চট্টগ্রামে স্বর্ণব্যবসায়ীকে হঠাৎ ধরে থানায় আনার পর হার্ট অ্যাটাক

৬ ঘন্টা পার হলেও ওয়ারেন্টের কপিই দেখাতে পারছে না পুলিশ

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়াই এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে ধরে থানায় নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। থানায় নিয়ে যাওয়ার পর ওই ব্যবসায়ী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওই স্বর্ণব্যবসায়ীর নাম অরুণ কুমার চৌধুরী (৫৯)।

যদিও পুলিশের দাবি, অরুণ কুমার চৌধুরীকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানামূলে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু অরুণ কুমারের পরিবার বলেছে, আটকের পর প্রায় ৬ ঘন্টা পার হলেও এখনও পর্যন্ত কোনো ওয়ারেন্টের কাগজ দেখাতে পারেনি পুলিশ।

জানা গেছে, বুধবার (১৯ অক্টোবর) বিকেল ৪টার দিকে অরুণ কুমার চৌধুরীর মালিকানাধীন অরুণ জুয়েলার্স থেকে তাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। হাটহাজারী থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আবু তাহের ও পুলিশের দুই সদস্য তাকে থানায় নিয়ে যান।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দি কোড অফ ক্রিমিনাল প্রসিডউরের ৮০ ধারা অনুযায়ী, কাউকে গ্রেপ্তারের সময় অভিযুক্ত ব্যক্তি তার বিরুদ্ধে পরোয়ানা দেখতে চাইতে পারেন। এটা ওই ব্যক্তির অধিকার।

তারা বলছেন, কারও বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট থাকলেও সেই পরোয়ানা দেখাতে হবে গ্রেপ্তারের সময়। না দেখালে সেটা আইনের বাত্যয় হবে।

অরুণ কুমার চৌধুরীর ছেলে চিকিৎসক সেতু চৌধুরী আকাশ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘দোকানে এসে এএসআই আবু তাহেরসহ তিনজন পুলিশ আমার বাবাকে বলছে তাদের সাথে থানায় যেতে হবে। তখন ওয়ারেন্টের কাগজ দেখতে চাইলে এএসআই আবু তাহের বললেন থানায় গিয়ে দেখাবেন। তারা বাবাকে থানায় নিয়ে গেলেন। পরে আমিও থানায় গেলাম। সেখানেও কোনো ওয়ারেন্ট দেখাতে পারেনি তারা। তিনি (এএসআই আবু তাহের) একটি কাগজে হাতের লেখা নম্বর দেখিয়ে বললেন, এই মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

সেতু চৌধুরী আকাশ বলেন, ‘বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটের সময় থানায় বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে হাটহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে রেফার করা হয়। এখনও পর্যন্ত আমার বাবার জ্ঞান ফেরেনি। বারবার ওয়ারেন্ট দেখতে চাইলেও এখনও দেখাতে পারেনি তারা।’

এদিকে হাটহাজারী থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আবু তাহের চট্টগ্রাম প্রতিদিনের কাছে দাবি করেছেন, ‘ওয়ারেন্টের ভিত্তিতে তাকে (অরুণ কুমার চৌধুরী) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেখাতে না পারার বিষয়ে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। বিষয়টি পুলিশ সুপার স্যারও জানেন।

অন্যদিকে বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম শফিউল্লাহ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে।’

অরুণ কুমার চৌধুরীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটাকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বলা যায় না। কিছু তথ্য জানতে তাকে আনা হয়েছে। এরপর অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেবো।’

আরএম/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!