চট্টগ্রামে রেলওয়ে কর্মচারীকে পেটালেন ‘নেতা লোকমান’!

রেলওয়ের প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকের (সিওএস) সঙ্গে নিজেদের ইচ্ছেমতো সময়ে সাক্ষাৎ করতে না পেরে অফিসের এক কর্মচারীকে পেটালেন শ্রমিক লীগের নেতারা। এ ঘটনায় রেলওয়ে শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, রেলওয়ে শ্রমিক লীগের সভাপতি শেখ লোকমান হোসেনের নেতৃত্বে শ্রমিক লীগের ৫ জনের একটি দল দুপুরে রেলওয়ের প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকের (সিওএস) কার্যালয়ে যায়। অপর চারজনের মধ্যে ছিল রেলওয়ে টিএ ব্যাঞ্চের বাঁধন সরকার, রিপন খান ও কাইয়ুম। তারা সিওএস বেলাল হোসেন সরকারের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা জানান অফিসে খালাসী পদে কর্মরত মো. মোরশেদ আলমকে।

শ্রমিক নেতাদের সাক্ষাৎ করতে আসার বিষয়টি সিওএসকে জানালেও তিনি মুঠোফোনে ব্যস্ত থাকায় তাদের অপেক্ষা করতে বলেন। অপেক্ষার ১০ মিনিট পর রেলওয়ে শ্রমিক লীগের সভাপতি শেখ লোকমান হোসেন সাক্ষাতের বিষয়টি আবারও জানানোর তাগিদ দেন। কিন্তু ততক্ষণে সিওএসের মুঠোফোনে কথা শেষ না হওয়ায় একটু অপেক্ষা করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে লোকমান সিওএস অফিসের কর্মচারী মোরশেদকে গায়ে ধাক্কা দিয়ে মারধর করে।

রেলওয়ের প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকের (সিওএস) অফিসে খালাসী পদে কর্মরত মো. মোরশেদ আলম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, দুপুরের নেতা লোকমানের সঙ্গে বাঁধনসহ ৫ জন অফিসে সিওএস স্যারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসেন। এ সময় তাদের হাতে নিউ স্টোর ডিপুর ইকবাল হোসেনের ‘বদলি’ বিষয়ক ফাইল ছিল। বিষয়টি আমি স্যারকে জানায়। কিন্তু স্যার ফোনে কথা বলায় তাদের অপেক্ষা করতে বলি। তারা আবারও আমাকে বিষয়টি স্যারকে জানাতে বললে, স্যার তাদের অপেক্ষা করতে বলার কথা জানায়। এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে ‘নেতা লোকমান’ আমাকে হঠাৎ বলে উঠে ‘হে ব্যাডা আমি কে চিনস’। এ সময় আমি বলি— ভাই চিনি। এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গেই নেতা শেখ লোকমান হোসেন ও বাঁধন সরকার আমাকে ধাক্কা দিয়ে কয়েকটা চড়থাপ্পড় মারেন। বিষয়টি দেখে তাদের সঙ্গে আসা রিপন খান ও কাইয়ুম এদের সরিয়ে নেয়।

তবে রেলওয়ে শ্রমিক লীগের সভাপতি শেখ লোকমান হোসেন মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমরা সিওএস’র সঙ্গে দেখা করতে গেলে অফিসের পিয়ন মোরশেদ বলে স্যার ফোনে ব্যস্ত। এর ১০ মিনিট পর আবার তাকে বিষয়টি সিওএস সাহেবকে জানাতে বললে এতে পিয়ন অসহযোগিতা মনোভাব এবং আমাদেরকে সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ দেখায়। এর কয়েক মিনিট পর সিওএস’র সাক্ষাৎ না পেয়ে আমরা ফিরে আসি। এ বয়সে এসে মারধরের বিষয়টি কারা এবং কেন রটাচ্ছে তা বোধগম্য নয় বলে জানান তিনি। এছাড়াও বদলি সংক্রান্ত বিষয়ে ফাইল নিয়ে যাওয়ার কথাটি মিথ্যা বলেও দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে রেলওয়ের প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক (সিওএস) বেলাল হোসেন সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কোনো সাড়া মেলেনি।

আদর/এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!