চট্টগ্রামে শ্বাসরোধ করে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যা, যুবকের মৃত্যুদণ্ড

চট্টগ্রামে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়ে রিদোয়ানুল হক ওরফে সোহেল রানা ওরফে হৃদয় (৩৭) নামে এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (১৭ মে) চট্টগ্রাম ৬ষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ সিরাজাম মুনীরা এর আদালত এই রায় ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়।

রিদোয়ানুল হক ওরফে সোহেল রানা ওরফে হৃদয় কক্সবাজার মহেশখালী কালারমছড়া উত্তর নলবিনা এলাকার মোক্তার আহমদের ছেলে। তিনি চাদগাঁও থানার পশ্চিম মোহরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে মো. হোসেনের ভাড়া ঘরের ৩ নম্বর রুমে থাকতেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পিপি দীর্ঘতম বড়ুয়া দীঘু। তিনি বলেন, ‘৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী শানু আক্তারকে শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়ে স্বামী হৃদয়কে মৃত্যুদণ্ডসহ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। আসামির উপস্থিতিতেই রায় ঘোষণা করা হয়।’

আদালত সূত্রে জানা গেছে, হৃদয় এবং শানু দু’জনই ছিলেন পোশাক শ্রমিক। একই গার্মেন্টে কাজও করতেন তারা। বিয়ের পরেও ভালোভাবে চলছিল তাদের সংসার। কিন্তু শানু অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর স্বামী হৃদয় বিভিন্ন নারীর সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে আসক্ত হয়। এই বিষয়ে শানু প্রতিবাদ করলে তাকে হত্যা করে হৃদয়।’

জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১৫ অক্টোবর রাত ৮টার দিকে শানুর বড় বোনের জামাইকে ফোন করে তার মৃত্যুর খবর জানান স্বামী হৃদয়। শানুর পরিবারের লোকজন তাদের ঘরে আসার আগেই তালা লাগিয়ে পালিয়ে যান হৃদয়। শানু তার বাবার বাড়িতে গিয়েছে জানিয়ে ঘর তালাবদ্ধ করার সময় পাশের বাসায় চাবি দিয়ে যান হৃদয়।

পরে শানুর পরিবারের লোকজন আসলে পাশের বাসার লোাজন ঘটনার বিষয় জানিয়ে তাদের চাবি দেয়। ঘরের দরজা খুলেই শানুকে টয়লেটের দরজার একটি রডের সঙ্গে অর্ধঝোলানো অবস্থায় দেখতে পান তারা। পুলিশ এসে লাশ উদ্ধারসহ করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করেন।

এই ঘটনার পরদিন ১৬ অক্টোবর শানুর ছোট ভাই মো. ইসকান্দর বাদি হয়ে নগরের চাদগাঁও থানায় মামলা দায়ের করেন। ২০১৭ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি মামলা তদন্ত শেষে চাদগাঁও থানার এসআই জাহাঙ্গীর আলম সিকদার আদালতে চার্জশিট জমা দেন।

একই বছরের ১৯ জুলাই মামলার একমাত্র আসামি হৃদয়ের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচারিক কার্যক্রম শুরুর নির্দেশ দেন আদালত। এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য আদালতে উপস্থাপন করেন।

আরএস/ডিজে