চট্টগ্রাম আদালতে এই প্রথম নেওয়া হলো দোভাষী দিয়ে বাক প্রতিবন্ধীর জবানবন্দি

‘সেদিন বিকালে গাউছিয়া খেলার মাঠে বন্ধুদের সঙ্গে খেলার সময় বেলাল আমাকে বাগানে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে আমার হাত-পা বেঁধে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় আমি যতটা সম্ভব সজোরে চিৎকার করার চেষ্টা করেছিলাম। আমার বন্ধুরা এগিয়ে আসার কারণে সে পালিয়ে যায়।’

এভাবেই বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু (বাক প্রতিবন্ধী) ধর্ষণচেষ্টা মামলায় দোভাষীর মাধ্যমে পাহাড়তলী এলাকার ভাসমান আসামি বেলালের বিরুদ্ধে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন ১২ বছর বয়সী ভিকটিম এক শিশু।

বুধবার (১৮ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম ৬ষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ রহমানের আদালতে এই জবানবন্দি নেওয়া হয়।

আসামি মো. বেলাল (২১) মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী জানান, দোভাষী না পাওয়ায় অনেকদিন ধরে বাকপ্রতিবন্ধী ভিকটিম শিশুর জবানবন্দি নেওয়া সম্ভব হয়নি। বুধবার এক দোভাষীর মাধ্যমে আদালতে তার জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, ২০২২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর নগরের পাহাড়তলী থানার দক্ষিণ কাট্টলী বশির শাহ মাজার এলাকার গাউছিয়া খেলার মাঠে বন্ধুদের সঙ্গে খেলছিল ভিকটিম শিশুটি। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে নির্জনতার সুযোগে বাক প্রতিবন্ধী মেয়ে শিশুটিকে মাঠের দক্ষিণ দিকে লাউ ক্ষেতে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন বেলাল। এ সময় শিশুটির চিৎকার শুনে তার বন্ধুরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে বেলাল পালিয়ে যান।

পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় সেদিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে পাহাড়তলী বশিরশাহ মাজার এলাকা থেকে বেলালকে আটক করা হয়। এ সময় তার স্বীকারোক্তি শুনে আশপাশের লোকজন তাকে মারধর করে। পরে ৯৯৯-এ কল করে পাহাড়তলী থানা পুলিশের হাতে হস্তান্তর করা হয় তাকে। সেদিন রাতেই বেলালের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন ভিকটিম শিশুর বাবা। তবে মামলা রুজু হয় ২৭ সেপ্টেম্বর।

বিভাগীয় সমাজসেবা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে আদালতে ভিকটিম শিশুর সাহায্য করতে যাওয়া দোভাষী তাসলিমা আক্তার লাকি বলেন, ‘ভিকটিম শিশুটি সেদিনের ঘটনা বলতে ভয় পাচ্ছিল। কিন্তু আদালতের অভয়ে সে অনেক্ষণ সময় নিয়ে তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা বর্ণনা করেছে। তার কথাগুলো আদালতের কাছে বোধগম্য করে তুলতে আমি সাহায্য করেছি।’

আরএস/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!