চট্টগ্রামে মঞ্চে এসেছে নতুন যাত্রাপালা ‘বাংলার মহানায়ক’

চট্টগ্রামের মঞ্চে এসেছে নতুন যাত্রাপালা ‘বাংলার মহানায়ক’। বঙ্গুবন্ধুর সংগ্রামী জীবনভিক্তিক এই যাত্রাপালাটি মঞ্চে এনেছে গ্রুপ থিয়েটার ‘নাট্যাধার।’ ইতিমধ্যেই যাত্রাপালাটির চারটি মঞ্চায়ন সম্পন্ন হয়েছে।

ফেনী জেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে গত ৩১ আগস্ট (শনিবার) সন্ধ্যা সাতটায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ‘বাংলার মহানায়ক’র চতুর্থ প্রদর্শনী। এটি নাট্যাধারের ১৩তম প্রয়োজনা। মিলন কান্তি দে রচিত ও জামাল হোসাইন মঞ্জু সম্পাদিত যাত্রাপালাটির নির্দেশনা দিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় নাট্যকলা বিভাগের অতিথি শিক্ষক মোস্তফা কামাল যাত্রা।

১৯৬৯-এ রেসকোর্স ময়দানে তোফায়েল আহমেদ কর্তৃক শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করার মধ্য দিয়ে যাত্রাপালা ‘বাংলার মহানায়ক’র এর সূচনা হয়। পর্যায়ক্রমে ইয়াহিয়া, ভুট্টো সাথে মধ্যস্থতা সভা, টিক্কা খাঁন কর্তৃক ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ কালোরাত্রির অবতারণা, ৯ মার্চ রক্তক্ষয়ী মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশ। পাকিস্তানের কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধুর মুক্তি ও স্বদেশ প্রত্যাবর্তন অস্থিতিশীল নবতরে রাষ্ট্র পুনর্গঠনে বঙ্গবন্ধুর প্রাণান্তকর চেষ্টার পাশাপাশি প্রতিবিপ্লীদের হীন ষড়যন্ত্রের প্রেক্ষাপট ও ১৯৭৫- এ ১৫ আগস্ট হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার ঘটনাক্রম।

‘বাংলার মহানায়ক’ যাত্রাপালাটি নিয়ে এর নির্দেশক মোস্তফা কামাল যাত্রার অভিমত হলো- বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে লাল-সবুজের পতাকার অভ্যূদয়কে থামিয়ে নব্য পাকিস্তান আনার অভিসার। খুনি চক্রের চক্রান্তের স্বীকার আমাদের নতুন প্রজন্ম যে বিকৃত মানসিকতায় বেড়ে উঠেছিল; তাদের কাছে প্রকৃত সত্য এবং বঙ্গববন্ধুর কৃর্তিকে তুলে ধরতে নাট্যাধার এই প্রয়াস নির্মাণের দায়িত্ব পেয়ে আমি ব্যক্তিগতভাবে খুবই আনন্দিত। সেই আনন্দের মাত্রাকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন ফেনী জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সুজন চৌধুরীর অনুরোধ। জেলা শিল্পকলা একাডেমি কেন্দ্রীয় কর্মসূচি হিসাবে ‘বাংলার মহানায়ক’ যাত্রাপালা ফেনীতে মঞ্চায়নের দায়িত্ব গ্রহণ করতে গিয়ে প্রাপ্ত দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার স্বপক্ষে জেলা শিল্পকলা একাডেমি ফেনীর কালচারাল অফিসার জান্নাত আরা যুথির সর্বাত্মক সহযোগিতা অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। তিনি যাত্রাপালাটির নির্মাণ ও প্রদর্শনী সফল করতে একনিষ্টভাবে ভূমিকা রেখে কৃতার্থ করেছেন।

ডা. দীপংকর দের সংগীত পরিচালনায় নির্মিত ‘বাংলার মহানায়ক’ এর রূপসজ্জ্বাকারী শাহীনুর সরোয়ার, পোশাক পরিকল্পনা মোস্তফা কামাল যাত্রা, আবহ ধ্বনি শারমিন সুলতানা রাশা, দ্রব্য সম্ভার পরিকল্পক হারুন অর রশীদ, আলোক পরিকল্পক অনিক ইউসুফ এবং প্রযোজনা অধিকর্তা মাসউদ আহমেদ।

এতে বঙ্গুবন্ধু চরিত্রে অভিনয় করেছেন প্রবীণ নাট্যজন মো. বাহাউদ্দিন মিরান। অন্যান্য চরিত্রে রূপদান করেছেন জামাল হোসাইন মঞ্জু, মো. আশিকুর রহমান, হারুন বাবু, আসিফ উদ্দিন শুভ, দিদার মোর্শেদ, মো. শাহরিয়ার হক জিসাদ, ফালগুনী দাশ, এএফএম গোলাম রাব্বানী, নজরুল ইসলাম তুহিন, জসীম উদ্দিন আহমেদ, মোহাম্মদ কাউসার মজুমদার, শাহজালাল উদ্দিন রনি, শেখ মানিক মঞ্জুর, মো. আবুল হাসেম খান, শাহীনুর সরোয়ার, মোস্তফা কামাল যাত্রা, দেবাশিষ্ রুদ্র, তৌহিদ হাসান ইকবাল, হালিমা খাতুন আঁখি, আইরিন মেহজাবিন ও মাসউদ আহমেদ।

এর আগে গত ২ মে বিকাল চারটায় যাত্রাপালাটির উদ্বোধনী মঞ্চায়ন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বুদ্ধিজীবী চত্বরে অনুষ্ঠিত হয়। ২৮ জুলাই থিয়েটার ইনস্টিটিউট চট্টগ্রামের মূলমিলনায়তনে দ্বিতীয় এবং ২৮ আগস্ট চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির মূলমিলনায়তনে এর তৃতীয় মঞ্চায়ন অনুষ্ঠিত হয়।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!