চট্টগ্রামে হিন্দু ক্রেতাকে গরুর মাংস খাইয়ে জেলে গেলেন দোকানদার

সুপনের জন্মদিনের কেক কেটে বন্ধুরা মিলে খেতে গিয়েছিলেন একটি রেস্টুরেন্টে। অর্ডার দেওয়ার সময় বলেই দেওয়া হয়েছিল তারা হিন্দু, গরুর মাংস খান না। তাই সুপন ১২ বন্ধুর জন্য মুরগির মাংসের বিরানি অর্ডার করেছিলেন। খাওয়ার এক পর্যায়ে সুপনের বন্ধু সুমন বুঝতে পারেন, তাদের ইচ্ছেকৃতভাবে গরুর মাংস দেওয়া হয়েছে। পরে এ ঘটনায় মামলা হলে হোটেলের ম্যানেজারকে জেলে পাঠান আদালত। আরও দুই আসামি এখন পর্যন্ত পলাতক।

বুধবার (২৭ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে এমনই এক উদ্ভট ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া থানার নতুন চাক্তাই এলাকার ‘দুবাই রেস্তোরাঁ অ্যান্ড বিরানি হাউজে’।

ওইদিন রাতেই ভুক্তভোগী সুমন পাল (৪৫) বাদি হয়ে হোটেলের ম্যানেজার মো. মনজুর আহাম্মদ (৪৫), হোটেল বয় মো. করিম (৩৫) ও মো. বাবু (২৭) নাম উল্লেখ করে মামলা করেন বাকলিয়া থানায়। এর মধ্যে পুলিশ হোটেলের ম্যানেজার মো. মনজুর আহাম্মদকে আটক করে আদালতে পাঠায়। আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এ বিষয়ে সুপন পাল চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমার জন্মদিনের কেক কেটে দুবাই রেস্তোরাঁ অ্যান্ড বিরানি হাউজ নামের হোটেলে খেতে যায় আমরা ১২ জন। খাবার কি আছে জানতে চাইলে হোটেলের ম্যানেজার বলেন, গরুর তেহেরি ও চিকেন বিরিয়ানি আছে। তখন আমি বলেছিলাম আমরা হিন্দু, আমরা গরু খাব না, আমাদের মুরগির বিরিয়ানি দেন। এরপর বয় আমাদের প্রত্যককে মুরগির মাংস দিয়ে বিরিয়ানি দিলেও খাওয়ার কিছুক্ষণ পর আমার এক বন্ধু বিরিয়ানির মধ্যে একটি টুকরো গরুর মাংস দেখতে পায়।’

‘পরে সে হোটেল বয়ের কাছ থেকে কৌশলে জানতে চায়, এগুলো কবেকার মাংস? তখন বয় বলেন, বড়ভাই আজ সকালেই জবাই করা গরুর মাংস এগুলো, একদম ফ্রেশ। তখন আমরা বুঝতে পারি, গরুর তেহেরিতে মুরগির মাংস দিয়ে আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে।’

এমন কেন করা হয়েছে জানতে চাইলে ম্যানেজার মনজুর কোনো ধরনের বিনয়ীভাব না দেখিয়ে বলেন, ‘ভুলে দিয়েছি তো কি হয়েছে? খেলে খান না হয় চলে যান। এক পর্যায়ে সবার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার শুরু করেন।’

অবস্থা বেগতিক দেখে আমরা বাকলিয়া থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে তাৎক্ষণিক তিনজনকে আটক করে নিয়ে যায়।

আটক ম্যানেজার মো. মনজুর আহাম্মদ সাতকানিয়া উপজেলার দুরদুরী এলাকার মোরশেদ আহাম্মদের বাড়ির মৃত হাজী মোরশেদ আহাম্মদের ছেলে। পলাতক অন্য দুই আসামি মো. করিম ও মো. বাবু নোয়াখালী জেলার বাসিন্দা বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিএস/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!