলিসি বিতর্ক ছাড়াও অনুষ্ঠিত হয় বেলুন বিতর্ক, সংসদীয় বিতর্ক, বারোয়ারি বিতর্ক, প্ল্যানচেট বিতর্ক, জুটি বিতর্ক। এই সকল বিতর্কে সভাপতিত্ব করেন কর্পোরেট ব্যক্তিত্ব তানভীর শাহরিয়ার রিমন, ব্যাংকার সাইফ চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আদনান মান্নান, কবি ও সাংবাদিক কামরুল হাসান বাদল, লেখক রোকসানা বন্যা।

উৎসবে সর্বোচ্চ অংশগ্রহণের জন্য ইউএসটিসি ফার্মা ডিবেটিং ক্লাব ও অংকুর সোসাইটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পুরষ্কার দেওয়া হয়।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!