চট্টগ্রামে বাড়ছে করোনা, নমুনা পরীক্ষায় মানুষ ঝুঁকছে বেসরকারি হাসপাতালে

সরকারি হাসপাতালে ভোগান্তির অভিযোগ

চট্টগ্রামে বাড়ছে করোনা সংক্রমণের হার। করোনা পরীক্ষা করাতে চট্টগ্রামের মানুষ ঝুঁকছে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে। সরকারি হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষা সহজলভ্য হলেও বেশি দামে মানুষ নমুনা পরীক্ষা করাচ্ছে বেসরকারি হাসপাতালে।

কারণ হিসেবে জানা গেছে, সরকারি হাসপাতালের করোনা পরীক্ষায় নমুনা সংগ্রহে যত্নশীল না হওয়া এবং রিপোর্ট পেতে দেরী হওয়ায় মানুষ ঝুঁকছে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে।

বেসরকারি হাসপাতালে পরীক্ষার ফি সরকারি হাসপাতালের সাত গুণ বেশি। এরপরও সবাই বেসরকারি ক্লিনিকে নমুনা পরীক্ষায় বেশি ঝুঁকছেন। সরকারি হাসপাতালে করোনা নমুনা পরীক্ষা ও এন্টিজেন টেস্ট ফি ১০০ টাকা করে। বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে যা ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা।

বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষা করার কারণ হিসেবে রোগীরা জানান, নমুনা পরীক্ষা করতে গিয়ে সরকারি হাসপাতালে ভোগান্তি বেশি পোহাতে হয়। সে তুলনায় বেসরকারি হাসপাতালে ভোগান্তি কম।

বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পাঠানো প্রতিবেদন অনুসারে গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৫১১ জনের। এরমধ্যে করোনা আক্রান্ত ৭০ জন, যাদের ৫০ জন নগরের ও ২০ জন উপজেলার বাসিন্দা। করোনা সংক্রমণের হার ১৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ।

নমুনা পরীক্ষার পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, চট্টগ্রামের বিআইটিআইডিতে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৩৩ জনের। এরমধ্যে পজিটিভ এসেছে ২৮ জনের। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ৪১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ জন, শেভরণে ৫২ নমুনায় ৮ জন, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে ১৮ নমুনায় ৬ জন, আরটিআরএলের ৬ নমুনায় ২ জন, ইপিক হেলথ কেয়ারে ৬৪ নমুনায় ৭ জন, মেট্রোপলিটন হাসপাতালে ১৪ নমুনায় ১ জন, এশিয়ান স্পেশালাইজড হাসপাতালে ৯৩ নমুনায় ৬ জন, এভারকেয়ার হসপিটালে ১০ নমুনা পরীক্ষায় ২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

এন্টিজেন টেস্ট হয়েছে ৮০ জনের। এরমধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৯ জনের।

এছাড়া চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইসেন্স বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, কক্সবাজার, ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল, মেডিকেল সেন্টার, ল্যাবএইড এবং শাহ আমানত বিমানবন্দরে কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।

গত ২৯ জুন ৫২১ নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৫৮ জনের। যাদের ৪৬ জন নগর ও ১২ জন উপজেলার বাসিন্দা। শনাক্তের হার ১১ দশমিক ১৩ শতাংশ।

এদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষা করেছে ৪৯ জন, যাদের ১৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আর বেসরকারি হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষা করেছে ৪২৩ জন, যাদের মধ্যে ৩৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

এছাড়া এন্টিজেন টেস্ট হয়েছে ৪৯ জনের। এদের মধ্যে ৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

গত ২৮ জুন করোনার নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৪৮৬ জনের। করোনা শনাক্ত হয়েছে ৬৬ জনের। আক্রান্তদের মধ্যে ৬১ জন নগর ও ৫ জন উপজেলার বাসিন্দা। শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ।

এরমধ্যে সরকারি হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৬৩ জনের। করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩৩ জনের। আর বেসরকারি হাসাপতাল ও ক্লিনিকে নমুনা পরীক্ষা করিয়েছে ২৯৮ জন। এদের মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩১ জনের।

এন্টিজেন টেস্ট করিয়েছে ২৫ জন, করোনা শনাক্ত হয়েছে ২ জনের।

বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত রায়হান আজিজ বলেন, ‘গত দুই-তিনদিন ধরে জ্বর, সর্দি ও কাশি হয়েছিল। করোনা পরীক্ষা করিয়েছি ইপিক থেকে। কত পরিচ্ছন্ন ও সাবলীলভাবে নমুনা দিয়েছি সেখানে। আমি দ্বিতীয়বার করোনা আক্রান্ত হলাম। প্রথমবার যখন করোনা হয়েছিল তখন নমুনা দিয়েছিলাম চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে। ঘণ্টাখানেক অপেক্ষা করে নমুনা দিয়ে রেজাল্ট পেয়েছিলাম পাঁচদিন পর। ততদিনে করোনা আমার ভালোর পথে।’

আইএমই/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!