চট্টগ্রামে ১৭ বছরে ২ হাজার ছানি রোগীর অপারেশন চন্দনাইশ সমিতির
চন্দনাইশের বেকার যুবকদের জন্য করা হবে ‘জব ফেয়ার’
চট্টগ্রামে ১৭ বছরে দুই হাজার চোখে ছানি রোগীর অপারেশন করিয়েছে চন্দনাইশ সমিতি। এছাড়া প্রায় ৩০ হাজার চোখের রোগীর চিকিৎসার পাশাপাশি বিনামূল্যে ওষুধও দেওয়া হয়েছে সমিতির পক্ষ থেকে। তবে এবার নতুন উদ্যোগ নিয়েছে তারা। চন্দনাইশের বেকার যুবকদের জন্য ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে আয়োজন করা হবে ’জব ফেয়ার’।
দুই হাজার চোখের রোগীর অপারেশন সম্পন্ন উপলক্ষে শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) সংবাদ সম্মেলন করেছে চন্দনাইশ সমিতি। চট্টগ্রাম নগরীর শেভরণ আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মাকসুদুর রহমান।
সমিতির সভাপতি আবু তাহের চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সমিতির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আবদুল কৈয়ূম চৌধুরী ও প্রধান উপদেষ্টা ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন।
এজন্য সমিতির সদস্যের অনুদান থেকে ব্যয় করা হয়েছে ১১ কোটি টাকা। বাইরের কোনো ধরনের পৃষ্টপোষকতা ছাড়া শুধু মাত্র সমিতির সদস্যদের মধ্য থেকে অনুদানে এমন মহৎ কাজ সম্পন্ন করে চলেছে চন্দনাইশ সমিতি। ভবিষ্যতে চন্দনাইশে স্বতন্ত্র জব ফেয়ার করার পরিকল্পনাও আছে উদ্যোক্তাদের।
লিখিত বক্তব্যে সাধারণ সম্পাদক মাকসুদুর রহমান বলেন, ‘২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে দীর্ঘ সময় অতিক্রম করেছে চন্দনাইশ সমিতি। চট্টগ্রাম শহরে বসবাসরত চন্দনাইশবাসীদের এক প্ল্যাটফর্মে আনতেই এই সমিতি গড়ে তোলা হয়। চন্দনাইশের গ্রামাঞ্চলে বসবাসরত হতদরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানোই আমাদের ব্রত। এর অংশ হিসাবে আমরা এ পর্যন্ত দুই হাজার ছানি রোগীর বিনামূল্যে অপারেশন সম্পন্ন করেছি। ৩০ হাজার চোখের রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধ বিতরণ করছি। স্বাস্থ্য ক্যাম্প পরিচালনা, ছেলের খতনা ও মেয়ের কর্ণ ছেদন, আট শতাধিক শিক্ষার্থীকে শিক্ষা জীবন শেষ না হওয়া পর্যন্ত ধারাবাহিক বৃত্তি প্রদান, জুনিয়র লেভেলে শিক্ষার্থীদের নগদ সহায়তা প্রদান, নিয়মিত মিলনমেলার আয়োজন, গুণিজনদের সম্মাননা প্রদান, গাছের চারা বিতরণ, ত্রাণ বিতরণ, চাকরি প্রাপ্তিতে সহযোগিতার মতো কাজ নিয়মিত করে যাচ্ছি।’
ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আবদুল কৈয়ূম চৌধুরী বলেন, ‘চন্দনাইশের আত্মসামাজিক উন্নয়নে চন্দনাইশ সমিতি সবসময় কাজ করে যাচ্ছে। রাজনৈতিক মতাদর্শের ঊর্ধ্বে আমরা অসহায় মানুষের জন্য কাজ করেছি। চন্দনাইশ সমিতির প্রতিটি সদস্য মানুষের সেবায় নিবেদিত প্রাণ। করোনা মহামারীর সময়েও আমরা চিকিৎসাসেবা, অ্যাম্বুলেন্সসেবা, অক্সিজেনসেবা দিয়ে চন্দনাইশবাসীর পাশে ছিলাম। মানবিক এসব কাজের পাশাপাশি ভবিষ্যতে চন্দনাইশে একটি মেডিকেল হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা এবং চন্দনাইশের বেকার যুবকদের চাকরির ব্যবস্থার জন্য জব ফেয়ার আয়োজনের ইচ্ছে আছে।’
সমিতির প্রধান উপদেষ্টা ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশে চোখের ছানি পড়া একটি কমন রোগে পরিণত হয়েছে। বয়স্কদের মধ্যে এ রোগ বেশি দেখা যায়। ছানির কারণে চোখে দেখতে পায় না, অপরের সহযোগিতা ছাড়া চলতে পারে না। একেকটি ছানি অপারেশনে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ পড়ে যায়। চন্দনাইশ সমিতির মাধ্যমে বিনামূল্যে আমরা দুই হাজার ছানি রোগীর অপারেশন সম্পন্ন করেছি। এটা আমাদের জন্য বড় অর্জন। আমরা এ কাজের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চাই।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক আজম খান, সদস্য আবু ফয়েজ, জামসেদ চৌধুরী, অধ্যাপক ইয়াকুব নবী, সমিতির সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মো. নজরুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক মো. ইদ্রিস, আ ন ম হাসান চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ মুন্না, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল্লাহ আল সাদ, দপ্তর সম্পাদক নেজাম উদ্দীন, সম্পাদক অ্যাডভোকেট শওকতুল ইসলাম, মহিলা সম্পাদক পূরবী দাশ, সদস্য সাইফুদ্দিন, আবদুল্লাহ আল ফারুক চৌধুরী, মালকুতুর রহমান মুনির, সহ অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরউদ্দীন রোমেল, ধর্ম সম্পাদক আবু তাহের, সদস্য শওকতুল ইসলাম, সাইফুদ্দিন।
ডিজে