চট্টগ্রামে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত মাকে বাঁচাতে হন্যে হয়ে ইনজেকশন খুঁজছে ছেলে

বাবার পর আর মাকে হারাতে চায় না পরিবার

মাত্র ৫ দিন আগে বাবা মারা গেছেন করোনায়। এদিকে ৪ দিন ধরে বিরল ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন মা। সন্ধ্যায় নিশ্চিত হওয়া গেছে মা নিশ্চিতভাবেই ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত। তবে রোগ নিশ্চিত হওয়া গেলেও রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হওয়া একটা ইনজেকশন চারদিন ধরে চট্টগ্রামসহ সারা দেশ তন্ন তন্ন করে খুঁজেও পাচ্ছেন না তার পরিবার। ওষুধটির নাম ‘অ্যামফোটেরিসিন-বি’।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই রোগীর ছেলে বেলাল হোসাইন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘চমেক হাসপাতালের ডাক্তাররা অ্যামফোটেরিসিন-বি ইনজেকশনটি মায়ের জন্য দিয়েছেন। আমরা ৪ দিন ধরে ঢাকা চট্টগ্রাম ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় খুঁজেছি, কিন্তু ওষুধটা পাচ্ছি না।’

প্রসঙ্গত অ্যামফোটেরিসিন বি একটি এন্টিফাঙ্গাল ওষুধ যা মারাত্মক ছত্রাকের সংক্রমণ এবং লেশম্যানিয়াসিসের জন্য ব্যবহৃত হয়। অ্যামফোটেরিসিন-বি প্রাণঘাতী প্রোটোজোয়ান সংক্রমণের জন্য যেমন ভিসারাল লেশম্যানিয়াসিস [১১] এবং প্রাথমিক অ্যামোবিক মেনিনজোনেন্সফালাইটিস হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এটি যেসব ছত্রাক সংক্রমণ চিকিত্সার জন্য ব্যবহৃত হয় সেগুলোর মধ্যে রয়েছে— শ্লেষ্মাবিধি, অ্যাস্পেরিলিসোসিস, ব্লাস্টোমাইকোসিস, ক্যান্ডিডিয়াসিস, কোক্সিডাইওডোমাইকোসিস এবং ক্রিপ্টোকোকোসিস অন্তর্ভুক্ত। বাণিজ্যিকভাবে এই ওষুধটি Fungilin, Fungizone, Abelcet, AmBisome, Fungisome, Amphocil, Amphotec, Halizon নামে পরিচিত।

চট্টগ্রামে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত মাকে বাঁচাতে হন্যে হয়ে ইনজেকশন খুঁজছে ছেলে 1

এদিকে হাসপাতাল থেকে ওষুধটি সংগ্রহের বিষয়ে সহযোগিতার কোনো আশ্বাস পেয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ওই রোগীর ছেলে বলেন, ‘প্রথমে তারা বলেছিলেন সরকারিভাবে এই ওষুধ যদি থাকে, উনারা সংগ্রহ করবেন। এখন বোধহয় সেখানেও পাওয়া যাচ্ছে না।’

ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত ওই রোগীর ছেলে বেলাল হোসাইন বলেন, ‘পাঁচদিন আগে আমি আব্বাকে হারিয়েছি। এখন আমার মা জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তার জন্য অ্যামফোটেরিসিন-বি ইনজেকশনটি খুঁজছি। কিন্তু তা পাওয়া যাচ্ছে না। প্লিজ আপনারা এই ওষুধের সন্ধান দিন। যত টাকা লাগে আমরা দেবো। আমার মাকে বাঁচাতে চাই।’

গত ২৩ জুলাই রাত ৯.৪৫ মিনিটে সিএইচসিআর হাসপাতালে মারা যান বেলাল হোসাইনের বাবা। অন্যদিকে বুধবার (২৮ জুলাই) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা নিশ্চিত করেছেন, তার মা বিরল ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত। ৬০ বছর বয়সী ওই নারী করোনা আক্রান্ত হয়ে ১৫ জুলাই করোনামুক্ত হওয়ার পর নতুন করে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হলেন। চট্টগ্রামে এই প্রথম এ ধরনের রোগীর খোঁজ মিলল।

চট্টগ্রাম প্রতিদিনের পাঠকদের কেউ যদি ওষুধটি সংগ্রহে কোনোভাবে সহযোগিতা করতে পারেন, তাহলে চট্টগ্রাম প্রতিদিনের নিউজরুম নম্বরে যোগাযোগ করলে আমরা সেই তথ্য রোগীর ছেলের কাছে পৌঁছে দেবো। যোগাযোগের জন্য মোবাইল নম্বর— ০১৬৮৭৮৭৪৩৮৮। তবে ওষুধের তথ্য ছাড়া রোগীর ব্যাপারে কোনো তথ্য এই নম্বরে পাওয়া যাবে না।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!