চট্টগ্রামে সহজেই করোনার কবলে পড়ছে ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের রোগীরা
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের গবেষণা
চট্টগ্রামে তুলনামূলক বেশি সংখ্যায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের রোগীরা। চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকদের করা এক গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে।
গত ৬ মাস ধরে মোট ১ হাজার ৫৩০ জন ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করে এই গবেষণাটি সম্পন্ন করেন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা। হাসপাতালটির সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আব্দুর রবের নেতৃত্বে এই গবেষণাটি পরিচালিত হয়।
ডা. আব্দুর রব চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমাদের গবেষণায় পাওয়া তথ্য অনুযায়ী আক্রান্তদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২৩ শতাংশ হচ্ছেন উচ্চ রক্তচাপের রোগী। এর পর সবচেয়ে বেশি সংক্রমিত হচ্ছেন ডায়াবেটিস রোগীরা। আক্রান্তদের প্রায় ১৬ শতাংশের শরীরে আগে থেকেই ডায়াবেটিস ছিল। শ্বাসকষ্টের সমস্যা যাদের আগে থেকেই আছে, তাদের মধ্যে করোনায় সংক্রমিত হওয়ার হার ৯ শতাংশ।’
২০২০ সালের অক্টোবর থেকে ২০২১ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত ৬ মাস ধরে দৈবচয়নের ভিত্তিতে ১ হাজার ৫৩০ জনের এন্টিবডি পরীক্ষা করে এই গবেষণাটি সম্পন্ন করেন তারা।
চট্টগ্রামে আরটি পিসিআর টেস্টে করোনা নেগেটিভ হওয়া ২৬ শতাংশ রোগীর শরীরে করোনার এন্টিবডি তৈরি হয়েছে বলে উঠে এসেছে এই গবেষণায়। পজিটিভ হওয়া রোগীদের মধ্যে যার পরিমাণ ৮৮ শতাংশ।
যে ১ হাজার ৫৩০ জনের নমুনাকে ঘিরে এই গবেষণা তার মধ্যে ৯৪১ জন করোনা পজিটিভ শনাক্ত হওয়া ব্যক্তি ও ৫৮৯ জন করোনা নেগেটিভ হওয়া ব্যক্তি রয়েছেন।
মানুষের শরীরে করোনার এন্টিবডির উপস্থিতি ও এর স্থায়িত্ব অনুসন্ধানের লক্ষ্যেই গবেষণাটি করেন তারা। ডা. আব্দুর রব চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘যাদের শরীরে এন্টিবডি তৈরি হয়েছে এই এন্টিবডি তাদের শরীরে নয় মাস পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।’
শনিবার (৮ মে) জেনারেল হাসপাতালের কনফারেন্স রুমে শিক্ষা উপমন্ত্রী ও হাসপাতালটির ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের উপস্থিতিতে গবেষণার থেকে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত প্রস্তুত করা হয়।
ডা. আব্দুর রব বলেন, ‘এই গবেষণা এবং আজকের দিনটি বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের ইতিহাসে আলাদা একটা গুরুত্ব রাখে। মেডিক্যাল কলেজের বাইরে প্রথমবারের মত জেলা পর্যায়ের কোন হাসপাতাল চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি একটা গবেষণাও সম্পন্ন করতে পেরেছে। আমরা সবার সহযোগিতা চাই। এই ধরনের গবেষণা কার্যক্রম আমাদের চিকিৎসা দেওয়ার সক্ষমতা আরও বাড়িয়ে দিবে।’
এমন কার্যক্রমকে স্বাগত জানিয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেল বলেন, ‘যে হাসপাতালে আগে রোগীও আসতো না সেখানে এখন চিকিৎসা দেওয়ার পাশাপাশি রোগ নিয়েও গবেষণা হচ্ছে— এটি বিরাট একটা ব্যাপার। আপনারা এই কার্যক্রমকে এগিয়ে নেবেন। এতে যত ধরনের সহযোগিতা লাগে আমরা করার চেষ্টা করবো।’
সিপি