চট্টগ্রামে মহিলা নেত্রীর বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ নেতার মামলা, ফেসবুকে কটূক্তির অভিযোগ

ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগ এনে চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের এক নেত্রীর বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছেন নগর ছাত্রলীগের এক নেতা।

মামলায় অভিযুক্ত নেত্রী চট্টগ্রাম নগরীর পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ড মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হোসনে আরা পারুল। অন্যদিকে মামলার বাদি চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক সুলতান মাহমুদ ফয়সাল। তারা দুজনই শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

বুধবার (২৪ আগস্ট) চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জহিরুল কবিরের আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়। আদালত বাদীর অভিযোগ আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ২৮ এপ্রিল হোসনে আরা পারুল ফেসবুকে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর ছবিসহ একটি আপত্তিকর ও মানহানিকর পোস্ট দেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘মাননীয় শিক্ষা উপমন্ত্রী, এই ছবি বিক্রয় করা ছেলেটির বিরুদ্ধে আপনি আইনগত ব্যবস্থা নেন, অন্যথায় আমি আপনার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করব। আমি আপনাকে ইতিমধ্যে তার প্রতারণার বিষয়টি জানিয়েছি। আপনি তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি। আমি প্রতিনিয়ত দেখতে পাচ্ছি, আমার নেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নামের ওপর সে কালিমা লাগিয়ে নিজেকে বিশাল এক নেতা দাবি করছে। যা আমার জন্য অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক। মহিউদ্দিন চৌধুরী মানুষের অধিকার আদায়ে আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। দয়া করে উনার সন্তান হিসেবে আপনিও তাই করে যাবেন।’

পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ড মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হোসনে আরা পারুলের বিরুদ্ধে হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে ছাত্রলীগ নেতা ফয়সালকে একাধিকবার হুমকি দেওয়ার অভিযোগও করা হয়েছে।

হোসনে আরা পারুল দাবি করছেন, ফয়সালের কাছ থেকে তিনি চার লাখ টাকা পাবেন। অন্যদিকে ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল বলছেন, তার কাছে হোসনে আরা পারুল কোনো টাকা পাবেন না।

কী কারণে একই দলের নারীনেত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করলেন— এমন প্রশ্নের উত্তরে বাদী ফয়সাল চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘তিনি কেন যে আমার বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দেন সে বিষয়ে আমি নিজেই কনফিউজড। পারুল আপার সাথে আমার কোন লেনদেন নেই। তারপরও তিনি কখনও কারো কাছে বলছেন আমাকে স্বর্ণ দিয়েছেন, আবার কাউকে বলছেন টাকা দিয়েছেন। টাকার অংক নিয়েও তিনি বারবার বিভ্রান্তিকর তথ্য দিচ্ছেন, তিনি কখনও বলেন ২ লাখ, কখনও ৩-৪ লাখ। তিনি যে মিথ্যা বলছেন সেটা এখানেই প্রমাণিত হয়।’

ফয়সাল দাবি করেন, ‘তবে শীঘ্রই গঠন হতে যাওয়া নগর ছাত্রলীগের কমিটিতে যাতে আমার নাম বাদ যায়, সেজন্য আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা উদ্দেশ্যমূলকভাবে পারুল আপাকে দিয়ে এসব করাচ্ছে।’

তবে ফয়সালের কথায় দ্বিমত জানিয়ে হোসনে আরা পারুল বলেন, ‘ফয়সাল আমার নামে মিথ্যা মামলা করেছে। সে আমার টাকা আত্মসাৎ করে উল্টো মামলা দিয়েছে। সে বলেছে মন্ত্রীকে দিয়ে কাজ করাবে, কিন্তু করায়নি।’

ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার কারণ হিসেবে পারুল বলেন, ‘ফয়সাল আমার সব নাম্বার ব্লক করে দেয়। তাই আমি ফয়সালের সাথে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। তাই বাধ্য হয়েই তার বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দিতে হয়েছে।’

ফয়সালের বিষয়টি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলকে একাধিকবার হোয়াটসএ্যাপে জানিয়েছেন উল্লেখ করে পারুল বলেন, ‘আমি উপমন্ত্রীকে জানিয়েছি, তিনি বিষয়টি দেখবেন।’

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!