চট্টগ্রাম আবাহনীর কাছে নাকাল মোহামেডান, ৯ উইকেটে হার

চট্টগ্রাম আবাহনীর কাছে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের নাকাল অবস্থা দেখে মনেই হয়নি এক সময় এই দুটি দলের মধ্যে ছিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বিতা। ক্রীড়াঙ্গনে আবাহনী-মোহামেডানের সেই দ্বৈরথ বহু পুরনো। চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগের দ্বিতীয় রাউন্ডের প্রথম ম্যাচে আবাহনীর সাথে কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় করতে পারেনি মোহামেডান। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন চট্টগ্রাম আবাহনীর কাছে হেরেছে বড় ব্যবধানে।

মোহামেডানের দেয়া ১৬৬ রানের লক্ষ্য চট্টগ্রাম আবাহনী পাড়ি দেয় ঝড়ের গতিতে। মাত্র ২৩.৩ ওভারেই ৯ উইকেট ঝুলিতে রেখে টানা দ্বিতীয় ম্যাচ জিতে নেয় আবাহনী। অন্যদিকে, মোহামেডানের এটি টানা দ্বিতীয় হার।

শনিবার (২৯ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয় মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। আবাহনীর দুই ওপেনিং বোলার মনিরুজ্জামান ও সাজ্জাদুল হক রিপনের ওপর শুরু থেকেই চড়াও হয়ে ইনিংসের সূচনা করেন মোহামেডানের দুই ওপেনার ইসরাত হোসেন সাব্বির ও ইশতিয়াক হোসাইন। এ দু’জন ৪.৫ ওভারে ৩৬ রানের জুটি এনে দেন দলকে। কিন্তু চট্টগ্রাম আবাহনী পেস অ্যাটাক বন্ধ করে দিয়ে দ্রুতই স্পিন আক্রমণ শুরু করলে খেয় হারাতে শুরু করে মোহামেডান।

নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকা মোহামেডান এক পর্যায়ে ৮৩ রানেই হারিয়ে ফেলে ৬ উইকেট। আউট হওয়া ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সাব্বির ২০ বলে ২২, ইশতিয়াক ২৯ বলে ২১, তানভীর ৪, রবিউল ৬, শরীফ ৬ এবং দলীয় অধিনায়ক ফরহাদ হোসেন ২৬ বলে ১১ রান করেন।

এরপর সাত ও আট নম্বর ব্যাটসম্যান তানভির সাদাত কিং ও বিশাল চৌধুরী মোহামেডানের ইনিংসের হাল ধরেন। এ দুজন ৫৮ রানের জুটি গড়ে দলের রান নিয়ে যান ১৪১-এ। হাতখোলে খেলতে থাকা বিশাল চৌধুরী জাহিদ জাবেদের একমাত্র শিকারে পরিণত হয়ে আউট হয়ে যান ৪৫ রানে। তার ৫৯ বলের ইনিংসটি সাজানো ছিল ৩টি করে চার আর ছয়ে। বিশালের বিদায়ের পর দ্রুত বিদায় নেন লিমন (৫ রান) ও সাকলাইন সজীবও (১ রান)। তবে অন্যপ্রান্তে চেষ্টা চালিয়ে যান কিং। দলের শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে কিং খেলেন ৭৪ বলে ২ চার আর ১ ছয়ে সাজানো ৩৭ রানের ইনিংস।

চট্টগ্রাম আবাহনীর স্পিন ভেল্কিতে নেতৃত্ব দেন রায়হান উদ্দিন। তিনি ৯ ওভার বল করে মাত্র ১৮ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। তার সাথে যোগ দেন শোয়েবও। তিনি ৮ ওভারে ১৬ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট। তাজুল ইসলাম ৩ উইকেট শিকার করেন ৪১ রান খরচায়। হান্নানের ২ উইকেটের জন্য রান ব্যয় করতে হয় ২২টি।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে চট্টগ্রাম আবাহনীকে ঝোড়ো সূচনা এনে দেন সেরাজ ফোর এইচ স্পোর্টস অ্যাকাডেমির দুই ওপেনার তাজুল ইসলাম ও সাইদুল ইসলাম সান্জু। পাওয়ার প্লে’র প্রথম ১০ ওভারেই তারা দলের ভান্ডারে জমা করেন ৬১ রান। পায়ে আঘাত পাওয়ার পরও খেলা চালিয়ে যাওয়া সানজু যখন ৩৩ বলে ২১ রান করে আউট হন তখন দলের রান ১৩.৫ ওভারে ৮৬! সান্জু কিছুটা রয়েসয়ে খেললেও অপর ওপেনার তাজুল ছিলেন পুরোটায় আক্রমণাত্মক। মোহামেডানের বোলারদের নির্দয়ভাবে পিটিয়ে ৭৭ বলে ৮৮ রানের ম্যাচ জয়ী ইনিংস খেলেন। তার ইনিংসটি সাজানো ছিল এক ডজন চার ও ৩টি ছক্কায়। আগের ম্যাচের জয়ের নায়ক যুব বিশ্বকাপজয়ী তরুণ তুর্কী শাহাদাত হোসেন দিপু ৩১ বল খেলে ৫ চার আর গ্যালারিতে পাঠানো ১ ছয়ে অপরাজিত ছিলেন ৩৯ রানে। মোহামেডানের হয়ে সাকলাইন সজীব একমাত্র উইকটটি দখল করেন।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!