চট্টগ্রামে রেলের ট্রেনিং একাডেমির হোস্টেল রুম কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দখলে, ভোগান্তিতে প্রশিক্ষণার্থীরা

চট্টগ্রামের রেলওয়ে ট্রেনিং একাডেমির (আরটিএ) হোস্টেলের রুম দখল করে আছেন রেলে স্থায়ী ও অস্থায়ী ১০ কর্মকর্তা-কর্মচারী। অথচ এসব রুমে ভাড়ার বিনিময়ে থাকতে দেওয়া হয় একাডেমির প্রশিক্ষণার্থীদের। সরকারি বাসা বরাদ্দ পাওয়ার পরও বিনা ভাড়ায় এখানে থাকছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। হোস্টেল রুমের সংকট হওয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নিতে আসা প্রশিক্ষণার্থীদের।

এদিকে বেতনের ৫ শতাংশ থাকা-খাওয়া বাবদ কেটে রাখে বলে দাবি করলেও এ সংক্রান্ত কোনো ভাড়া পরিশোধের কোনো কাগজ দেখাতে পারেননি আরটিএর এক কর্মকর্তা।

জানা গেছে, একাডেমিতে ১ম শ্রেণীর বিসিএস রুম ২৪টি, ২য় শ্রেণীর ১২টি এবং ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর ক্যাটাগরিতে প্রশিক্ষণে আসা ব্যক্তিদের রুম রয়েছে ৪৮টি। এসব রুম দৈনিক ১১৫ টাকার ভিত্তিতে ভাড়া দেওয়া হয় জনপ্রতি। সারাদেশ থেকে রেলওয়ে এবং প্রকল্প কাজসহ বিভিন্ন কারণে প্রতি মাসে এখানে প্রশিক্ষণ নিতে আসেন প্রশিক্ষণার্থীরা। প্রশিক্ষণ চলাকালীন ও থাকা-খাওয়া বাবদ বিল পরিশোধ করে হোস্টেলের রুমে থাকেন তারা। কিন্তু বেশিরভাগ রুম কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দখল করে রাখায় গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে প্রশিক্ষণার্থীদের। একাডেমির বাবুর্চি, ড্রাইভার থেকে শুরু করে বিভিন্ন কর্মচারীর দখলে রয়েছে এখানকার রুম।

রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) রেল পূর্বাঞ্চলের আরটিএর প্রশিক্ষণার্থীদের হোস্টেলে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, ১০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ভবনের বিভিন্ন ফ্লোরে রুম দখল করে আছেন। প্রথম ফ্লোরে আছেন বাবুর্চি জাকির, পিয়ন আলাউদ্দিন, অস্থায়ী হোস্টেলবয় জয়, পিয়ন ইব্রাহিম, অস্থায়ী ড্রাইভার কাওসার ও কৃষ্ণ। দ্বিতীয় ফ্লোরে আছেন একাডেমির সিনিয়র ট্রেনিং অফিসার আতাউর রহমান আতা। আরও আছেন আরটিএর হোস্টেল সুপার মো. আজগর, মোস্তাফিজুর রহমান এবং পিয়ন মাহিনউদ্দিন।

এ বিষয়ে হোস্টেলসুপার আজগর বলেন, ‘এখানে বাবুর্চিরা থাকেন।’ তাহলে অন্যরা কিভাবে হোস্টেলে রয়েছেন এবং তাদের থাকা বাবদ ভাড়া কর্তন করা হচ্ছে কি-না, জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

সিনিয়র ট্রেনিং অফিসার আতাউর রহমান আতা বলেন, ‘বেতন থেকে ভাড়া বাবদ ৫ শতাংশ কাটা হচ্ছে আমার।’ তবে ভাড়া পরিশোধের কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি তিনি।

রেলওয়ে ট্রেনিং একাডেমির রেক্টর রুহুল কাদের আজাদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয় তিনি পবিত্র ওমরাহে যাওয়ার আগে। এ বিষয়ে তিনি ওমরাহ থেকে এসে পদক্ষেপ নেবেন বলে জানান।

এদিকে আরটিএ অস্থায়ী ড্রাইভার কাওসারের বিরুদ্ধে এক কর্মকর্তাকে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় এবং একাডেমিতে অনৈতিক কাজ করার অভিযোগ ওঠেছে।

জানা গেছে, আরটিএ সাবেক কর্মকর্তার দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তার ব্যক্তিগত ভিডিও ধারন করে ব্ল্যাকমেইলিং শুরু করেন ড্রাইভার কাওসার। এরপর সেই ভিডিও তিনি বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দেন।

ভিডিও দেখিয়ে ড্রাইভার কাওসার টাকা হাতিয়ে নেন বলেও অভিযোগ করেন আরটিএর সাবেক ওই কর্মকর্তা।

তবে ড্রাইভার কাওসারের কাছে রেল কর্মকর্তাকে ব্লাকমেইল করে ভিডিও ছড়ানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন।

অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিষয় অস্বীকার করেন সিনিয়র ট্রেনিং অফিসার আতাউর রহমান আতা বলেন, ‘ট্রেনিংয়ে এসে দুজন ছেলে-মেয়ে প্রেম করে এখান থেকে পালিয়ে যায়।’

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!